পাতা:প্রবাসী (পঞ্চবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৭৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩য় সংখ্যা ] TAMAMMS AAASASAAA AAAA AAAACMS TMAMA AMMAAA AAAA AAAA S AA AAS খুবই ভালো হয় । জলপথে রোগী নিয়ে একাকী যাওয়া ! সুমি বলতে সাহস পাইনি। কিন্তু আপনার অস্ববিধ হবে না ত ? আপনার মা কি সন্মতি দেবেন ? আপনার না কোথায় যাচ্ছিলেন * কানাই একটি দীর্ঘনিশ্বাস চাপিয়া লইয়। কহিল, “আমার মা তেমন নন। তার কাছে আপন-পর ভেদ নেই ; বরং আপনাদের এই অসময়ে সাহায্য করতে না পারলে তিনি দুঃখিত হবেন। গণপতি কছিলেন, “সে আপনার ব্যবহারেই বুঝতে পেরেছি । সস্তান দেখলেই বোঝা যায় জননী কেমন !” কানাইলাল তখন একখানি ঘোড়ার গাড়ী কৃরিয়া সকলকে লইয়া নৌকায় যাইয়া উঠিল । এই বয়সেও যে মহেশ্বরীর স্নেঃাঞ্চলের নিম্নে সেই আড়াই বৎসবের বালকটির মতো পরম স্থথে বাস করিতেছিল, সে আজ সম্পূর্ণ অপরিচিত স্থানে অপরিচিত লোকের সঙ্গে কোন সুদূব দেশে ভাসিয়া চলিল । কানাইলাল নিঃসম্বল। টাকা-কড়ি সমস্তই মহেশ্বরীর fনকটে ছিল । টাকা পয়সা হাতে থাকিলেও সে হয়ত দেশেব বাড়ীতে ফিরিয়া যাইত না । মহেশ্বরী একদিন বলিয়াছিলেন যে,—সে বাগদীর ছেলে, তাহার বাড়ী উত্তরপাড়ায় । সে-কথাটা তখন তাহার নিকট যত ছোটো বলিয়া ঠেকিয়াছিল, এখন তাহা তত বৃহৎ হইয়া দাড়াইল । স্নেহের বন্ধনে এমন-একটু ফাক না থাকিলে, কে কবে সন্তানকে ফেলিয়া চলিয়া যাইতে পারে ? কানাইলাল ভাই কোনো ইতস্তত না করিয়াই নৌকায় উঠিল । তখন রাত্রি হইয়াছে । কানাইলাল নৌকার ছাদের উপর বসিয়াছিল। এই মাতৃহারা বালকের দুঃখে আকাশের তারাগুলি যেন সেদিন অত্যন্ত নিম্প্রভ হইয়াই দেখা দিয়াছিল। তাহার বেদনাময় প্রাণের স্বরে ও রঙে যেন সমস্ত জগতখানি অস্থরঞ্জিত হইয়া অত্যন্ত বিষঃমূৰ্ত্তি ধারণ করিয়াছিল। কানাইলাল যতই মহেশ্বরীকে দূরে ঠেলিয়া ফেলিয়া দিতে চাহিতেছিল, ততই তাহার নিৰ্ম্মল স্নেহের একটা নিগুঢ় প্রতিধ্বনি তাহার অন্তরে ধ্বনিত হইয়া দুঃখটাকে অতি তীব্র করিয়া তুলিতেছিল ; বামুন-বাগদী S)రిసి এবং তfহার চঞ্চল মনকে সংযমের দ্বারা বাধিয়া মু-ধারা অস্ত্রে চক্ষের ছানিটা তুলিয়া ফেলিয়া দিতে পারিলে, মহেশ্বরীর প্রকৃত রূপ দৃষ্ট হইবে, এইরূপই যেন কে ইঙ্গিত করিতেছিল। বলাই শৈলবালার পেটের সস্তান ; যেস্নেহ সে-মাতৃস্নেহুকেও পরাভূত করিয়াছে, তাহাকে ভুলিব বলিলে কি ভুলিতে পারা যায় ? সে ছাদের উপর শুষ্টয়া পড়িগণ ভাবিতে লাগিল,—ঘুমাইয়া পড়িলে কোমল হস্তের বেষ্টনে বক্ষের মধ্যে আর বুঝি কেহ তাহাকে নিরাপদে রাখিবে না সে কোথায় চলিয়াছে— কেন চলিয়াছে—আর বুঝি কেহ তাহাকে জিজ্ঞাসা করিবে না । যে-সময়টা ভাবমারও অস্ত থাকে না, কোনো পথও খুজিয়া পাওয়া যায় না, সে-সময় বিবেক ও বুদ্ধি অতি দূরে গিয়া সরিয়া দাড়ায় এবং নিজেদের ঘরের দুর্দশ দেখিয়া নিজেরাই হাসিতে থাকে। কানাইলাল বিবেকবুদ্ধি হারাইয়া, স্রোতের তৃণ যেমন ভাসিয়া যায়, কোথায় যায়, কেন যায়, জানে না, সেইরূপই সে ভাসিয়া চলিয়াছে। তাহার অস্তরের মধ্যে অভিমান, দুঃখ ও ক্ষোভ এমন ভরপুর হইয়া উঠিয়াছিল যে, তথায় তিল রাখিবারও স্থান ছিল না, অথচ সে যে-দিকে চক্ষু ফিরায়, দেখিতে পায়, সমস্ত অন্তরটা জুড়িয়াই তাহীর সেই মহেশ্বরী মা ! সে অচৈতন্য হুইয়া ছাদের উপর পড়িয়া রহিল । নৌকার মধ্যে নলিনী জিজ্ঞাসা করিল, “বাবা! বারটি কিছু খেলেন না ? খাবার রয়েছে—আপনাদের দেবো ?” গণপতি ব্যস্তভাবে কহিলেন, “তাইত, সেকথা দেখি ভূলেই গেছি! কানাইবাবু " ছুই-চারিবার ডাকিতে কানাইলাল উত্তর করিল। গণপতি কহিল, “সঙ্গে কিছু জলখাবার রয়েছে, একবার নীচে আম্বন না ?” কানাই বলিল, আমার শরীরটা তত ভালো নেই, · রাত্রে আর কিছু খাবো না।” গণপতি বাহিরে আসিলেন ; এবং কানাইলালকে কিছু খাওয়াইবার জন্য বারম্বার অনুরোধ করিতে লাগিলেন। কানাই বলিল, “আপনার ব্যস্ত হবেন না, আজ আর আমার জলবিন্দুও খেতে ইচ্ছা নেই।”