পাতা:প্রবাসী (পঞ্চদশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).pdf/৪১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

༡.ab་༠ - সময় অনেক আহত সৈন্য আদায় স্থানাভাববশতঃ তাহ উঠিয়া যায়, তাহার পর আবার চলিতে আরম্ভ করে। ইহার একটি হাসপাতাল নিৰ্ম্মাণ করিবার ও তৎসঙ্গে শুশ্ৰুষাকারিণীদিগের জন্য একটি শিক্ষালয় স্থাপন করিবার প্রস্তাব করিয়াছেন। তুরস্কে নারীজাতির মধ্যে এই যে আন্দোলন ও বিবিধ কাৰ্য্য আরম্ভ হইয়াছে তাহ অত্যন্ত অল্পদিনের হইলেও তাহার মূল্য আছে। ইহার মধ্যে যে স্বাধীনতার ও স্বাবলম্বনের পরিচয় পাওয়া যাইতেছে, তাহাকে খাটে৷ করিয়া রাখিবার কাহারও শক্তি নাই। ইহা নারীজাতিকে যে মহাশক্তিতে মণ্ডিত করিয়া তুলিতেছে তাহার দ্বারা তাহার। স্ত্রীজাতির প্রতি অন্যায় অত্যাচারের স্পষ্ট প্রতিবাদ করিতেছেন। এখন আর কেহ সে প্রতিবাদ হাসিয়৷ উড়াইতে পারিতেছেন না । তাহাদের মধ্যে যে অগ্নিস্ফুলিঙ্গ এতদিন নিহিত ছিল আজ বাতাস পাইয়া তাহা জলিয়া উঠিয়াছে, সকল পাপ ভস্ম করিয়৷ তবে তাহ শান্ত হইবে। এতদিনে তাহারা আপনাদের শক্তির মূল্য বুঝিয়াছেন, স্বজাতির কল্যাণের জন্য তাহীর সদ্ব্যবহার করিতে আজ র্তাহারা অগ্রসর श्ब्रां८छ्न। মুসলমানসমাজের পদ ও বহুবিবাহ, এই দুইটি দূষনীয় প্রথার বিরুদ্ধেই তাহার। বিশেষভাবে লাগিয়াছেন। র্তাহারা বলেন যে মহম্মদ অবগুণ্ঠন ধারণ মুসলমানধর্শের একটি অপরিবর্তনীয় অঙ্গস্বরূপ বলিয়া যান নাই, কোরানের যে অংশে ইহার উল্লেখ আছে সে অংশ সময়োচিত প্রয়োজন অনুসারে পরিবর্তন করা যাইতে পারে। র্তাহারা বলেন এই বিংশশতাব্দীর আর্থিক ও সামাজিক অবস্থায় লক্ষ লক্ষ মনুষ্য আধুনিক কাৰ্য্যক্ষেত্রের উৎসাহের বাহিরে অবগুষ্ঠিত ও সঙ্কুচিত হইয়া পড়িয়া থাকিলে কিছুতেই চলিবে না। সেইজন্য র্তাহার উচ্চকণ্ঠে ঘোষণা করিতেছেন যে জগতের ও র্তাহাদের মধ্যে যে অবগুণ্ঠন অন্তরাল হইয়া রহিয়াছে তাহাকে তুলিয়া দেওয়া হউক। কিছুকাল পূৰ্ব্বে ইস্তাম্বুলের কোন মেলায় তুর্কিমহিলারা অবগুণ্ঠন খুলিয়া গিয়াছিলেন। বহুবিবাহের বিরুদ্ধে যে যুদ্ধঘোষণা হইতেছে তাহারও প্রবালাঁ—আশ্বিন, ১৩২২ ইহার সহিত যোগ আছে । আজকাল অর্থাভাবে অনেক পুরুষই একের অধিক বিবাহ করিতে না পারায় বহুবিবাহ আপন হইতেই কমিয়া আসিতেছে। নারীজাতির প্রতিবাদও একেবারে নিষ্ফল হয় নাই। (lzzet Fuad Pasha ) জেনারেল ইজ্জত ফুঅrদ পাশা বলেন যে আঞ্জকালকার দিনে এই সামাজিক প্রথার ব্যয়নিৰ্ব্বাহ করা যে অসম্ভব তাহা তুর্কিগণ বেশ হৃদয়ঙ্গম করিতেছেন। তিনি তাহার শ্বশুরের দৃষ্টান্ত দিয়া বলেন যে ইনি কুড়ি লক্ষ পাউণ্ডের (তিন কোটি টাকার ) সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হন, কিন্তু চল্লিশ বৎসর বয়সে মৃত্যুকালে তাহার কিছুই ছিল না। জীবিতাবস্থায় তাহাকে চারি পত্নী ও পাচশত দাসীর পৃথক পৃথক সংসারনিৰ্ব্বাহের ব্যয় যোগাইয়৷ আসিতে হইয়াছিল। সংসারের এইরূপ ব্যয়ই তুরস্কের ধ্বংসের কারণ হইয়া উঠিতেছে । পরিবারের জন্য মদি এইরূপ অৰ্থ ব্যয় করিতে হয় তবে ব্যবসাবাণিজ্যের মূলধনের জন্য আর কিছু থাকে না। কাজেই গ্রীক ও আৰ্ম্মিনীয়ান প্রভৃতি অন্যান্য জাতিগণ সেইস্থান অধিকার করিয়া লইতেছেন। তবে যতদিন মুসলমানধৰ্ম্ম, দেশাচার ও আইন এই বিবাহপ্রথার অনুমোদন করিবে ততদিন এই পাপের মূলচ্ছেদ হইবে না। পর্দা ও বহুবিবাহের তিরোধানের দিন এখনও বহুদূরে, কিন্তু স্ত্রীজাতির আর্থিক ও সামাজিক শক্তির বৃদ্ধির সহিত ইহার প্রকোপ বহুল পরিমাণে কমিয়া আসিবে। তাহার ঘে-পরিমাণে স্বীয় জীবিকা উপার্জন করিতে ও বিশেষতঃ যুক্তযুক্তভাবে আপনাদের অধীনতার প্রতিবাদ করিতে সক্ষম হইবেন সেই পরিমাণেই ইহার হ্রাস হইবে । কেবল যে তুরস্কের মুসলমানমহিলারাই স্বাধীনতা ও শিক্ষার জন্য তুমুল আন্দোলন করিতেছেন তাহা নহে, পারস্য মিশর প্রভৃতি দেশের অন্তঃপুরিকারাও আপনাদের মনুষ্যত্ব ফিরিয়া পাইবার জন্য সচেষ্ট হইয়াছেন। মিশরের বৰ্ত্তমান থেদিবের মাতা তাহার স্বজাতীয় সম্ভ্রান্ত মহিলাগণ ও কাইরোপ্রবাসী বিশিষ্ট বিদেশী মহিলাদিগকে লইয়া এক নারীশিক্ষাসমিতি গঠন করিয়াছেন । • (১) সকল জাতীয়া নারীদিগের মিলন ও তদ্বারা স্ত্রী শিক্ষার বিস্তার, (২) মাতা ও শিক্ষয়িত্রীগণকে শ্রেষ্ঠ শিক্ষা [ ১৫শ ভাগ, ১ম খণ্ড I ৬ষ্ঠ সংখ্যা R ヘヘヘヘヘヘヘヘー、ペ -- প্রণালী শ্রেধান ও পরস্পরের অভিজ্ঞতার বিনিময়ের জন্য র্তাহাদের মিলন, (৩) শারীরিক মানসিক ও নৈতিক শিক্ষার বিষয়ে বক্তৃতাদির ব্যবস্থা করণ, (৪) এবং গ্লিক্ষিতা বালিক ও তরুণীদিগকে জগতের ক্ৰমবৰ্দ্ধনশীল জ্ঞানের সহিত ও সাহিত্যের সহিত ঘনিষ্ঠ সম্বন্ধ স্থাপন করিতে সমর্থ করা ও তজ্জন্ত অধিকাংশের বোধগম্য ভাষায় একটি মাসিকপত্রিকা প্রচার, এই কয়েকটি উদ্দেশ্বেই উপরোক্ত সমিতি স্থাপিত। আফ্রিকান টাইম্স্ এণ্ড ওরিয়েন্ট রিভিউ (African Times and Orient Review) on frosta frogs:43 সঙ্গে-সঙ্গে মিশরের নেতাগণ বুঝিতে পারিয়াছেন স্ত্রীজাতির শারীরিক ও মানসিক উন্নতির এবং ধৰ্ম্মনামধাবী দেশাচারের কবল হইতে তাহাদের উদ্ধারসাধনের উপর সমগ্র দেশের উন্নতি বহুলপরিমাণে নির্ভর করিতেছে। পুরুষগণ যেমন শিক্ষালাভ করিতেছেন সেই সঙ্গে তাহারা তাহাদের মত উপযুক্ত শিক্ষিত জীবনসঙ্গিনী খুজিতেছেন, ইহার ফলে একত্রী-গ্ৰহণ প্রথা সৰ্ব্বত্র বিশেষতঃ উচ্চশ্রেণীর ও উপাধিধারীদিগের মধ্যে প্রবর্তিত হইতেছে। মিশরের সংবাদপত্ৰসকল উৎসাহের সহিত পর্দা প্রথার উচ্ছেদ ও স্ত্রীস্বাধীনতার প্রবর্তনের সমর্থন করিতেছেন। সাধারণের মতও ক্রমশ: এই পক্ষে আসিতেছে । এই নারীশিক্ষা-সমিতি এই মানসিক আন্দোলনেরই অন্যতম ফল, এই আন্দোলনকে