পাতা:প্রবাসী (পঞ্চবিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫০৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪র্থ সংখ্যা ] TMMMAAA SAAAAA AAAA AAAAS AAAA S S অধ্যায়ের সূচনা করিয়াছিল পূৰ্ব্বে আমরা তাহার বিস্তৃত আলোচনা করিয়াছি । মানবাত্মার নিভৃত অস্তলোকে প্রেম যে কত বড় শক্তি-স্থষমাকে ফুটাইয়া মাখিয়াছে তাহাই মেটারলিঙ্কীয় ভাবজগতে তখন অতি প্রবল হইয়া উঠিয়াছিল। কিন্তু আমাদের এই কথাটি মনে রাখিতে হুইবে যে,মেটারলিঙ্ক এই অনুভবের জগতেই আবিষ্ট হইয়া থাকিতে পারেন নাই । তাছার জাগ্রত বুদ্ধি তাহাকে বিচারের পথে চালিত করিতেছিল এবং যাহা কিছু জীবনের দুৰ্ব্বোধ্য রহয় তাহাকে অতি স্পষ্ট করিয়া দেখিবার ও জানিবার প্রবল ইচ্ছা তঁাহাকে চঞ্চল করিতেছিল। ফলে তাহার রহস্তবোধ বহুপরিমাণে হ্রাস পাইয়া আসিল এবং মানবজীবনের অনন্ত সম্ভাব্যতার প্রতি র্তাহার বিশ্বাস স্থাপিত হইল। অজ্ঞেয় রহস্য চিরকালই মানবাত্মাকে তাহার অপরিমেয় প্রেমসত্ত্বেও চির অসহায় করিয়া রাখিবে, এই কথাটি যেন তিনি সৰ্ব্বাস্তঃকরণে মানিয়া লইতে পারিলেন না। বরং এই অন্তঃসংগ্রামের ফলেই তিনি এই কথাটি প্রচার করিতে আরম্ভ করিলেন যে, মানবাত্মার অন্তর্দৃষ্টিও প্রেমের সম্মুখে অদৃষ্টের কোনোই প্রভাব নাই ও থাকিতে পারে না। মেটারলিঙ্কীয় ভাবজগতে এই পরিবর্তনের ফলে তাহার নাটকীয় ধারণাও পরিবর্তিত হইয়া গেল। প্রথমযুগের ট্র্যাজেডি প্রতিষ্ঠিত হইয়াছিল নিয়তির সম্মুখে মানবাত্মার ভীতি ও অসহায়তার মধ্যে, এবার মানবাত্মার শক্তিবোধের ও প্রেমের অপরাজেয় মহিমার ক্ষেত্রে আসিয়া ট্র্যাজেডি দেখা দিল। মানবাত্মার শক্তি-বোধ, তাহার প্রেমবোধ ও নৈতিক বোধ জাহাকে যে-দিকে আকর্ষণ করিতে চায়, বিশ্বনীতি ও বিশ্ববিধান সেই পথে নিয়তির রূপ ধরিয়া সঙ্ঘাত ও বেদনার স্বষ্টি করিরা বসিল । জম্বজেল নাটকখানি এই সঙ্ঘাত ও বেদনাকেই প্রকাশ করিয়া দেখাইয়াছে । (জ) বাস্তবলোকে রহস্তবোধের অপসারণের সঙ্গে-সঙ্গেই, অন্ততঃপক্ষে রহস্তভীতির অপসারণ ও মানবীয় শক্তির উপর প্রবল বিশ্বাসের আবির্তীবের সঙ্গে-সজেই মেটারলিঙ্ক কে বাস্তৰ জগতের দিকে বাহির হইয়া আসিতে দেখি । এতকাল মেটারলিঙ্কীয় নাটকের ভাববস্তু 8ፃR ট্র্যাজেডিকে একটা নিদারুণ নিয়তির সহিত জীবন ও প্রেমের অনিবার্ধ্য সঙ্ঘাত বলিয়াই মেটারলিঙ্ক দেখিয়া আসিতেছিলেন, কিন্তু যে মুহূর্ভে নিয়তিকে মানবজ্ঞানেরই অভাব ও অপরিণতি-মাত্র বলিয়া দেখিলেন সেই মুহূৰ্বেই মেটারলিঙ্ক জীবনকে একটা উচ্চতর নৈতিক-সমস্ত বঞ্চিয়৷ মনে করিতে বাধ্য হইলেন। তাই দেখিতে পাই যে, পরবর্তী মেটারলিঙ্কীয় নাটক অজ্ঞাত রহস্য-ভীতিকে বর্জন করিয়া জীবনে প্রেমের সহিত অজ্ঞান ও স্বাধপর বৃত্তির সংগ্রামটিকে দেখাইতে আরম্ভ করিয়াছেন, এবং জীবনে সাহস ও বিশ্বাসের আবির্ভাব হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই মেটারলিঙ্কীয় নাটক অস্তলোকের স্বপ্নময় ভাব ছাড়া, অন্ধকার এবং জ্যোৎস্নালোকের রহস্তকে বিদায় দিয়া বাস্তবজীবনের স্বম্পষ্ট স্বৰ্য্যালোকে ও উন্মুক্ত হওয়ার মধ্যে, এই সমাজ ও সংসারের বিচিত্র আবর্তের মধ্যে, মানবাত্মার উচ্চতর নৈতিক সংগ্রামটিকে জাকির দেখাইতে আরম্ভ করিয়াছেন। তাই এখানে ট্যাজেডি আবার আর-একটি রূপ লইয়া দেখা দিয়াছে, এখানে ট্র্যাজেডি একটি ব্যক্তির প্রেম ও কল্যাণ-বোধের সহিত অপর আর-একটি ব্যক্তির প্রেম ও কল্যাণবোধের প্রতিযোগিতার মধ্যেই জন্মলাভ করিয়াছে। ছুটি অস্তুরই পরস্পরের ভালোবাসায় ব্যাকুল হইয়া আপনার অঙ্গরের সৰ্ব্বস্ব যে অপরকে দিয়া নিঃশব্দে নিজের সকল ব্যথাকে বলি দিয়া চলিয়া যাইতে প্রস্তুত হয়, ইহাকে প্রতিযোগিতা বলিলে প্রেমের মর্য্যাদা নষ্ট করা হয় । অন্তরতম প্রেমেরই প্রেরণায় এই ষে আত্মবলি, ইহার মধ্যে আনন্দ আছে নিশ্চয়ই, কিন্তু আত্মার এই মহিমময় বিজয়ের মধ্যে যে ত্যাগের একটি তীব্রনিবিড় ব্যথা আছে তাছাই যে মানৰ জীবনের শ্রেষ্ঠতম ট্র্যাজেডির উপাদান তাহাতে সন্দেহ নাই। মেটারলিঙ্ক এই ট্র্যাজেডিকেই ‘মেঘাপসরণে যে অতি চমৎকারভাবে দেখাইয়াছেন তাহা পাঠকমাত্রেই লক্ষ্য করিয়া থাকিবেন । মেটারলিঙ্কীয় নাট্যবস্তুর সীমা প্রথম যুগের রহস্তনাট্যের কথা বাদ দিয়া আমরা ‘এগ্লাভেন সেলসেট’ হইতে ‘মেঘাপসরণ পৰ্য্যস্ত যে নাটকগুলি দেখিতে পাই তাহার বিষয়বস্তর দিকে চাহিঙ্গে