পাতা:প্রবাসী (পঞ্চবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩য় সংখ্যা ] বামুন-বাগদী . woSX স্ববিধা হইল। গোকুলকে সঙ্গে লইয়। সে প্রত্যহ নানা স্থানে ঘুরিয়া আদিত। কিন্তু যাহাকে সে চায়, তাহাকে র্কে যেন অত্যন্ত গোপন-দেশে লুকাইয়া রাখিয়াছে ! বালকের হৃদয়-ভরা আগ্রহের প্রতি দৃষ্টি দেওয়ার কোনো আবশ্যকতাই সে বোধ করিতেছে না। সে প্রত্যহ কত আশা লইয়া বাহির হইত ? অাজ বুঝি তাহার কানাই-দাকে আনিয়া তা’র বড়-মার হাতে দিতে পরিবে ।” তাহার সে আশ। পূর্ণ হইত না। শুধু একট। দীর্ঘশ্বাস বুকে বহন করিয়া লষ্টয়া সে ঘরে ফিরিত। কানাইলালের সহিত বিচ্ছিন্ন হইবার পর হইতে গঙ্গাস্নানের লালসাট। মহেশ্বরীর অস্তরে অত্যন্ত বলবতী হইয়া উঠিয়াছিল। একটি দিনও ফাক যাইত না । তিনি প্রত্যহ বলাইকে সঙ্গে লইয়। স্নানে যাইতেন । কিন্তু ঘাটে উপস্থিত হইলে স্নান-আহ্নিক ভুলিয়া যাইতেন। শুধু পুলের উপব দিয়া যে-সকল লোক যাতায়াত করিত, তাহাদের উপর তাহার উদ্ভাস্ত চক্ষু-দুটি স্থাপিত করিয়া তিনি সোপানের উপর নীরবে বসিয়া থাকিতেন। বেলা বাড়িয়া যাইত, হাঁস থাকিত না । কত লোকে তাহাকে পাগল ভাবিয়া হাসিত—জ্ঞান নাই—প্ৰাণ-পুত্তলির অপেক্ষায় তাহার মন ও প্রাণ তন্ময় হইয়া থাকিত । এইরূপে সুৰ্য্যদেব যখন মাথার উপর উঠিতেন, তখন তিনি শূন্ত বক্ষ লইয়া গৃহে ফিরিতেন। এদিকে গোকুল আসিয়া উপস্থিত হইলে তারিণীচরণও দিন কতক কানাইলালের খুব অনুসন্ধান করিল। কেননা সেই বাগদী ছোড়াট। তখনও যদি আত্মগোপনের ইচ্ছা ত্যাগ করিয়া প্রকাশিত হইয়া পড়ে, তবে তাহার সেতুবন্ধ যাওয়ার আর কোনো বাধা হয় না। কিন্তু যখন তেমন কোনো স্বলক্ষণ সে দেখিতে পাইল না, অথবা মহেশ্বরীর হঠাৎ ঘরে ফিরিবারও সম্ভাবনা বুঝিল না, তখন সে স্কুঞ্জমনে দেশে প্রত্যাগমন করিল। সপ্তম পরিচ্ছেদ কানাইলালের এখন নানা প্রয়োজনের সহিত সম্পর্ক পাতাইতে হইতেছে। স্বর্ণ-মুপ্তির কক্ষ ছাড়িয়া সে সহসা এমন-এক শূন্ত স্থানে আসিয়া ছিটুকাইয়া পড়িয়াছে যে, cगशांटन चाशंई नाई-श्रार्थञ्च नाहे-बज-छब्रन महेि ! আছে শুধু মুখ, শান্তি, আরাম ও বিরামের অন্ত্যেষ্টির বিপুল আয়োজন—মান-অভিমানের তাড়ন, আর মৰ্মভেদী বেদন ও হাহাকার । " গণপতির ঘাটালের গৃহে উপস্থিত হইলে নলিনীসকাল-সকাল রায় বার সারিয়া গণপতি ও কানাইলালের জন্য ভাত বাড়িয়া কানাইলালকে ডাকিতে আসিল । কানাই বাহিরের ঘরে একখানি জীর্ণ তক্তপোষের উপর শুইয়া পড়িয় তাহার বিপ্লব-শ্রাস্ত হৃদয়ুটি শাস্ত করিবার চেষ্টা করিতেছিল । নলিনী আসিয়া তাহাকে ভাত খাইবার জন্য ডাকিয়া যখন তাহার নির্জন চিন্তার মধ্যে একটা গোলমাল তুলিয়া বসিল, তখন সে সহসা মুখ ফিরাইয়া একবার জিজ্ঞাসা করিল। “এরই মধ্যে রান্না হ’য়ে গেল ?” নলিনী কহিল “ছ!” “দিয়েছ নাকি ?” “ੋ יין “কোথায় ?”

  • রান্নাঘরে । বাবাকে আর আপনাকে ৷”

কানাইলাল তাহার মুখ অন্যদিকে ফিরাইয়া লইল ; এবং কতদিনের একটা ক্ষীণ স্মৃতি মনের মধ্যে সহসী ফুটাইয়া তুলিয়া তাহারই অহুসরণে প্রবৃত্ত হইল। নলিনী। ডাকে যে যেন ঝটুপটু উঠিয়া যাইয়া খাইতে বসিতে পারে না। তাহার এই ঝকৃমারির জীবনে যেন অনেক কথাই ভাবিয়া লইবার আছে। মহেশ্বরী তাহাকে নিজের হাতে মাখিয়া-জুখিয়া খাওয়াইয়া দিলেও সে তখন তাহাদের রান্নাঘরে ঢুকিবার অধিকার পায় নাই। তার পর সে-বার শাস্তির শ্বশুরালয়ে তাহার উচ্ছিষ্ট লইয়া একটা লড়াই উঠিয়া, সে-সংসারে তাহার অধিকারের যে মাত্রা নির্দেশ করিয়া দিয়াছিল, কানাইলালের হঠাৎ মনে উঠিল, সেমাত্রাট বুঝি বিশ্ব-সংসারের সহিত একই সম্বন্ধে জড়িত । গণপতির না জানিলে না শুনিলে কি হয়, সে লুকোচুরি থেলিয়া শয়তানের রঙে আপনাকে চিত্রিত করিতে পরিবে না। তাহাকে যখন বুঝাইয়া দিবার কেহ নাই,—সে কোনখানে পা ফেলিবে—কোনখানে ফেলিবে