সফল করিবার জন্য শীঘ্রই আরও কয়েকটি বালিকাবিদ্যালয় স্থাপন করা হইবে। স্ত্রীশিক্ষাকে আরও অগ্রসর করিবার জন্য বাল্যবিবাহের ফলে অকালে যাহাদের শিক্ষা সমাপ্ত হইয়াছে তাহদেরও শিক্ষার ব্যবস্থা করিবার চেষ্টা হইবে। শিক্ষিত মিশরবাসীগণ সকলেই জ্ঞানবিদ্যাবতী ও অবরোধমুক্ত স্ত্রী চান বলিয়া বোধ হয়, এই সমিতির চেষ্টা শীঘ্রই স্বফলে ভূষিত হইবে। পারস্যদেশীয় স্ত্রীলোকদের অবস্থাও অন্যান্য মুসলমান গ্ৰীলোকদিগের অপেক্ষ কিছুমাত্র লোভনীয় ছিল না। কিন্তু গত কয়েক বৎসর ধরিয়া তাহারাও দ্রুতবেগে উন্নতির পথে অগ্রসর হইতেছেন। এমন কি রাজনীতিক্ষেত্রেও র্তাহারা অগ্রণী হইতে ছাড়েন নাই। কিছুকাল মুসলমানদেশের নারীসমাজ পূৰ্ব্বে পারস্যে নিয়মতন্ত্রপ্রণালী প্রতিষ্ঠা করিবার કર્મ আগুন যে জলিয়া উঠিয়াছিল তাহা ক্ষণস্থায়ী হইলেও তাহার পরিচালনা অত্যন্ত বিস্ময়কর। ইহা বিদেশীদের সাহায্যে - নিৰ্বাপিত করিতে হইয়াছিল। কিন্তু ইহার মূলে যদি পারস্যদেশের তথাকথিত আসবাবপত্রের সামিল রমণীদিগের প্রভাব না থাকিত তাহা হইলে ইহা অচিরেই একটি শৃঙ্খলাবিহীন অসম্বন্ধ প্রতিবাদরূপে লুপ্ত হইয়া যাইত। পারস্যের জনসমূহ নিয়মতত্ত্বশাসনপ্রণালীর প্রতিষ্ঠার জন্য এবং রাজনৈতিক ও বাণিজ্যসংক্রান্ত পাশ্চাত্যশিক্ষার প্রবর্তনের জন্য যে জাতীয় আন্দোলন উপস্থিত করিয়াছিলেন, ইহারাই গৃহকোণের ভিতর হইতে তাহার ইন্ধন যোগাইতেছিলেন। স্বদেশপ্রেমের অগ্নি তাহাদের অবগুষ্ঠিত দৃষ্টির ভিতর হইতেই ফুটিয়া উঠিয়াছে। শাহগণ যে অসহ উৎপীড়ন ও অত্যাচারে দেশ প্লাবিত করিতেছিলেন তাহাৰ্তাহাদিগকেও ঘা দিয়াছে। স্বাধীনতালাভের আগ্রহে তাহারা স্ত্রীজাতির অলঙ্ঘনীয় ইতিহাসঃসিদ্ধ বহু প্রথা ভাঙ্গিয়া ফেলিতেছেন। পাশ্চাত্য রমণীগণ বহুকাল হইতেই পুরুষদিগের সহিত কাৰ্য্যক্ষেত্রে মিলিত হইয়াছেন। কিন্তু এই পূৰ্ব্বদেশীয় কন্যাগণ কখন ধে রাতারাতি লেখিকা শিক্ষয়িত্রী রাজনৈতিক বক্ত ও নারীসমিতির প্রতিষ্ঠাত্রী হইয়া বসিয়াছেন, মনে করিলে অবাক হইয়া যাইতে হয় । সম্পূর্ণরূপে অনভ্যন্ত মনও যে কি করিয়া নূতন চিন্তা ও মত-সকলকে অতি অল্পদিনে একেবারে আপনার করিয়া লয়, পারস্যরমণীগণ জগৎকে তাহার এক উজ্জল দৃষ্টান্ত দেখাইয়াছেন। রাজনীতি ক্ষেত্রের সকল বিভাগেই ইহাদের দৃষ্টি পড়িয়াছে। তাহাজের উদ্দেশ্যসাধনের ও দেশের মঙ্গলের জন্য র্তাহারা অনেক সমিতি স্থাপন করিয়াছেন এবং সেইজন্য ইংরেজপুরুষের নিকট বাদ প্রতিবাদ ও পরামর্শ প্রভৃতি করিতে যাইতেও পশ্চাৎপদ হন না। অতি দরিদ্র শ্রেণীর স্ত্রীলোকগণও এইসকল কাৰ্য্য করেন । ১৯১১ খৃষ্টাব্দে রুশিয়াগভর্ণমেন্ট পারস্যকে বলিয়া পাঠাইয়াছিলেন যে পারসাকে তাহাদের কথিত কয়েকটি সৰ্ব গ্রহণ করিতে হইবে । এই সর্তগুলি রক্ষা করিতে চইলে রুশিয়ার পদতলে পারস্যের স্বাধীনতা Գե»..