2br〉 R * സ~സ്സു শেষ হইয় গেলে জিব দিয়া ঠোটটা একবার মুছিয়। লইতেছে তারপর তৃপ্তির উচ্ছাসে একটা অদ্ভুত রকমের শব্দ করিয়া গভীর নিশ্বাস ছাড়িতেছে। এ সুযোগ ইহজীবনে আর মিলিবে না! যত বুড়োবুড়ি তাদের নাছোড়বান্দা ঘ্যানঘেনে রোগ সারাইবার জন্য ভালুকের শরণাপন্ন হইয়াছে। এ একেবারে অব্যৰ্থ! বহু পরীক্ষিত। ভাল্লুকের স্পর্শ–ষত বড় দুরারোগ্য রোগ হোক না কেন, নিশ্চয় আরাম করিবে। গ্রামবাসীদের দ্বারে দ্বারে ভাল্লুক লইয়৷ বেড়ানো হইতেছে। ভাল্লুক যার ঘরের দরজা ঠেলিয়া দয়া করিয়া একবার প্রবেশ করিতেছে তার সৌভাগ্য যে-ঘরে বাধা এ তো ধরা কথা ! সকলে তার শুভসূচনায় আনন্দ-কোলাহল করিয়া উঠিতেছে। কিন্তু অনেক সাধ্যসাধনা করিয়াও যে-ঘরে ভালুকের শুভগমন হইতেছে না সে গৃহস্থ মাথায় হাত দিয়া বসিয়া পড়িতেছে ;-তায় অমঙ্গল-আশঙ্কায় আর সকলে উংকষ্ঠিত হইয়া উঠিতেছে। সে-দিন সকাল হইতেই মেঘ করিয়া আছে। মধ্যে মধ্যে এক এক পশলা বৃষ্টিও হইতেছে। পথে কাদা। এ সব অসুবিধা সত্বেও সহরের ছেলেবুড়ে স্ত্রীপুরুষ সকলেই যেদিকে ভাল্লুক মারা হইবে সেইদিকে ছুটিয়াছে। সহর প্রায় শূন্ত। যত যানবাহন ছিল কোনোটারই অবসর নাই। সবগুলো বাজীকরদের অডার দিকে দোঁড়িয়াছে। লোক বোঝাই করিয়া সেখানে অনিয়া ফেলিতেছে, এবং আবার নূতন বোঝাইয়ের জন্য সহরের দিকে ছুটিতেছে। বেল দশটার মধ্যে সহরের যত লোক বাঁটাইয়া সেখানে উপস্থিত হইল । বাজীকরের দল হতাশে একেবারে মুহমান । তাহদের উবুর মধ্যে আর সাড়াশব্দটি নাই। পাছে এই ভীষণ হত্যাকাও চোখের সম্মুখে ঘটে সেই ভয়ে কাচ্ছাবাচ্ছা লইয়৷ মেয়ের তাবুর ভিতর লুকাইয়া পড়িয়াছে। পুরুষের কেমন একটা উত্তেজিত ব্যস্ততার সহিত শেষ কাজের সব বন্দোবস্ত করিতেছিল। ঠেলাগাড়িগুলো তাহারা বধ্যভূমির এক কিনারায় টানিয়া আনিয়াছে এবং তাহার ডাওয়ি ভালুকগুলোকে বাধিস্থা রাখিয়াছে। প্রবাসী-আশ্বিন, ১৩২২ { ১৫শ ভাগ, ১ম খণ্ড সহরের কোতোয়াল ঐ হতভাগ্যদের সারের সমুখ দিয়া একবার চলিয়া গেল। ভালুকগুলা বেশ একটু চঞ্চল হই। উঠিয়াছে। সবই তাদের চোখে কেমন নুতন ঠেকিতেছিল। অদ্ভুত রকমের আয়োজন, অসম্ভব জনতা, একসঙ্গে এত ভালুকের ভিড়-এই সমস্ত ব্যাপার তাদের মধ্যে একটা উত্তেজনার স্বষ্টি করিতেছিল। গলায়-বাধা শিকলটার উপর তারা এক-একবার হেঁচকা মারিতেছিল ; একএকবার সেটা সজোরে কামড়াইয়া ধরিতেছিল এবং মধ্যে মধ্যে একটা অৰ্দ্ধক্ষ গর্জন করিয়া উঠিতেছিল। বৃদ্ধ আইভান রাগের ভরে বাকিয় তাহার সেই প্রকাও ভাল্লুকটির সামনে দাড়াইয়া ছিল ; কাছে তাহার পুত্ৰ—আধা-বয়সী, কাচায় পাকায় চুল—এবং