পাতা:প্রবাসী (পঞ্চবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪র্থ সংখ্যা ] মানসিক আধ্যাত্মিক সাধনার দ্বারাই মানবমাতা আপন মৰ্য্যাদা লাভ করেন, এইটেই বড় কথা। কালিদাসের কয়টি কাব্যের মধ্যে সেই মৰ্য্যাদার গৌরব বর্ণিত দেখি । নারীর দুইটি রূপ, একটি মাতৃরূপ, অগুটি প্রেয়সীরূপ। মাতৃরূপে নারীর একটি সাধনা আছে সে কথা পূৰ্ব্বেই বলেছি। এই সাধনায় সস্তানের নয়, স্বসন্তানের স্বষ্টি । সেই স্বসন্তান সংখ্যাপূরণ কবে না, মানবসংসারে পাপকে অভাবপূর্ণতাকে জয় করে। প্রেয়সীরূপে তার সাধনায় পুরুষের সর্বপ্রকার উৎকর্ষ-চেষ্টাকে প্রাণবান করে’ তোলে। যে গুণের দ্বারা তা সিদ্ধ হয় পূৰ্ব্বেই বলেছি সে হচ্চে মাধুর্ধ্য। একথাও বলেছি ভারতবর্ষ এই মাধুর্য্যকে শক্তিই বলে। আনন্দলহরী নামে একটি কাব্য শঙ্করাচার্থ্যের নামে প্রচলিত। তাতে র্যার স্তবগান আছে তিনি হচ্চেন বিশ্বের মর্শগত নারীশক্তি। সেই শক্তি আনন্দ দেন। একদিকে বিশ্বকে যেমন আমরা জানি, ব্যবহার করি, অন্তদিকে তেমনি বিশ্বের সঙ্গে আমাদের অহেতুক তৃপ্তির যোগ। বিশ্বকে আমরা জানি, তার কারণ, বিশ্বে সত্যের আবির্ভাব। বিশ্বে আমাদের তৃপ্তি, তার কারণ, বিশ্ব আনন্দের প্রকাশ। ঋষিরা বলেছেন এই বিশ্বব্যাপী আনন্দেরই নানা মাত্রা জীবসকল নানা উপলক্ষ্যে ভোগ করে। “কোহেবান্তাৎ কঃ প্রাণ্যাৎ যদেষ আকাশ আনন্দো ন তাৎ, কারো প্রাণচেষ্টার উৎসাহ মাত্র থাকৃত না যদি আকাশ পূর্ণ করে এই আনন্দ না wrotsa I ow of cofa Intellectual Beauty নাম দিয়ে তার কবিতায় যার স্তব করেছেন তার সঙ্গে এই সৰ্ব্বব্যাপী আনন্দের ঐক্য দেখি। এই বিশ্বগত আনন্দকেই আনন্দলহরীর কবি নারীভাবে দেখেছেন । অর্থাৎ তার মতে মানবসমাজে এই আনন্দশক্তির বিশেষ প্রকাশ নারীপ্রকৃতিতে । এই প্রকাশকে আমরা বলি মাধুৰ্য্য। মাধুর্ঘ্য বলতে কেউ যেন লালিত্য না বোঝেন। তার সঙ্গে ধৈৰ্য্যত্যাগসংযমযুক্ত চারিত্রবল আছে ; সহজ बूकि, गश्च नभूभा, नब्रश, फ़िखाञ्च शबशप्ब्र डांप्द e चांनग्न-लङ्ऱौ। (Պ3թ ভঙ্গীতে ঐ প্রভৃতি নানা গুণের মিশোল জাছে।. কিন্তু এর গৃঢ় কেজস্থলে আছে আনন্দ বা আলোর মত चखांबउहे चांगनाटक निबउ विकौ4 (radiate) क्छ, দান করে । - প্রেয়সীস্বরূপিণী নারীর এই আনন্দশক্তিকে পুরুষ লোভের দ্বারা আপন ব্যক্তিগত ভোগের পথেই আজি পৰ্য্যস্ত বহুলপরিমাণে বিক্ষিপ্ত করেছে, বিকৃত করেছে, তাকে বিষয়সম্পত্তির মত নিজের ঈর্ষাবেষ্টিত সঙ্কীর্ণ ব্যবহারের মধ্যে বদ্ধ করেছে। তাতে নারীও নিজের অন্তরে আপন যথার্থ শক্তির পূর্ণ গৌরব উপলব্ধি করতে বাধা পায়। সামান্ত সীমার মধ্যে মনোরঞ্জনের লীলায় পদে পদে তার ব্যক্তিস্বরূপের মধ্যাদাহানি ঘটেচে। তাই মানবসমাজের বৃহৎ ক্ষেত্রে নারী আপন প্রকৃত আসন পায়নি বলেই আজ সে আত্মমৰ্য্যাদার আশায় পৌরুষলাভের দুরাকাঙ্ক্ষায় প্রবৃত্ত। অন্তঃপুরের প্রাচীর থেকে বাইরে চলে আসার দ্বারায় নারীর মুক্তি নয়। তার মুক্তি এমন একটি সমাজে যেখানে তার নারীশক্তি, তার আনন্দশক্তি, আপন উচ্চতম প্রশস্ততম অধিকার সর্বত্র লাভ করতে পারে। পুরুষ যেমন আপন ব্যবসায় অতিক্রম করেও বিশ্বক্ষেত্রে নিজেকে ব্যক্ত করবার অবকাশ পেয়েছে, তেমনি যখন গৃহস্থালীর বাইরেও সমাজস্থষ্টিকাৰ্য্যে নারী আপন বিশেষ শক্তির ব্যবহারে বাধা না পাবে, তখন মানবসংসারে স্ত্রীপুরুষের যথার্থ যোগ হতে পারবে। পুরাকাল হ’তে আজ পর্য্যন্ত যে-বিবাহ প্রথা চলে আসচে তাতে স্ত্রীপুরুষের সেই পূর্ণ যোগ বাধাগ্রস্ত, আর সেই জন্তেই সমাজে নারীশক্তির প্রভূত অপব্যয় ও বিকার ; সেই জন্তেই পুরুষ নারীকে বাধতে গিয়ে তার দ্বারা নিজের দৃঢ়তম বন্ধন স্বষ্টি করেছে। বিবাহ এখনো সকল দেশেই নূ্যনাধিক পরিমাণে নারীকে বন্দী ক’বে রাখবার পিঞ্জর । তার পাহারাওয়ালার পুরুষ-প্রভাবের তকমা পরা। তাই সকল সমাজেই নারী আপন পরিপূর্ণতার দ্বারা সমাজকে যে-ঐশ্বর্য দিতে পারত ত৷ দিতে পারচে না, আর এই অভাবের দৈন্তভার সকল সমাজই বহন করে চলেছে ।