পাতা:প্রবাসী (পঞ্চবিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৮৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

"や কিছুদিন হইতে তাহার মনে হইতেছিলযে এমন-একটা মিথ্যার চোরাবালির মধ্যে সে আর কিছুতেই আপনাকে বঁাচাইয়া রাখিতে পারিবে না । কিন্তু হয়ত তাহার আজিকার এই গন্তব্য-পথে এমন নির্ভরতা সে পাইবে না, যাহাকে ভর করিয়া সে যেমনটি ছিল, তেমনটি থাকিতে পরিবে। কিন্তু এই অকারণ লুদ্ধতায় ষে আত্মপরিচয় লুকাইয়া রাখিতে চায়, সে গৌরবের নামে আপনার মহামূল্য সম্পদটাই হারাইয়া ফেলে। জাতির গায়ে কোনো দুৰ্গন্ধ নাই। দুৰ্গন্ধ—সে কেবল আচারব্যবহার ও কৰ্ম্মের দোষে । তাহার মনে আপনার জাতিটার উপর যখন একটু সহানুভূতির ভাব আসিতেছিল তখন একটা করুণ আনন্দের স্বর প্রাণের মাঝে বাজিয় তাহার চিত্তের সমস্ত অন্ধকার ও নিরানন্দকে ঠেলিয়া ফেলিয়া জীবনের সত্যকার পরিচয় পাইবার বাসনাকে সার্থক করিয়া তুলিতেছিল। অন্তরে এইরূপ তুমুল ঝড় তুলিয়, কখনো উৎসাহে, কখনো অবসাদে টলিতে টলিতে সে নবীনদের গ্রামে চাদপাড়ায় আসিম্বা উপস্থিত হইল । * "একটি পুষ্করিণীর ধারে উপস্থিত হইয়া সে দেখিল, দুইটি বালক ছিপ লইয়া মাছ ধরিতেছে। কানাই জিজ্ঞাসা করিল, “নবীন-বাঙ্গীর বাড়ী কোন দিকে ?” ছেলে দুইটি কিছুক্ষণ তাহার দিকে একদৃষ্টে তাকাইয়া রছিল। পরে একটি বালক জিজ্ঞাসা করিল, “তুমি কি জমিদারের লোক ?” কানাই বলিল “ই ।” বালক বলিল, “সে ষে বাগদী-পাড়ায়। ঐ ব্যদিকের রাস্ত ধ’রে যাও।” - “কত পথ হবে ?” “কত পথ জার হবে—যুগীপাড়া ছাড়ালেই ত বাগদীপাড়া গ কানাইলাল অশ্বের মুখ বামদিকে ঘুরাইয়া দিল এবং মৃদুগতিতে চলিতে লাগিল। ক্রমে তাহার গতি আরও মন্থর হইয়া আসিল । সে ধেন তাহার নিজের ঐশ্বৰ্য্য নিজেই পুষ্ঠিত করিয়া শূন্যভাণ্ডারের নগ্নমূৰ্ত্তি দেখিতে চলিয়াছে। সে তখনও ভালো বুঝিতে পারিতেছিল না যে, কোন ক্ষীণ লালসার মোহে সে আপনার জয়-জী হরণ প্রবাসী—কাৰ্ত্তিক, ১৩৩২ [ २०* छांश, २ब्र १७ कब्रांटकहे लकौ-वै बनिघ्ना भएन कब्रिप्ङाइ ! किरू उधू স্বপ্নের মতন একটা আভাস কিছুদিন হইতে তাহার মনের মধ্যে জাগিয়া উঠিতেছিল যে, তাহার এই স্থখ-শাস্তির অন্তরালে একটু সত্যের কন্টক গভীর অবসাদে যেন লুকাইয়া আছে, তাহা একদিন-না-একদিন মৰ্ম্মান্তিক হইয়া তাহাকে বিদ্ধ করিবেই। তাই সে তাহার স্বর্থ-লালসা পরিত্যাগ করিয়া দুঃখের সহিত প্ৰরিচয় করিতে អ៊ុំহৃদয়ে এমন ব্যগ্র হইয়া ছুটিয়াছে। সে যখন বাগদীপাড়ায় আসিল, তখন বেলা মাথার উপর । সে প্রথমত পরাণ-বাগদী-নামক একব্যক্তির বাড়ীতে উপস্থিত হইল । কোম্পানীর লোক ভাবিয়া পরাণ শশব্যন্তে একখানি থাটিয়া টানিয়া আনিয়া তাহাকে বসিতে দিল এবং নমস্কার করিয়া কিছুদূরে যাইয়া সরিয়া দাড়াইল । কানাই কহিল, “দাড়ালে কেন ? বসে৷ ” পরাণ না বসিয়া দাওয়ার উপরে উঠিয়া একছিলিম তামাক সাজিল এবং একটুকুর কলার পাতা আনিয়া কলকেট। তাহার সম্মুধে ধরিল। কানাই কহিল, “আমি তামাক থাইমৃে ।” পরাণ তখন আপনার ডাবী ছকাটিতে কলকে পরাইয়া কানাইলালের সম্মুখে বসিয়া ধুম উদগীরণ করিতে লাগিল। সে কহিল, “আপনারা ?” কানাই বলিল, “আমরা এই তোমাদেরই মতন মান্থব चांद्र दि !” পরাণ সঙ্কুচিত হইয়া কহিল, “আমাদের মতন—বলেন কি মশাই ? আমরা পশুরও অধম। আপনার সব দেব তা-লোক । তু বামুন, কি আর কিছু-জানবার মন ক’রে কথাটা বলেছিলাম।” কানাই কহিল, “হবে একটা-কিছু। তোমরা লেখাপড়া শেখে। না কেন ?” পরাণ হাসিয়া কহিল,"নেকাপড় শিখতে কি বিধেতা আমাদের পাঠিয়েছে ? ওসব ভদর-নেকের কাজ।” কানাই বলিল, “বিধাত কা’কেও "তুমি এ করবে— তুমি ও করবে, ব’লে পাঠাননি ! লেখাপড়া শিখতে কারও মান নেই । তোমাদের জাতের মধ্যে কি কেউ লেখাপড়া শেখে না ?”