পাতা:প্রবাসী (পঞ্চদশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).pdf/৪২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভিতরকার কাজ শেষ করিয়া অন্যত্র হইতে ভালো পাথর আনাইয়া তাহার বাহিরের আবরণটি তৈয়ারী করা হয়। নিকটস্থ যে পাহাড় হইতে বাজে পাথর সংগ্রহ করা হয় তাহার খানিকটা অব্যবহৃত অংশ পড়িয়াই থাকে। স্ফীংক্স সমস্যার গোড়ায় এ কথাটি মনে রাখা দরকার। চিয়ুপের পুত্র মিশর-রাজ খেয়প বা চেয়পের প্রস্তরমূৰ্ত্তি । খেফ্রেন বা চিফ্রেন তাহার নিকটেই “স্বমহান চিফ্রেন” নামের পিরামিডটি রচনা করেন। তাহার রচনা-পদ্ধতি ঠিক তাহার পিতার অনুরূপই ছিল। উভয়েই যথাকালে নিজ নিজ রচিত পিরামিডে সমাধি লাভ করেন। মিশরীয় সমাধি-মন্দিরকে সাধারণত দুই ভাগে বিভক্ত করা যাইতে পারে। মাটির নীচে একটি প্রকোষ্ঠে শব রক্ষিত হয়। প্রকোষ্ঠটির চারিদিকে প্রাচীর গাথা, বায়ু আলোক প্রবেশের ছিদ্র পর্য্যন্ত নাই। তাহার ঠিক উপরিভাগে পাথর বা ইটের ছোট স্তপের দ্বারা সমাধিস্থানটি চিহ্নিত করা হয়। সেখানেই মৃত ব্যক্তির উদেখে খাদ্য পানীয় উংসর্গ করিবার ও তন্ত্র মন্ত্র পাঠ প্রভৃতির জন্য একটি নির্দিষ্ট স্থান আছে। অবশ্ব একথা মনে রাখা দরকার যে, .মিশরবাসীরা জন্মান্তরবাদী ও তাহদের ধারণ যে মৃত্যুর পর আবার নূতন জন্ম গ্রহণ করিবার কালে ঐ দেহেই আবার নবজীবন লাভ কৰিতে হয় এবং ঐ দেহেই স্বর্গেও প্রবাসী—আশ্বিন, ১৩২২ ০৯:০২, ১৯ এপ্রিল ২০১৬ (ইউটিসি)০৯:০২, ১৯ এপ্রিল ২০১৬ (ইউটিসি)~~ [ ১৫শ ভাগ, ১ম খণ্ড যাইতে হইবে । ইহাই তাহাদের ধৰ্ম্মবিশ্বাসের মূলতত্ত্ব। এই কারণে দেহ যাহাতে বিকৃত ও ধ্বংসপ্রাপ্ত না হয় সেইজন্যই মান উপায়ে দেহটাকে কোন-মতে টিকাইয়। রাখিবার জন্য তাহারা এত চেষ্টা করিয়া থাকে। মিশরের ‘মামি' তাহাদের এই ধৰ্ম্মবিশ্বাসের ফল ছাড়া আর কিছুই নয়। এই জন্যই তাহারা সমাধিস্থ করিবার সময় মৃত ব্যক্তির সঙ্গে তাহার নিত্যব্যবহার্য্য জিনিসপত্র ও খাদ্য পানীয় প্রভৃতি দিয়া থাকে। ইহা তাহদের ধৰ্ম্মের একটি বিশেষ অঙ্গ। মাঝে মাঝে মৃত ব্যক্তির সমাধির নিকটে গিয় তাহার উদ্দেশ্যে খাদ্য ও পানীয় উৎসর্গ করা আত্মীয় স্বজনদের •একটা প্রধান কৰ্ত্তব্য। মিশরের রাজারা সেইজন্যই মৃত্যুর পর আহার-বিহার ও সুখ সুবিধার একটা ব্যবস্থা বাচিয়৷ থাকিতে থাকিতেই করিয়া যাইতেন । পিরামিডগুলি প্রকৃতপক্ষে সাধারণ সমাধির রাজসংস্করণ ব্যতীত আর কিছুই নয়। একটি পাৰ্ব্বত্য অধিত্যকার উপর এগুলি অবস্থিত। সুবিধার জন্যই হৌক বা অন্য যে কারণেই পেফেন বা চেফ্রেন, প্রথম স্ফীক্ষস নিৰ্ম্মাণের প্রবর্ভূক, ইহারই প্রতিমূৰ্ত্তি । রূপে গিজের প্রান্তরের নরসিংহ-মূৰ্ত্তি নিৰ্ম্মিত হইয়াছিল।

