পাতা:প্রবাসী (পঞ্চদশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).pdf/৩৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬৯8 পবনিৰ্ম্মিত বসবদি, তদুপরি কামদেব অবস্থান করেন। সেই স্বর্গে “করবে ক" নামে একপ্রকার পক্ষী আছে। এইপ্রকার কিম্বদন্তী যে উক্ত বিহঙ্গের মিষ্টস্বরে অরণ্যানীর সমগ্র প্রাণী মুগ্ধ হইয়া থাকে। শ্যামবাসীগণ গরুড়কে *গুরুদাস’ বলিয়া অভিহিত করিয়াছে। সে নাগগণের শত্রু । ব্ৰহ্মা, মহাদেব, বিষ্ণু, ইন্দ্ৰ, যম, গরুড়, নাগ, বায়ু, বরুণ, বীণাপাণি প্রভৃতি বহুদেবদেবীর মূৰ্ত্তি শ্যামবাসীগণ অর্চনা করে। * তাহার। দেবদেবী সম্বন্ধে নিম্নলিখিত মত প্রকাশ করে । দেবদেবী মহংযোনিস্তৃত। র্তাহারা জর-মরণ-বর্জিত। র্তাহাদের গলদেশের পুষ্পমাল্য কদাপি নিম্প্রভ হয় না। তাহাদের গাত্র হইতে কদাপি ঘৰ্ম্ম নির্গত হয় না। র্তাহাদের শীত গ্রীষ্ম নাই। দেবগণের শরীরের অসম্পূর্ণতা পরিলক্ষিত হয় না। পুরুষ বা অঙ্গনা সকলেরই অক্ষুণ্ণ চিরযৌবন। র্তাহার স্বেচ্ছানুসারে অপর প্রাণীর হৃদয়ে প্রবেশলাভ করিতে সক্ষম । শ্যামবাসীর মতে বহু নিম্নশ্রেণীর দেবতা আছে । নিম্নশ্রেণীর দেবগণের পরিবর্তন লক্ষিত হয়। জ্যোতিৰ্ব্বেত্তার ন্যায় তাহারা ভূকম্পন, চন্দ্র স্থৰ্য্যাদির গ্রহণ এবং কু-নক্ষত্রাদির অভু্যখান ও উদয়ের সময় নির্দেশ করিতে পারেন। শ্যামবাণীগণ নাগগণের উল্লেখ করিয়া থাকে। নাগগণ কোনও কোনও অংশে দেবগণের সমতুল্য প্রভাবসম্পন্ন। শঙ্খ, চক্র,গদা, পদ্ম, ভগবানের চিহ্নস্বরূপ বলিয়া ঐ দেশে উক্ত দেবচিহ্ন সৰ্ব্বশ্রেষ্ঠ স্থান লাভ করিয়াছে। প্রাচীনকালে শ্যামবাসীগণ বৃক্ষ পূজা করিত। গীতায় অশ্বখবৃক্ষ পূজাৰ্ছ বলিয়া উল্লিখিত আছে। বৌদ্ধগণ আগমন করিবার বহুপূৰ্ব্বে এখানে বৃক্ষপূজা হইত। তথায় ভগবান বুদ্ধ দেবের হস্তে বিষ্ণুর স্বদর্শনচক্র দৃষ্ট হয়। ইন্দ্রের বজ্র ও কখন কথন পরিলক্ষিত হইয়া থাকে । খামবাসীর মধ্যে বহু শৈব দৃষ্ট হইত। শিব ত্ৰিশূল ধারণ করেন। শামভাষায় তাহাকে “ত্রি" বলে। উক্ত ত্ৰিশূলে বুদ্ধদেবের কোন চিহ্নই পরিলক্ষিত হয় না। • Livre II, 3o8, 3o9, 31o, 311, 387, 412 Liv. V. and H. Albaster's Wheel of the I.aw. Vidc tlie Chap. on Religion. বুদ্ধদেব শান্তির অবতার । যুদ্ধবিগ্ৰহাদি র্তাহার মধ্যে কোন-প্রকারেই স্থান প্রাপ্ত হইতে পারে না। সুতরাং উহান শিবের ত্রিশূল ভিন্ন অন্য কিছু বলিয়া উপলব্ধি করা যায় না। উৎ হিন্দুগণেরই উপাস্ত দেবতার নিদর্শন। খামদেশের ললনাগণ গুরুজনের সম্মুখীন হইয়া বাক্যোচ্চারণ করে না। তাহারা নদী তড়াগাদি হইতে কলসী করিয়া জল আনয়ন করে। আমাদের দেশের ন্যায় শ্যামদেশের স্ত্রীলোকেরা বেণী বন্ধন করিয়া পশ্চাৎ দিকে খোপা বাধিয়া থাকে । “জীবহিংসা করিও