পাতা:প্রবাসী (পঞ্চবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪র্থ সংখ্যা ] তাহাতে কোন দোষ, ক্রটি, ভ্রম, প্রমাদ কখন ৪ লক্ষিত হয় নাই, এরূপ অপ্রকৃত কথা বলিবার কোন প্রয়োজন নাই— কোন মানুষ সম্বন্ধেই তাই বলা যায় না। ভুল ভ্রান্তি দোষ-ত্রুটি তাহার হইয়াছে । কিন্তু গদ্যে-পদ্যে লেখায়, বক্ত তায়, তিনি, লোকে কি বলিবে বা কি মনে করিবে, এষ্ট ভয়ে নিজের ভাব ও মত-বিশ্বাস প্রকাশ করিতে যৌবন কাল হইতেই ভীত হইতেন না । স্বাধীন-চিত্তত এবং নিজের মতপ্রকাশ সম্বন্ধে দৃঢ়তা ও নির্ভীকতা তাহার ছিল । আরও এই নিৰ্ভীকতা ছিল, যে, নিজের কথার ও কাজের ফলস্বরূপ দুঃখ ভাগী হইতে তিনি কখনও ভৗত ও পশ্চাৎপদ হইতেন না । নেতা হুইবার মত জ্ঞান বুদ্ধি বিবেচনা অনেকের থাকে, কিন্তু দায়িত্ব স্বীকার করিবার মত সাহস ও দৃঢ়তা না থাকায় তাহার নেতা হইতে পারে না। দেশবন্ধু দায় ঝুকি কখন ঝাড়িয়া ফেলিতে চাহিতেন না। প্রভুত্বপ্রিয় তিনি ছিলেন বটে, এক-নায়কত্ব তাহার মজাগত ছিল বটে ; কিন্তু ঐরুপ পদেব দায়িত্ব এবং দুঃখ৪ তিনি স্বীকার করিয়া নিজের দৃঢ়ভ, সাংস ও সহিষ্ণুতা সপ্রমাণ করিয়া গিয়াছেন। ইংরেজ জাতিকে পৃথিবীর বৃহত্তম সাম্রাজ্য চালাইতে হয় । সুতরাং তাহাদের মধ্যে চাPলবাজীতে সুদক্ষ কৌশলী লোক অনেক গড়িয়া উঠিয়াছে এবং বিদ্যমান আছে, ইহা না বলিলেও চলে। বড় সাম্রাজ্যের এমন-কি, নিজনিজ প্রদেশের সব কাজ চালাইবার অধিকার ভারতীয়দের নাই। তাহা সত্ত্বেও কৌশলে ভারতীয়দের মধ্যে ইংরেজদের সমকক্ষতা করিবার লোক জন্মিয়াছে। বাংলা দেশে আশুতোষ মুখোপাধ্যায় তাহার দৃষ্টান্ত দেখাইয়া গিয়াছেন। দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ আর-এক দৃষ্টান্ত। নানা-প্রকার লোভ দেখাইবার, ভয় দেখাইবার ও ঘুম দিবার উপায় গবর্ণ মেন্টের হাতে আছে । তাহা সত্ত্বেও চিত্তরঞ্জন বঙ্গীয় ব্যবস্থাপক সভায় গবর্ণমেণ্ট কে বার-বার পরাজিত করিতে পারিয়াছিলেন। অবশ্য কেবল চা’লবাজী ও কৌশল দ্বারাই পরাজিত করিতে পারিয়াছিলেন বলিলে সত্য কথা বলা হইবে না। যাহারা গবর্ণমেণ্টের বিরুদ্ধে ভোট দিয়াছিলেন, তাহারা অনেকে স্বদেশ-প্রতি বশতই দিয়াছিলেন। আশুতোষ মুখোপাধ্যায় কিংবা চিত্তরঞ্জন দাশ ግ8= > ሣ বিবিধ প্রসঙ্গ—চিত্তরঞ্জন দাশের স্মৃতিরক্ষা ফও, @bアQ গবর্ণমেণ্ট কে বাগ-যুদ্ধে বা ভোট-যুদ্ধে পরাজিত করিয়াও প্রকৃত জয়লাভ কেন করিতে পারেন নাই, তাহার কারণ অনেক। একটা কারণ এই, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতাটা সম্পূর্ণরূপে ইংরেজের হাতে আছে । তাছা হইলেও দরিদ্রতম নিরক্ষর ' লোক হইতে শিক্ষিততম ও ধনবত্তম সমুদয় শ্রেণীর অধিকাংশ লোক কোন নেতার পক্ষ অবলম্বন করিলে গবর্ণ মেণ্টের প্রকৃত পরাজয় এবং দেশ-নায়কের প্রকৃত জয় অবশ্যম্ভাবী হুইবে । চিত্তরঞ্জন দাশ ব্রাহ্ম পিতা-মাতার সন্তান এবং ব্রাহ্মপরিবারে যেীবনের উন্মেষকাল পর্য্যস্ত লালিত-পালিত হইয়া বি-এ পাশ করিবার পর বিলাত গিয়াছিলেন । মতের স্বাধীনতার হাওয়ায় তিনি মানুষ হইয়াছিলেন। শ্ৰীযুক্ত বিপিনচন্দ্র পালের একটি লেখা হইতে জানিয়াছি, যখন চিত্তরঞ্জন বিলাত হইতে ফিরিয়া আসেন, তখন তিনি অজ্ঞেয়তাবাদী ছিলেন, কিন্তু তাহা সত্ত্বেও সাধারণ ব্রাহ্মসমাজের প্রচারক স্বগীয় নগেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় ব্রাহ্ম-পদ্ধতি-অনুসারে তাহার বিবাহ দিয়াছিলেন । বিপিন-বাবু আরও বলেন, অতঃপর অধ্যাপক ব্রজেন্দ্রনাথ শীলের উপদেশে চিত্তরঞ্জন ব্রাহ্মধৰ্ম্মে আন্তরিক আস্থাবান হন এবং অনেক বৎসর ভবানীপুর ব্রাহ্মসমাজের সভ্য ছিলেন। তাহার পর তিনি কয়েক বৎসর হইল বৈষ্ণব ধৰ্ম্ম অবলম্বন করেন। বৈষ্ণব কীৰ্ত্তন তাহার অতি প্রিয় ছিল । তাহার রসপিপাস্থ ও ভাবপ্রবণ হৃদয় তাহাকে এই দিকে লইয়া গিয়া থাকিবে । তাহার এইরূপ মত-পরিবর্তন-বিষয়ে ব্রাহ্মসমাজের সামাজিক বা অন্যবিধ কোন দায়িত্ব ছিল কি না, আমরা ঠিক অবগত নহি । - দেশবন্ধু স্বয়ং অসবর্ণ বিবাহ করিয়াছিলেন এবং সন্তানগণেরও অসবর্ণ বিবাহ দিয়া গিয়াছেন । র্তাহার ধৰ্ম্মমতের পরিবর্তন হইয়া থাকিলেও, সামাজিক বিষয়ে র্তাহার মত ব্রাহ্মসমাজের অনুরূপই বরাবর ছিল । বঙ্গীয় হিত-সাধনমণ্ডলীর এক কনফারেন্সে তিনি প্রকাপ্তভাবে বলিয়াও ছিলেন, ষে, তিনি সমাজসংস্কারের পক্ষপাতীই श्रोंcछ्न ! তিনি অসহায়া বিধবা ও অনাথ বালক-বালিকাদের