৬ষ্ঠ সংখ্য। ] হৌক, পিরামিডের নীচের উপত্যকায় একটি মন্দির নিৰ্ম্মাণ করা হয়। এই মন্দিরটি পিরাপিডের উপরকার মন্দিরটির সহিত একটি সরু রাস্ত দ্বার সংশ্লিষ্ট । দ্বিতীয় অর্থাং চিফ্রেনের সমাধি পিরামিডটি ও তাহার পাশ্ববর্তী স্থান বিশেষ পর্য্যবেক্ষণ করিয়া জানা গিয়াছে যে উহা বস্তুত একটি অতি জটিল ব্যাপার। প্রথমত: পিরামিডটি বহু অংশে বিভক্ত। চিফ্রেনের সমাধি ও তৎস প্লষ্ট পূৰ্ব্বদিকে অবস্থিত উৎসর্গের স্থান, এবং ইহার চারি ধারে একটি চতুষ্কোণ প্রাচীর এবং এখান হইতে উপত্যকার পাথরের মন্দির ( ক্ষীক্ষসমন্দির ) পৰ্য্যন্ত একটি রাস্ত ও খাস মন্দিরটি, এ সমস্তই দ্বিতীয় পিরামিডের অঙ্গ ৯এমনকি বিরাট স্ফীঙ্কসমূর্তিটি পর্য্যন্ত ইহার অঙ্গবিশেষ বলিয়া বোধ হয়, আরও মনে হয় যে এটি চিয়ুপের পিরামিডের পরিত্যক্ত পাহাড়ের অংশ হইতেই কাটিয়া প্রস্তুত করা হইয়াছে। কিন্তু মাহুষের মত মুখ ও সিংহের মত অবয়রের এই অদ্ভুত মূৰ্ত্তিটি চিফ্রেনের সমাধির সহিত কোন উদেশ্ব সাধনের জন্য সংশ্লিষ্ট হইয়াছিল এখন তাহাই নির্ণয় করা আবশ্যক । একট। সৌভাগ্যের বিষয় যে মিশরে ফাঙ্কসমূৰ্বর আদৌ অভাব নাই, প্রায় অধিকাংশ মিশরীয় স্বপেই প্রস্তরমূৰ্ত্তিতে তক্ষণ-চিত্রে মণিরত্নাদিতে ও কবচে পৰ্য্যন্ত স্ফীঙ্কস-মূৰ্ত্তি অমুকুত দেখিতে পাওয়া গিয়াছে। অনেকগুলি স্ফীক্ষসমূৰ্ত্তিতে সিংহের দেহে রাজার মাথা বসানে। এগুলি কোনো-না-কোনো একটি পবিত্র স্থানের রক্ষক দেবতা । স্ফীঙ্কসের অন্যান্য অনুকৃতিগুলিও ঐরূপ কবরের হিসাবেই ব্যবহৃত হয়। এইখান হইতেই স্ফীঙ্কস-সমস্যাটা বহুল পরিমাণে সরল হইয় আসে। কিন্তু তথাপি কয়েকজন পণ্ডিতের তর্কবিতর্ক ও বাক্বিতণ্ডার ফলে প্রকৃত মীমাংসায় উপনীত হইবার পথে সমূহ বাধা উপস্থিত হয়। স্ফীঙ্কসের উদ্দেশ্য স্থিরীকৃত হইবার পর কে তাহার রচয়িত এই লইয়া পণ্ডিতমহলে খুব আন্দোলন হয়। একদল বলেন লঙ্কসমূৰ্ত্তি পূৰ্ব্বতন সাম্রাজ্যের চতুর্থ রাজবংশের রাজা চিফ্রেনের কীৰ্ত্তি—অপর দল বলেন যে পরবর্তীকালে অর্থাৎ ষড়বিংশ রাজবংশের শাসনকালে যখন চিফ্রেন-প্রবর্তিত পূজাপদ্ধতির পুনরভু্যদয় হয় সেই সময়েই উহ। তৃতীয় এমেনেমহাতে মিশর-রহস্য സഹ ԵօՀ মিশররাজ মাইসেরিনাস ও তাহার মহিষীর শ্ৰেটপাথরে নিৰ্ম্মিত প্রতিমূর্কি । কর্তৃক নিৰ্ম্মিত হয়। বহুকাল পরে, সম্প্রতি মাইসেরিনাসের উপত্যক-মন্দিরের আবিষ্কারের সঙ্গে সঙ্গেই এই দ্বন্দ্বের মীমাংসা হইয়া গিয়াছে। যে যে বিশেষত্বের উপর নির্ভর করিয়া বলা হইয়াছিল যে স্ফীঙ্কস-মূৰ্ত্তি ষড়বিংশ রাজবংশের শাসনকালে নিৰ্ম্মিত, সেই বিশেষত্বগুলি যে চতুর্থ রাজবংশের শাসনকালেও প্রচলিত ছিল—তাহ মাইসেরিনাসের অতি প্রাচীন মন্দিরের ভিতর অন্যান্য মূৰ্ত্তি প্রভৃতির আবিষ্কারের সহিত প্রকাশ হইয়া পড়িয়াছে। চতুর্থ রাজবংশের অন্যান্য মূৰ্ত্তির সহিত মূলঙ্কসের প্রবল সাদৃশ্ব পর্যন্ত । ধরা পড়িয়াছে। - - এখন প্রশ্ন উঠতে পারে যে চতুর্থ রাজবংশের কোন