না। অপহরণ করিও না। ব্যভিচার করিও না। মিথ্যাকথা বলিও না। মদ্যপান করিও না।" এই নিয়মগুলি ভঙ্গ করিলে সকলেই তাহার দুর্ণাম রটনা করে। উক্ত নিয়মাবলী পালন করিলে বিশ্বব্যাপী থ্যাতি চতুদিকে রাষ্ট্র হইয়া পড়ে। খামদেশের পুরোহিতগণ এই-সকল নিয়ম প্রতিপালন করেন। শ্বামে পৌত্তলিকতা অত্যধিক পরিমাণে দৃষ্ট হয়। তাহার একবার সন্ন্যাসাশ্রম অবলম্বন করিলে আর গৃহস্থাশ্রমে প্রত্যাবর্তন করিতে পারে না। তাহাদের বাসোপযোগী বহু গুম্ফ বা গুহা পরিদৃষ্ট হয়। সন্ন্যাসীগণ যাবজ্জীবন অবিবাহিত থাকিতে বাধ্য। তাহার। ভিক্ষাবৃত্তি দ্বারা জীবিকার্জন করে। পুরোহিতগণ মম্বোচ্চারণ করিয়া স্বয়ংকালে যে সন্ধ্যাবন্দনাদি করিতে থাকেন তাহ প্রায় অৰ্দ্ধক্রোশ দূর হইতে শ্রুতিগোচর হয়। অতঃপর ঢক-নিনাদ দ্বারা সন্ধ্যার্চনাদি সম্পূর্ণ হইবার বাৰ্ত্ত দেশবাসীকে বিজ্ঞাপিত করা হয়। খামবাসীগণ তদেশে বিভিন্ন-পৰ্ম্মাবলম্বীকে দর্শন করিলে ঈর্ষাপরায়ণ হয় না। তাহারা বলে ধৰ্ম্ম একপ্রকার নহে। যাহার যে প্রকার ইচ্ছ, সে তাহাই সম্পন্ন করুক। রাজাই সে দেশের ধৰ্ম্মের নেতা । তাহারা কিন্তু শিক্ষা-ব্যাপারে অত্যন্ত পশ্চাৎপদ । শিক্ষিত যাজকগণ অধুনা সংস্কৃত ভাষা কিঞ্চিৎ পরিজ্ঞাত আছেন। পরন্তু তথায় পালিভাষারই প্রচলন অধিক । ভারতীয় জ্যোতিষ ব্রহ্মবাসীর মারফতে খামদেশবাণী গ্রহণ করিয়াছে। উছার কিয়দংশ ইউরোপ মহাদেশেও %ि|१||¢छ् । - মস্তকের [ ১৫শ ভাগ, ১ম খণ্ড T ૭કે મર્શઃ) ] | তথায় রামচন্দ্রের সম্বন্ধে চারিণত সর্গ বা খণ্ডের এক পুস্তক বিদ্যমান আছে। রামচরিত সম্বন্ধে নাটক আছে। তাহা এত সুদীর্ঘ যে সম্পূর্ণ নাটক অভিনয় করিতে হইলে ছয় সপ্তাহ লাগে । ভারতের হিন্দুগণের ন্যায় খামদেশের অধিবাসীগণ মস্তকে "শিখ।” রাখিয় থাকে । উক্ত শিখ। দৈর্ঘ্যে এক ইঞ্চি হইতে দুই ইঞ্চি পর্য্যন্ত । "ইহার দেখিতে অনেকটা তৈলঙ্গীগণের ন্যায়। খামবাসীগণ মস্তকের উপর প্রায় চারি ইঞ্চি পরিমিত স্থানে কেশ রাখে। অবশিষ্ট কেশ মুগুন করিয়া ফেলে। শ্যামবাসীগণের মধ্যে কেহ কেহ মন্তকে দুই ইঞ্চি লম্বা করিয়৷ কেশ রাখে। তখন তাহাদের শিথ চারি ইঞ্চি পরিমিত রাপিতে হয়। কিন্তু খামদেশের ললনাগণ মস্তক মুগুন করে না । বঙ্গবাসীর ন্যায় শু্যামবাসীগণ অনাবৃত মস্তকে ও নগ্নপদে গমনাগমন করে। এক কথায় কি স্ত্রীলোক কি পুরুষ কেহই মন্তকে কোনপ্রকার আবরণ প্রদান করে না। তবে রাজকৰ্ম্মচারীগণ সভায় গমনকালে পাগড়ী ব্যবহার করে। কাম্বোজিয়গণও শুrমবাসীগণের ন্যায় পরিচ্ছদদি ব্যবহার করে। ভারতের হিন্দুগণের মধ্যে যেমন শ্বেত পরিচ্ছদ শোকের নিদর্শন, শুম্দেশেও তদ্রুপ। ভারতবাণীর ন্যায় শ্যামদেশের অঙ্গনাগণ কণ্ঠভূষণ, বলয়, মাদুলি ব্যবহার করে। কিন্তু তাহারা উল্কি পরে না। তাহার। হিন্দুগণের