..৭৫৬ দাড়াইল। মন্ত্যমূৰ্ত্তি ক্রমে রাজপথ ছাড়িয়া মন্দিরের নিকটে আসিল। তখন দাসী জিজ্ঞাসা করিল, “ঠাকুর, আপনি এখানে ? আগস্তুক রাজপুরোহিত পুরুষোত্তম শৰ্ম্ম। তিনি কহিলেন, “কে মাধবি ? অনেকদিন বুড়াশিবের পূজা করিয়া আসিয়াছি, কোন দিন কিছু চাহি নাই, আজি একটা প্রার্থনা করিতে আসিয়াছি।” “কি প্রার্থনা ঠাকুর ?" | “প্রার্থনা আর কি ? আজ মহারাজের আসিবার কথা । মহাদেব অনুগ্রহ করুন, মহারাজের সহিত মহাদেবীর যেন একবার শেষ সাক্ষাৎ হয়।" - - "ঠাকুর, মহাদেবী তবে বাচিয়া আছেন ?" “थेँ ।” “আমি তবে চলিলাম, আপনি ধ্যান করুন। পূজার সজ্জা রাথিয় গেলাম, পুরোহিত আসিলে পূজা করিতে বলিবেন।" “মাধবি, আজি আমার মন বড় চঞ্চল, কথা হয়ত মনে থাকিবে না, তুমি কোথায় যাইবে ?” • "ঠাকুর, মহাদেবীকে একবার জন্মের শোধ শেষ দেখা দেখিয়া আসি। অমন সতী দেখিলেও পুণ্য হয়। কত পাপ করিয়াছিলাম, সেইজন্য দাসী হইয়া জন্মিয়াছি, মহারাণীর পাদস্পর্শে আমার মুক্তি হইবে।” দাণী উত্তরের অপেক্ষ না করিয়া চলিয়া গেল। পুরুষোক্তম শৰ্ম্ম। গঙ্গাস্নান করিয়া মন্দিরদ্ধারে শয়ন করিলেন। অৰ্দ্ধদও পরে দূরে অশ্বপদশব্দ শ্রত হইল। কিয়ৎক্ষণ পরে একজন অশ্বারোহী মন্দিরের নিকটে আসিয় দাড়াইল এবং উচ্চস্বরে জিজ্ঞাসা করিল, “মন্দিরে কে আছ?” পুরুষোত্তম শৰ্ম্ম তাহার কণ্ঠস্বর শুনিয়া লম্ফ দিয়া উঠিয় দাড়াইলেন এবং কহিলেন, “কে অমৃতানন্দ ? মহারাজ কি ফিরিয়াছেন ?” অশ্বারোহী কহিল, “হা, তুমি কে ?” “আমি পুরুষোত্তম, জয় বিশ্বনাথ ।” “সংবাদ কি?” ” - -- “শীঘ্ৰ লোকনাথের মন্দিরে যাও, মহাদেবী এপনও জীবিত আছেন।” অশ্বারোহী দ্বিরুক্তি না করিয়া প্রস্থান করিল। পর - হয়ত প্রবালাঁ-আশ্বিন, ১৩২২ --০৮:৫৮, ১৯ এপ্রিল ২০১৬ (ইউটিসি)০৮:৫৮, ১৯ এপ্রিল ২০১৬ (ইউটিসি)SumitaBot (আলাপ)--> [ ১৫শ ভাগ, ১ম খণ্ড ক্ষণেই রাজপথে অশ্বপদশব্ব শ্রত হইল। তখন পুরুষোত্তম মন্দিরস্থিত শিবলিঙ্গকে সম্বোধন করিয়া কহিলেন, "বৃদ্ধেশ্বর, আমার অপরাধ গ্রহণ করিও না, আমিও মহাদেবীকে দেখিতে চলিলাম। তোমার পূজার ব্যবস্থা আজি তুমিই করিও।" পুরুষোত্তম শৰ্ম্ম মন্দিরদ্ধারে পূজার সঙ্গ পরিত্যাগ করিয়া দ্রুতপদে প্রস্থান করিলেন। সেইদিন প্রভূযে "গৌড়ের তোরণে প্ৰতীহারগণ গৌড়েশ্বরকে মাত্র চারিজন সঙ্গী লইয়া ফিরিতে দেখিয়া বিস্মিত হইল। তাহার গোবিন্দকে কখনও দেখে নাই, অমৃতানদের নিকটে তাহার পরিচয় পাইয়া অধিকতর বিস্থিত হইল। জাগরিত গৌড়জনপদগণ পরক্ষণেই শ্রবণ করিল যে, রাষ্ট্রকূটযুদ্ধ শেষ হইয়া গিয়াছে। রাষ্ট্ৰকুটরাজ সমগ্ৰ দক্ষিণাপথের একচ্ছত্র অধীশ্বর ধ্রুবের পুত্র গোবিন্দ একাকী গৌড়েশ্বরের সহিত গৌড় নগরে আগমন করিয়াছেন । লোকনাথের মন্দির-সম্মুখে জনতার অন্ত নাই। মহামন্ত্রী গৰ্গদেব মন্দিরের মণ্ডপে কুশাসনে উপবিষ্ট আছেন, তাহার সম্মুখে তখনও সূতের প্রদীপ জলিতেছে। দূরে স্তম্ভসমূহের অন্তরালে মহল্লিকা ও পরিচারিকাগণ বসিয়া আছে। মন্দিরদ্ধারে বসিয়া বিশ্বানন্দ ধীরে ধীরে প্রজ্ঞাপারমিতা পাঠ করিতেছেন। মন্দির-মধ্যে বৃদ্ধ মহাদেবী দেন্দদেবী কল্যাণীদেবীর মস্তক অঙ্কে লইয়া বসিয়া আছেন। ব্রহ্মশিলানিৰ্ম্মিত লোকনাথমৃপ্তির পদতলে মহাদেবী কল্যাণী কুশাসনে শয়ন করিয়া আছেন। তাহার পাশ্বে মঞ্জরীদেবী ও অমলাদেবী বসিয়া আছেন। মন্দিরমধ্যে যুতের প্রদীপ জলিতেছে। সকলেই নীরব, কেবল দেন্দদেবী মধ্যে মধ্যে বস্ত্রাঞ্চলে চক্ষু মুছিতেছেন। কল্যাণী কয়দিনে শুখাইয়া গিয়াছেন, কষিতকাঞ্চনের ন্যায় বর্ণ পাণ্ডু হইয়া গিয়াছে। কল্যাণী ক্ষীণকণ্ঠে জিজ্ঞাসা করিলেন, “ম, কে আসিতেছে ?" দেদদেবী চক্ষু মুছিয়া কহিলেন, "কৈ মা, কেহই ত আসে नांश् ?” এই সময়ে গোবিন্দ ধৰ্ম্মপাল উদ্ধবঘোষ সৰ্ব্বানন্দ বা গুরুদত্ত এবং অমৃতীনন্দ মন্দিরের প্রাঙ্গণে প্রবেশ করিলেন। পদশব্দে চমকিত হইয় গর্গদেব আসন ত্যাগ করিয়া দাড়াইলেন। দূর হইতে র্তাহাদিগকে দেখিয়া বিশ্বানন্দ | ৬ষ্ঠ সংখ্যা] পাঠত্যাগ করিয়া উঠিলেন এবং কহিলেন, "ধৰ্ম্ম, তুমি আসিয়াছ ?” তাহার কথা শুনিয়া মঞ্জরীদেবী ও অমলাদেবী মন্দিরের এককোণে গমন করিলেন। ধৰ্ম্মপাল গোবিন্দ ও বিশ্বানন্দ মন্দিরমধ্যে প্রবেশ করিলেন। দেন্দদেবীর শীর্ণগও বহিয়া অশ্রদ্ধার প্রবাহিত হইতেছিল, তিনি রূদ্ধকণ্ঠে কহিলেন, “পুত্র, কল্যাণী যে আমাদিগকে পরিত্যাগ করিয়া চলিল।" ধৰ্ম্মপাল আকুলকণ্ঠে জিজ্ঞাসা করিলেন, “কল্যাণি, কি হইয়াছে ?" কল্যাণীদেবীর নয়নদ্বয় সহসা উজ্জল হইয় উঠিল, তিনি গৌড়েশ্বরকে তাহার পাশ্বে উপবেশন করিতে ইঙ্গিত করিলেন । ধৰ্ম্মপাল মন্দিরতলে ভূমিতে উপবেশন করিলেন। তাহা দেখিয়া গোবিন্দও তাহার পার্থে উপবেশন করিলেন । পশ্চাৎ হইতে বিশ্বানন্দ কহিলেন, “ধৰ্ম্ম, চক্রের পরিবর্তন অনিৰ্ব্বচনীয়, দেশব্যাপী হাহাকার কল্যাণীর কোমল হৃদয় ব্যাকুল করিয়া তুলিয়াছিল। কল্যাণীর জন্য গৌড়রাজ্যের, গৌড়বাসীর, পালবংশের এবং তোমার সর্বনাশ হইতে বসিয়াছে ইহা বুঝিতে পারিয়া কল্যাণীর হৃদয় ভাঙ্গিয়া গিয়াছে, পেই জন্যই কল্যাণী চলিয়াছেন।” ধৰ্ম্মপাল কল্যাণীকে আশ্বাস দিবার জন্ত কহিলেন, "কল্যাণি! দুঃখের দিন অবসান হইয়াছে, যুদ্ধ শেষ হইয়াছে, এই দেখ রাষ্ট্রকূটরাজ একাকী আমার সহিত গৌড়ে আসিয়াছেন।” ক্ষীণশ্বরে কল্যাণীদেবী কহিলেন, “তোমাকে আরএকবার দেখিব বলিয়া এখনও যাইতে পারি নাই, তুমি আসিয়াছ, আমি চলিলাম। আমার একটি অনুরোধ রাথিও, রাখিবে বল ? আমি মরিলে রাষ্ট্রকুটরাজকন্যাকে বিবাহ করিও।” ধৰ্ম্মপাল কল্যাণীর উভয় হস্ত ধারণ করিয়া রুদ্ধকণ্ঠে কহিলেন, “কি বলিতেছ কল্যাণি ?” "শুন—আমার আর অধিক সময় নাই, আমাকে স্পশ कद्रिप्र। श्रक्रौकांव कन, ८न दनिएt८छ् श्राभाद्र मृभग्न श्प्रl८छ्, আমার নূতন জগং হইতে আমাকে আহবান করিতে আসিয়াছে।” ” "কে বলিয়ছে, কি বলিয়াছে কল্যাণি ?” পশ্চাং হইতে বিশ্বানন্দ বলি উঠিলেন, "ধৰ্ম্ম, দক্ষিণ ヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘ ꬃ¢ጳ পথ হইতে ফিরিবার সময় পথে এক অন্ধবালককে ੋ পাইয়াছিলাম, তাহাকে গৌড়ে লইয়া আসিয়াছিলাম। সেই কল্যাণীকে বলিয়াছে যে তাহার মুক্তির দিন . আসিয়াছে, জন্মজন্মান্তর ধরিয়া সে নির্মাণের পথ প্রশস্ত করিয়াছে, এইবার তাহার বন্ধন-মুক্তি হইবে। কল্যাণীর আত্মত্যাগে গৌড়রাজ্য, গৌড়বাণী এবং গৌড়রাজের দোষ গ্রহ শাস্ত হইবে। ধৰ্ম্ম সেই অন্ধ বালকের কথা শুনিয়া কল্যাণী লোকনাথের পদমূলে আত্মবলি দিয়াছে।" বৃদ্ধ সন্ন্যাসীর কণ্ঠরুদ্ধ হইল, শীর্ণ গগু ও দীর্ঘ শ্মশ্র বহিয়া অশ্রধারা প্রবাহিত হইল। o কল্যাণী পুনরায় কহিলেন, “অঙ্গীকার কর। পিতৃগৃহে যেদিন মাতা আমাকে তোমার হস্তে সপিয়া দিয়াছিলেন, যেদিন আমাকে পৃষ্ঠে লইয়া গোকর্ণদুর্গের পরিখায় লাফ দিয়াছিলে, সেইদিনের কথা স্মরণ করিয়া আমার শেষ অম্বরোধ রক্ষা কর।” - ধৰ্ম্মপাল কল্যাণীকে বাছপাশে আবদ্ধ করিয়া বালকের ন্যায় রোদন করিয়া উঠিলেন। গোবিন্দ এতক্ষণ পাষাণপ্রতিমার ন্যায় নিশ্চল হইয়া বসিয়া ছিলেন, এইবার তাহার নয়নদ্বয় অশ্রাভারাক্রাস্ত হইল, তিনি আকুলকণ্ঠে বলিয়া উঠিলেন, "ম, অপরাধ আমার । নাগভটের পরাজয়ের পরে বলহীন গৌড়ে যে রক্তস্রোত প্রবাহিত হইয়াছে তাহার জন্য আমি অপরাধী। তুমি ভুল করিয়াছ, আমার অপরাধের জন্ত তুমি কেন শাস্তি গ্রহণ করিবে ?” কল্যাণী কহিলেন, “পিতা, আমার কৰ্ম্মফল আমি ভোগ করিতেছি, আপনার অপরাধ কি ! সে বলিয়াছে— আমার বন্ধন মোচনের দিন আসিয়াছে। আপনি পিতা, বাধা দিবেন না।” পশ্চাৎ হইতে বিশ্বানন্দ কহিলেন, "ধৰ্ম্ম, সে অবধি সেই অন্ধ বালককে কেহ গৌড়ে দেখে নাই। তাহাকে দেখিতে পাইলে জিজ্ঞাসা করিতাম—কে তাহাকে এসকল কথা বলিয়া গেল।" - কল্যাণী কহিলেন, "প্ৰভু, আমার সময় হইয়াছে, আকাশপথে দাড়াইয় কে আমাকে ডাকিতেছে। বল, অঙ্গীকার কর ?” - -