পাতা:প্রবাসী (পঞ্চবিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১০০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১ম সংখ্যা ] যে ভারি গরম। কখন জর আসিয়াছে তাই বা কে জানে ? ছুপুর হইতে আজ সে বাইরেই ছিল, সেই সময়ে নিশ্চয় জর আসিয়াছে। , ছেলেটা ভারি ভাবাইয়া তুলিল। এখন এই জর অবস্থায় ইহাকে এক বিছানায় ফেলিয়া রাখা চলে কি ? ভালো অবস্থায় রাত্রে ঘুম ভাঙিয়া গেলেও চলে, অস্থখ অবস্থায় ঘুম ভাঙিয়া যদি ভয় পায়—জর যে ছাড়িবে না। আহা, হয়ত জরের তাড়নায় কত কাপিয়াছে, যন্ত্রণায় গোপনে চোগের জল ফেলিয়াছে, মুখ ফুটিয়া তবু তাহাকে তো বলিতে পারে নাই । রতনদাসের হৃদয়টা বেদনায় টন টন করিতেছিল । ছেলেটি যে পরের, দু'দিন বাদে—হরিণ-শিশু যেমন করিয়া রাজা ভরতকে ফেলিয়া পলাইয়াছিল—ত্তেমূনি করিয়া পলাইবে, তাহা সে ভাবিতে একেবারেই ভুলিয়া গেল। উপরে বঁাশের উপর লেপখানা দড়ি দিয়া শক্ত করিয়া বাধা ছিল, রতনদাস ছোটো টুলখানা টানিয়া অনিয়া তাহার উপর উঠিয়া একঘণ্টা কঠিন পরিশ্রমে লেপ পড়িল, সেখানা আস্তে-আস্তে রতনের গায়ের উপর চাপা থিয় নিজের বিছানা টানিয়া কাছে আনিল । সমস্ত রাতটাই যে বিনিদ্র দুটি চোখ তাহার মুখের উপয় পড়িয়াছিল, একখানি হাত বড় স্নেহে তাহাকে জড়াইয়া বুকের মধ্যে রাখিয়াছিল, তাহ নিতাই মোটেই জানিতেই পারে নাই। সকালবেলা ঘুম ভাঙিতেই সহজ জ্ঞান পাইয়া সে দেখিয়া একেবারে অবাক হইয়া গেল, তাহাকে বুকের মধ্যে টানিয়া লইয়া রতনদাস তখনও ঘুমাইতেছে। নিজের গায়ে লেপ দেখিয়া সে সবই বেশ বুঝিতে পারিল। অভিমানে শিশুর হৃদয় পূর্ণ হইয়া গেল, সে বৃদ্ধের বুকের মধ্যে মুখখান গুজিয়া কোনোরকমে কান্নাটাকে চাপিবার চেষ্টা করিতে লাগিল । নিমাই ভালো হইবামাত্র রতনদাসের হারানো অশান্তিটা আবার ঘুরিয়া আসিল, অস্থভাপে তাহার হৃদয় জর্জরীভূত श्रेष्ठ फेटैिण । शबरब ! जब शक्लिास जावांब cष জড়াই পড়িতে হয়। সব-ব্লকমেই সে মায়াকে জন্ম করিবার চেষ্টা করিতেছে, কিন্তু সে জন্ম হয় কই ? আরও যে তাহাকে চাপিয়া ধরিতেছে। এরূপে কি তাহার মুক্তিলাভ Ե(: ভগবানের সাধন করা হইবে ? সব ব্যর্থ হইয়া গেল ! তাহার এতদিনের সাধন, ভজন, মালা-জপ,—এই শিশুটা সব নষ্ট করিয়া দিল ! রতনদাস দুইহাতের মধ্যে মাথা রাখিয়া ভাবিতে লাগিল। না, ইহাকে কাছ ছাড় করা চাই-ই, নহিলে সে ঠিকৃ আবার তাহাঙ্কে মায়াতে বাধিবে, তাহার মুক্তি কিছুতেই হইবে না । কোথায় দেওয়া যায় ? அ | ভাবিতে-ভৰিতে মনে পড়িয়া গেল, পার্শ্ববর্তী গ্রামে মোহান্ত স্বরূপদাসের আখড়ার কথা । তাহার সম্পৰ্কীয়া এক ভগিনী এই আখড়ায় থাকে। তাহার কাছে ছেলেটিকে দিলে খুব সম্ভব সে রাখিবে । অবশ্য কিছু টাকা দেওয়া চাই, মঙ্গিলে তাহার ছেলেটিকে হয়ত রাখিবে না, নানা আপত্তি জানাইবে। টাকLপ্রাইলে তাহার একটি কথাও বলিবে না, নিশ্চয়ই রাখিবে । পরদিন আহার করিয়া নিমাইকে খাওয়াইয় তাহাকে বাড়ীতে বসিয়া থাকিঙে বলিয়া সে বাহির इड्रेल । ཐམ་ཕབ་རྒྱུ་ প্রথমটায়ু ভগিনী এতটুকু ছেলে লইতে আপত্তি করিল, কিন্তু স্বতনদাস যখন টাকার কথা বলিল, তখন তাহার সে আপত্তি আর রহিল না, সে সহজেই রাঞ্জি হইয়া গেল ; জিজ্ঞাসা করিল, “কবে তাকে পাঠাবে, দাদা ?” দাদা গভীরমুখে বলিল, “একদিন দিয়ে যাব।” ভগিনীর উপস্থিত কিছু টাকার দরকার ছিল, কারণ বৈরাগ্য অবলম্বন করিয়াও সে বেশ একটি ছোটোখাটো ংসার পাতাইয়া বসিয়াছিল ; একটি গরু জানিয়াছিল, তাহার সব টাকা দেওয়া হয় নাই। • সে বলিল, “তবে কাল সকালেই ছেলেটিকে পৌছে দিয়ে যেয়ে দাদা, এখানে এসেই দু'জনে খেয়ে, সেখানে রায় ক’রে খেয়ে আসতে বড় বেলা হ’য়ে যাবে। আমি কিন্তু সকাল-সকাল এখানে রায় ক’রে রাখব, সকালসকাল আসা চাই ।” “কালই সকালে”-হৃদয়টা কে যেন কঠিন হাতে , চাপিয়া মুচড়াইয়া ধরিল। কালই সকালে, কেন দুই দিন