তাহার পৌত্র, ভয়ঙ্কর মুখ এবং রক্তবর্ণ চক্ষু লইয়া ভালুকটিকে বাধিতেছিল। কোতোয়াল সাহেব এই তিন প্রাণীর কাছ-ঘেঁসিয়া আসিয়া হুকুম দিল—“ব্যস ! এইবার কাজ স্বরু করতে বল ।" একটা উত্তেজনার প্রকাও ঢেউ দর্শকমণ্ডলীর উপর দিয়া , থেলিয়া গেল। মুহূৰ্ত্তের মধ্যে কথাবাৰ্ত্তার গুপ্পন দ্বিগুণ হইয়া উঠিল। কিন্তু অল্পক্ষণেই সব চুপ। তখন সেই গভীর নিস্তব্ধতার মধ্য হইতে কাহার তেজ-গম্ভীর কণ্ঠস্বর ভাসিয়া উঠিল। আইভান কথা আরম্ভ করিয়াছে। —“মশায়গণ, আমায় কিছু বলতে দিন !" তারপর বাজীকরদের দিকে ফিরিয়া সে বলিতে লাগিল —"বন্ধুগণ, ক্ষম কোরো। আমি সব-প্রথমে বলবার জন্যে দাড়িয়েছি । আমি তোমাদের সকলের চেয়ে বয়সে বড়নব্বই বছরে পড়তে আমার আর দেরী নেই। এই এতটুকু বেলা থেকে আমি ভাল্লুক নাচাচ্চি, আমার সমবয়সী ভাল্লুক এই এত তাবুর মধ্যে একটিও নেই।" সে তাহার সেই পাকা মাথ একবার নীচু করিল – কুঞ্চিত কেশগুচ্ছ তার বুকের উপর আসিয়া পড়িল । মাথাটা সে একবার এধার-ওপার-করিয়া নাড়িল, তারপর বদ্ধমুষ্টির এক ঝটুকানিতে চোখ দুটা মুছিয়া লইল । এবং আগের চেয়ে উচ্চ এবং দৃঢ়স্বরে আরম্ভ করিল— —“সেই জন্যই আমি সবপ্রথম বলবার দাবী করচি। আমি ভেবেছিলুম আজকের এই ভয়ঙ্কর দৃপ্ত এ বুড়োকে . আর দেখতে হবে না;—আমার ভাল্লুকের আগে আমারই . ৬ষ্ঠ সংখ্যা ] দেহপত হবে। কিন্তু অদৃষ্ট বিরূপ! এই নিজের হাতে অঙ্গ তাকে বধ করতে হবে । যে আমার চিরজীবনের সঙ্গী, যে বন্ধুর মতো উপকারী, যে চিরদিন আমায় অন্নদান করেছে, যার দৌলতে আমার সংসার প্রতিপালন হয়েছে—তাকেই আজ স্বহস্তে বধ করতে হবে! ভাসিয়া ! ওর বাধন খুলে দে ! ভয় নেই, পালাবে না। আমাদের মতে বৃদ্ধদের যেমন মৃত্যুর হাত থেকে পরিত্রাণ নেই, ওরও তেমনি পালাবার যো নেই। ভাসিয়া খুলে দে ! বেঁধে মারতে আমি পারব না।" ভাল্লুকের স্বাধন খুলিয়া দিবার কথা শুনিয়া দর্শকমণ্ডলীর মধ্যে ভয়ের একটা চাঞ্চল্য প্রকাশ পাইল । আইভান তাহাদের দিকে ফিরিয়া বলিল—“ভয় নেই, ভয় নেই ! ও আমার কিছু বলবে না ।” - যুবক আসিয়া ভাল্লুকের গলার শিকলটা খুলিয়া দিল এবং ঠেলাগাড়িটার কাছ হইতে তাহাকে কিছু দূরে সরাইয়া লইয়া গেল। ভালুকট মাটির উপর উবু হইয়া বসিল— তার সামনের থাব। দুটো শিথিলভাবে ঝুলিয়া এধারওধার দুলিতে লাগিল। একটা ঘড়ঘড়ে নিশ্বাস তার বুকের ভিতর হইতে অতি কষ্টের সহিত বাহির হইতেছিল। বাস্তবিকই সে অত্যন্ত বৃদ্ধ ; দাতগুলা একেবারে হলদে হইয়া গেছে, গায়ের লোমগুলার উপরে একটা লালচে ছোপ পড়িয়াছে, লোমও উঠিয়া যাইতেছে। একটা স্নেহপূর্ণ অথচ করুণ চাহনি লইয়া একচোখে সে তাহার প্রভুর পানে চাহিতে লাগিল। চারিদিকে গভীর স্তব্ধতা,—কেবল মধ্যে মধ্যে বন্দুকে টোটা পুরিবার একটা শব্দ সেই স্তব্ধত। ভঙ্গ করিতেছিল। বৃদ্ধ চীৎকার করিয়া উঠিল—“দে, আমার বন্দুকটা এনে দে !” - পুত্র বন্দুক আনিয়া দিলে সে গ্রহণ করিল। তারপর বন্দুকের চোঙ ভাল্লুকের বুকের উপর রাখিয়া বলিতে লাগিল —প্ৰতাপ ! আর মুহূৰ্ত্তের মধ্যে আমার হাতে তোমার জীবন শেষ হয়ে যাবে। ঈশ্বর করুন এ সময় যেন আমার হাত ন কাপে, গুলি যেন একেবারে তোমার মৰ্ম্মস্থলে গিয়ে বিদ্ধ হয়—দগ্ধে যেন তোমায় মরতে না হয়। হে আমার চিরদিনের বন্ধু ! আমি তোমায় যন্ত্রণ দিতে পারব না! उॉब्लक b")● তুমি যখন এতটুকু তখন তোমায় ধরেছিলুম। একটি চোখ তোমার গেছে, শিকলের ঘসূড়ানিতে নাক তোমার ক্ষয় হয়ে এসেছে, ভিতরেও তোমায় ক্ষয়রোগে ধরেছে। ছেলের মতো তোমায় বুকে করে মানুষ করেছি। সেই এতটুকু থেকে দেখতে দেখতে তুমি কী প্রকাণ্ড, কী বলবান হয়ে উঠলে –আজকের এই এত ভালুকের মধ্যে তোমার জুড়ি তো একটি দেখি না। আমার সেই স্নেহযত্ব তুমি ইহজীবনে একমুহূৰ্ত্তের জন্যও তো ভোলোনি –তোমার মতো এমন বন্ধু আমি কোথায় পাব ? আমার কাছে তুমি কী শাস্ত, কী স্নেহশীল ছিলে! যখন যে খেলা শিখিয়েছি কখনো অবহেলা করনি-কোনো রকম খেলা শিখতে তোমার আর বাকি নেই। তোমার মতো গুণ কার আছে? তুমি আমার ঘরে না এলে আমার কী দুর্দশা হ’ত কে জানে! তোমারই পরিশ্রমে আমার সংসার প্রতিপালন হয়েছে--আমার এত সুখস্বচ্ছন্দ । তোমার দৌলতে আমার কি না হয়েছে ?—শীতে আশ্রয় পেয়েছি, ক্ষুধায় खङ्गं " পেয়েছি –আমার এতবড় সংসারে ছেলেবুড়ো কাউকে তুমি কোনো দুঃখ পেতে দাওনি। আমি তোমাকে ভালোও বেসেছি—প্রহারও করেছি। যদি কোনো অপরাধ হয়ে থাকে ক্ষম কোরো।" বলিয়া সে ভালুকের পায়ের কাছে একেবারে গুণত হইয় গুইরা পড়িল। ভালুকটা কেমন একটা করুণ স্বরে গুমরাইতে লাগিল আইভানের সমস্ত শরীরটা একটা উচ্ছসিত কান্নার হিল্লোলে কেবল উঠিতে-পড়িতে লাগিল। বৃদ্ধ উঠিয়া বন্দুক তুলিয়া ধরিল। ভালুক মনে করিল বুঝিবা তাহাকে লাঠির সঙ্কেতে নাচিতেই বলা হইতেছে। ८ग लिइनद्र श्राcय उद्र नेिब्रा शाट्य नाम्लाइंश नानान ভঙ্গিতে নাচিতে শুরু করিয়া দিল । —“বাবা! গুলি কয় ! এ দৃশ্ব অসহ "ি বলিয়। তার ছেলে চীৎকার করিয়া উঠিল। - আইভান পিছে হটিয়া দাড়াইল। তার চোখে আর জল নাই। মুখের উপর এক রাশ কুঞ্চিত কেশ আসিয়া পড়িআছিল, তাহ সে উঠাই দিন। তার পর দৃঢ় স্বরে বলিতে লাগিল—”এইবার আমার হাতে তোমার শেষ ! এই হুকুম যে এই বুড়োকেই নিজের হাতে