নিকট হইতে রাশিচক্রাদির নামও গ্রহণ করিয়াছে এবং অমাবস্তা পূর্ণিমা ও একাদশী তিথি পালন করে। উক্ত তিথিতে তদেশের রাজা মন্দিরাদিতে গমন করেন এবং অর্থ ও তণ্ডুলাদি বিতরণ করেন। চাতুমাস ব্রত আছে। উক্ত ব্ৰত পূর্ণ হইলে তাহার অত্যন্ত আমোদ প্রমোদ করিয়া থাকে। • প্রজার কোন মোকৰ্দমা যথার্থরূপে মীমাংসিত ন হইলে রাজা স্বয়ং তাহার বিচার করেন। মোকৰ্দমার আপীল রাজার নিকট করিতে হয়। মন্থর অাইন তথায় কিঞ্চিম্মাত্রায় প্রচলিত আছে। আদালতে সাক্ষীকে আনয়ন করিলে | * Voyage de Siam –pp. 32o Liv. V & pp. 326.35 IMy, V. শ্বামে হিন্দুধৰ্ম্ম - .وههما সে যাহা বলিয়া শপথ করে তাহার মধ্যে হিন্দুদেবদেবীর উল্লেখ আছে। শপথবাক্য যথা:–“যদ্যপি আমি সত্য ভিন্ন মিথ্যাবাক্যের অবতারণা করি তাছা হইলে আমি ঘে-স্থানে গমন করি না কেন অামি যেন কদাপি বিপদ হইতে রক্ষা না পাই। তস্কর, দস্থ্য, দৈত্য, দানব, ভূত, প্রেত, পবন, বরুণ, প্রভৃতি সকলে যেন আমাকে ভীষণ দণ্ড প্রদান করেন। আমার মস্তকে যেন বজ্ৰাঘাত হয়। . যম যেন আমাকে বিশেষ যন্ত্রণা দিয়া হনন করেন।” কোন স্ত্রীলোক বক্তা অপেক্ষ স্বল্প-বয়স্ক হইলে বক্তা তাহাকে ‘ভগিনী বলিয়া সম্বোধন করিবে। পরস্তু অধিকবয়স্ক হইলে বক্ত। তাহাকে জ্যেষ্ঠ ভগিনী বা মাতা বলিয়া সম্বোধন করিবে । - স্যামবাসীরা ম্যাজিষ্ট্রেটকে প্রিয়চিকীযু প্রভৃতি বাক্যে সম্বোধন করে। কোন ব্যক্তি রাজা বা পূজনীয় ব্যক্তির নিকট হইতে কোন আদেশ প্রাপ্ত হইলে আদিষ্ট ব্যক্তি "শিরোধাৰ্য্য-রূপে গ্রহণ করিলাম” ইত্যাকার বাক্য উচ্চারণ করে। তাহারা কোন তারিখ বলিতে হইলে তুিথির উল্লেখ করিয়া থাকে। যথা অমুক মাসের শুক্ল পক্ষীয় ত্রয়োদশী তিথিতে অমুককার্য্য সংঘটিত হইয়াছিল। অতি প্রাচীনকালে ব্রাহ্মণগণ খামদেশে ভারত হইতে বর্ণমালা লইয়াগ্লিয়াছিলেন। , , অন্যায় অত্যাচার করিয়া কাহারও নিকট হইতে অর্থ গ্রহণ করিলে মৃত্যুর পর তাহাকে, পাপের যথোপযুক্ত দণ্ডগ্রহণ করিতে হইবে, ইহাও তাহাদের বিশ্বাস আছে। • “ত্ৰেয়াই শরণ" অর্থাৎ ত্রিশরণ বা কোন মন্ত্রাদি তিন বার উচ্চারণ করিবার প্রথা তথায় আছে। শুামবাসী যাজকগণ বলেন, সৰ্ব্বপাকল্যে দ্বাবিংশতি স্বর্গ ও অষ্টবিধ নরক বিদ্যমান আছে। বছজন্ম পরিগ্রহ করিয়া জীব তাহার মুকুতি বা দুস্কৃতি অনুসারে স্বৰ্গ বা নরক ভোগ করে। তাহার অধিকন্তু বলেন, স্বর্গে গমন করিলে পূর্ণ শান্তি প্রাপ্ত হওয়া যায়। নরকগুলিতে তদ্রুপ মহাভীতি, উৎপীড়ন এবং বহু অমাহধিক দণ্ড ভোগ করিতে হয়। পূৰ্ব্বেই উক্ত হইয়াছে অঃবিধ বৃহৎ নিরয়। প্রত্যেকটিতে আবার ষোলটি ক্ষুদ্র নিরয় - প্রত্যেক বৃহৎ নিরয় দৈর্ঘ্যে * Voyage de Siam, des Peres Jesuites Envoyez, par le Roy aux Indes & à la Chine, pp. 99 Liv. II..