পাতা:প্রবাসী (পঞ্চদশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).pdf/৪১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রবাসী-আশ্বিন, ১৩১১ বিসর্জন করিতে হইত। কাজেই পারস্যের ‘জাতীয় মহাসভা’ তাহ প্রত্যাখ্যান করিলেন। মন্ত্রীগণ অত্যন্ত ভীত হইয়৷ পড়িলেন। রুশিয়ার আক্রমণের বিরুদ্ধে দাড়াইবার শক্তি ত তাহদের নাই! তাহার। আবার কিছুদিন পরে ‘জাতীয় মহাসভা'কে এই প্রস্তাব গ্রহণ করিতে অনুরোধ করিলেন । র্তাহার। দ্বিতীয়বার প্রত্যাখ্যান করিলেন । তাহার বলিলেন, “আল্লার ইচ্ছা হইলে আমাদের স্বাধীনতা লুপ্ত হইবে, কিন্তু তাহাকে স্বহস্তে বিসর্জন দিতে আমরা পারিব ল।” তেহরান ও সমস্তদেশময় তাহদের জয়জয়কার পড়িয়া গেল । কিন্তু আবার সংশয়ের অন্ধকার ঘনাইয়া আসিল । রুশিয়ান গুপ্তচরগণ "সভা'র সভাগণকে নানারূপ ভয় ও প্রলোভন দেথাইতে লাগিলেন। দেশের সকলের প্রাণে ভয় ঢুকিল, এবার আর বুঝি জাতীয় মহাসভা স্থির প্রতিজ্ঞ থাকিতে পারেন না ! এইবার নারীশক্তির আবির্ভাব হইল। অন্তঃপুরের প্রাচীরের বাধা অতিক্রম করিয়া তিনশত পারস্তরমণী দৃঢ়প্রতিস্তার ভূষণে ভূষিত হুইয়। বাহির হইয়া অসিলেন । প্রত্যেকের মুথে ওড়ন। ঢাকা ও অনেকের হস্তে পিস্তল। তাহারা সোজা ‘মহাসভা’য় উপস্থিত হইয়া সভাপতি মহাশয়কে বলিলেন গামাদিগকে মহাসভায় প্রবেশ করিতে অনুমতি প্রদান করুন।' সভাপতির মনে তখন কি ভাবের উদয় হইয়াছিল ইতিহাস তাহ লেখে নাই । তিনি তাহাদিগকে নারীসমাজের প্রতিনিধিরূপে গ্রহণ করিতে রাজি হইলেন । তখন তাহারা ওড়না ছিড়িয়া ফেলিয়া পিস্তল তুলিয়৷ ধরিয়৷ জানাই দিলেন যে, স্বদেশের রক্ষার ও তাহার প্রতি কৰ্ত্তব্যসাধনের পথ হইতে যদি তাহদের স্বামীপুত্রগণ একটুল ও বিচলিত হন, তবে সেই মাতা ও পত্নীগণ স্বহস্তে তাহাদিগকে দেশের নিকট বলিদান দিয়া সেই সঙ্গে অাপন । দিগকে ও উংসর্গ করিবেন। দুই এক সপ্তাহ পরে রুশিয়ার অর্থে বশীভূত দেশদ্রোহীরা এই ‘মহাসভা'কে নষ্ট করিয়া ফেলিল । কিন্তু দেশের স্বাধীনতা বিক্রয়ের কলঙ্ক সভাগণকে একটুও স্পর্শ করিতে পারে নাই । -ধন্য পারস্যের অন্তঃপুরিক চিরকাল পুরুষের অধীন ১৫শ ভাগ, ১ম খণ্ড থাকিয়া, শিক্ষার বিন্দুমাত্রও সুবিধা না পাইয়া, বন্দিনীর মত সৰ্ব্বদা পাহারার মধ্যে থাকিয়াও ইহার দেশের কাজে আপনাদের শক্তি নিযুক্ত করিয়াছেন ; যে দুর্দিনে পুরুষের অন্ত:করণও কঁপিয়া উঠিয়াছে এবং বীরশ্রেষ্ঠের হৃদয়েও কারাগৃহের অত্যাচার ও যুদ্ধক্ষেত্রের গোলাগুলির ছবি ভীষণমূৰ্ত্তিতে প্রকাশিত হইতেছে তখনও তাহারা বিচলিত হয়েন নাই । পারস্তের হৃদয়ের আশা নিৰ্ম্মল হইয়াছে বটে কিন্তু এই বীররমণীগণের স্মৃতি সৰ্ব্বকালে ওঁ সৰ্ব্বদেশে ন্যায়প্রিয় পুরুষের হৃদয়ে উদ্দীপনার সঞ্চার করিবে । সৰ্ব্বত্রই নারীজাতি লাঞ্ছিতা ও নিষ্পেষিত হইয় আসিতেছেন। কোন কোন বিষয়ে মুসলমানরমণীগণের অবস্থা বোধহয় সৰ্ব্বাপেক্ষ শোচনীয়। কিন্তু চিরকাল কেহ এরূপ অবমাননা সহ্য করিয়া থাকিতে পারে না । তাই ইহাদের মধ্যেও জাগরণের দিন আসিয়াছে । আমরা দেখিলাম এতদিনের অধীনতায়ও ইহাদের উৎসাহ নিভিয়৷ যায় নাই, হৃদয় জড়ত। প্রাপ্ত হয় নাই। যে দিকেই সুযোগ পাইতেছেন সেই দিকেই আগ্রহের সহিত ইহার অগ্রসর হইতেছেন । তাহীদের শক্তি নাই একথাও বলা যায় না, কারণ র্তাহারা বহুবিষয়ে সফলতা লাভ করিতেছেন। নিষ্ফলতা তাতাদের উৎসাহকে নিৰ্ব্বাপিত করিতে পারিতেছে না । শ্রীশান্ত চট্টোপাধ্যায় । জগদীশচন্দ্রের আবিষ্কার বিজ্ঞানাচাৰ্য্য শ্ৰীযুক্ত জগদীশচন্দ্র বস্থ মহাশয় তাহার আবিষ্কারের বিবরণ বিদেশের বৈজ্ঞানিকদিগের নিকটে প্রকাশ করিবার জন্য বংসরাধিককাল যুরোপ আমেরিক ও জাপান প্রভৃতি দেশে পরিভ্রমণ করিতেছিলেন। কয়েক সপ্তাহ হইল তিনি নিরাপদে স্বদেশে প্রত্যাগত হইয়াছেন । আবিষ্কারবিবরণ প্রচারের জন্য ইহাই তাহার প্রথম বিদেশ যাত্র নয়, আরো তিনবার তাহাকে এই উদ্দেশ্য লইয়াই বিদেশে বহির্গত হইতে হইয়াছিল । -- নির্জীব ধাতুপিণ্ড আঘাতে উত্তেজনা পাইলে সঙ্গীব s ৬ষ্ঠ সংখ্যা ) , জগদীশচন্দ্রের আবিষ্কার ૧૭ i