পাতা:প্রবাসী (পঞ্চবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

W3 প্রবাসী—বৈশাখ, ১৩৩২ আকাশকে লুপ্ত করে অসীমকে অগোচর করে দেয়। অভ্যাসের মোহ মনের সেই কুয়াশ। অনিৰ্ব্বচনীয়কে সে আড়াল করে, বিস্ময় রসকে শুকিয়ে ফেলে। তাতে সত্য পদার্থের গুরুত্ব কমে না, তার গৌরব কমে যায়। আমাদের মন তখন সত্যের অভ্যর্থনা করতে পারে না। বিস্ময় হচ্ছে দত্যের অভ্যর্থনা । ডাক্তার বলে প্রতিদিন একই অভ্যস্ত খাওয়া পরিপাকের পক্ষে অমুকুল নয়। ভোজ্যসম্বন্ধে রসনার বিস্ময় না থাকৃলে দেহ তাকে গ্রহণ করতে আলস্য করে। শিশু ছাত্রন্থের একই ক্লাসে একই সময়ে একই বিষয় শিক্ষার পুনরাবৃত্তি করানোতেই তাদের শিক্ষার আগ্রহ ঘুচিয়ে দেওয়া হয়। t প্রাণের স্বভাবই চির-উৎসুক। প্রকৃতি তাকে ক্ষণে ক্ষণে আকস্মিকের স্পর্শে চঞ্চল ক’রে রাখে। এমন কি, এই আকস্মিক যদি দুঃখ আকারেও আসে তাতেও চিত্তের বড় রকমের উদ্বোধন ঘটে। সীমার অতীত যা, আকস্মিক হচ্ছে তারই দূত, অভাবনাঁধের বার্তা নিয়ে সে আসে, চেতনাকে জড়ত্ব থেকে মুক্তি দেয়। আমাদের দেশে তীর্থযাত্রা ধৰ্ম্ম সাধনার একটি প্রধান অঙ্গ। দেবতাকে যখন অভ্যাসের পর্দায় ঘিরে রাখে তখন আমরা সেই পর্দাকেই পূজা করি। যাদের AAAAAASA SAASAASSAAAASA SAASAASAASAA [ ২৫শ ভাগ,১ম খণ্ড, মনগ্ৰভাবতই বিষয়ী ধর্শ্বচর্চাতেও ধারা বস্তুকে বেশি’ দাম দেয়, তারা দেবতার চেয়ে পর্দাকেই বেশি শ্রদ্ধা করে } তীর্থযাত্রায় সেই পর্দা ঠেলে দিয়ে মন পথে বেরিয়ে পড়ে। তখন প্রতিদিনের সীমাবদ্ধ জানাকে চিরদিনের অসীম অজানার সঙ্গে মিলিয়ে দেখা সহজ হয়। প্রতিদিন.. ও চিরদিনের সঙ্গম স্থলেই সত্যের মন্দির। এবারে তাই পথের দুই পাশে চাইতে চাইতে বেরিয়ে ছিলুম। অভ্যাসের জগতে যাকে দেখেও মেধিনে, মন । জেগে উঠে বললে সেই চির-অপরিচিত হয়তো কোথায় অজানা ফুলের মালা প’রে অজানা তারার রাত্রে দেখা দেবে। অভ্যাস বলে ওঠে, “সে নেইগো নেই, সে মরীচিকা।” গণ্ডীর বাইরেকার বিশ্ব বলে, “আছে বই কি, তাকিয়ে দেখ। দেখা হ’য়ে চুকেছে মনে করে দেখা বন্ধ কর, তাইত দেখা হয় না ।” তখন ক্ষণে ক্ষণে মনে হয় “দেখা হ’ল বুঝি।” পথিকের প্রাণের উদ্বোধন সেই, কি-জানি। সেই কি-জনির উদ্দেশে গান লিখেছি। জীবনের সকল নৈরাপ্ত, সকল বিড়ম্বন, সকল তুচ্ছতার অবসাদ অতিক্রম করেও সেই কি-জনির আভাস আলোতে ছায়াতে ঝলমল ক’রে উঠছে পথিক তারই চমক নেবার জন্তে তার জানা ঘরের কোণ ফেলে পথে বেরিয়েছে। ২৪ ডিসেম্বর ১৯২৭ বুয়েনোস্ আইরেস ওগো আমার না-পাওয়াগো, অরুণ আভা তুমি, আঁধার তীরে স্বপনকে মোর কখন যে যাও চুমি । পাওয়া আমার নীড়ের পাখী । আধেক ঘুমে ওঠে ডাকি তোমার ছোয়ায় বুঝি । লক্ষ্যহারা ডানা মেলে যায় সে উড়ে কুলায় ফেলে, অকারণে ফেরে আকাশ খুজি । ওগো আমার না-পাওয়াগো, সন্ধ্যা মেঘের ফঁাকে পাওয়ারে মোর ডাকো তুমি করুণ আলোর ডাকে।