পাতা:প্রবাসী (পঞ্চবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Ctఏ8 যখন সামরিক আইন ঘোষিত হইবার কথা হয়, তখন প্রধানত: তাহারই চেষ্টায় তাহা হইতে পায় নাই। অধ্যাপক শ্ৰী স্বশীলকুমার রঞ্জ ১৮৬১ সালে তাহার জন্ম হয় । তিনি রেভারেও প্যারীমোহন রুদ্র মহাশয়ের একমাত্র পুত্র ছিলেন। আমরা বাল্যকালে যখন বাকুড়া জিলা-স্কুলের ছাত্র ছিলাম, তখন প্যারীমোহন রুদ্র মহাশয় কখন-কখন আমাদের শিক্ষক স্থানীয় ব্রাহ্মসমাজের প্রতিষ্ঠাতা ও আচাৰ্য্য কেদারনাথ কুলভী মহাশয়ের সহিত সাক্ষাৎ করিতে আসিতেন দেখিতাম। উভয়ের মধ্যে বন্ধুত্ব ছিল । তিনি ডাফ কলেজ হইতে এম্‌ এ পাস করিবার পর প্রথমে রেভিনিউ বোর্ডে দুই বৎসর চাকরী করেন। পরে ১৮৮৬ খৃষ্টাব্দে সেন্ট স্টীফেন্স কলেজে লেকৃচ্যারার হইয়৷ দিল্লী যান। এই কলেজেই তিনি জীবনের সমুদয় শক্তি ও অমুরাগের সহিত কাজ করিয়া গিয়াছেন। তিনি ১৮৯৯ খৃষ্টাবে ইহার ভাইস প্রিন্সিপাল নিযুক্ত হন। ১৯৯৬ সালে প্রবাসী—শ্রাবণ, ১৩৩২ [ ২৫শ ভাগ, ১ম খণ্ড তাহাকে ইহার গ্রিন্সিপ্যালের পদ দিবার প্রস্তাব হয়। যখন কেজি মিশন কর্তৃক এই কলেজ স্থাপিত হয়, তখন মিশনের কর্তৃপক্ষ গবর্ণমেণ্টের সহিত এই সৰ্ত্তে আবদ্ধ হন, যে, ইহার প্রিন্সিপ্যাল সৰ্ব্বদাই ইংরেজ হইবেন। রুত্ৰ মহাশয়কে অধ্যক্ষের পদ দিবার কপা হওয়ায় গবর্ণমেণ্ট, এই সত্ত্ব প্রত্যাহারে রাজী হন । বহুসংখ্যক ইউরোপীয় অধ্যাপকের মাথার উপর একজন বাঙালীকে স্থাপন করায় তখন কিছু উত্তেজনার স্বষ্টি হইয়াছিল, এবং অনেকেই ইহার ফল-সম্বন্ধে সন্দিহান ছিলেন । রুদ্র মহাশয়ও অনিচ্ছার সহিত, তাহার সহকৰ্ম্মী এণ্ডজ সাহেবের অনেক বলা কহার পর, এই কাঙ্গ লইয়াছিলেন । র্তাহার সহিত তাহার ইউরোপীয় সহকৰ্ম্মীদের বরাবরই খুব সদ্ভাব ছিল ; দেশী অধ্যাপকদের ত ছিলই । অথচ তিনি ইংরেজ অধ্যাপকদের হাতের পুতুল ছিলেন না ; তিনি যেমন শাস্ত ও ধৈর্য্যশীল ছিলেন, ভেম্নি দৃঢ়ও ছিলেন। ছাত্রদিগকে তিনি ভালবাসিতেন ও বিশ্বাস করিতেন ; অথচ তাহার ব্যবহারে দৃঢ়তার অভাব ছিল না। ছাত্রেরাও তাঙ্গকে ভালবাসিত ও বিশ্বাস করিত। সৰ্ব্বসাধারণে র্তাহার জলন্ত স্বদেশপ্রীতির কথা জানিত । এইসব কারণে র্তাহার কলেজের পর লোকের এরূপ শ্রদ্ধা ছিল, যে ১৯০৭, ১৯১৯, ১৯২০-২১ সালের উত্তেজনা ও সংক্ষোভের সময়েও, যখন প্রধানতঃ ইউরোপীয় অধ্যাপকদের দ্বারা চালিত অন্য অনেক কলেজে ছাত্র ও অধ্যাপকে মনোমালিন্ত ও সংঘর্ষ উপস্থিত হইয়াছিল, তখন, সেণ্ট ষ্টিফেন্স, কলেজে ছাত্র ও অধ্যাপকদের মধ্যে পরম্পরে বিশ্বাস টলে নাই। এই কলেজকে কেহ-কেহু “রাজভক্তি-হীন" মনে করিত বটে ; কিন্তু ইহা বস্তুতঃ ভারতীয় ও ইংরেজের মধ্যে সম্ভাব স্থাপন ও রক্ষার কাজই করিয়াছে । এই সমুদয় কৃতিত্বের মূলে, এবং অসহযোগ আন্দোলনের খুব প্রাদুর্ভাবের সময়ও যে কলেজ ভাঙিয়া যায় নাই তাহার মূলে, প্রধানতঃ ছিল প্রিন্সিপ্যাল রুত্রের ব্যক্তিত্ব। গবর্ণমেণ্টের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের সহিত সমুদয় সম্পর্ক ত্যাগ করা হইবে কি না, সে-বিষয়ে ক্ষত্র মহাশয় ছাত্র ও অধ্যাপকগণকে কলেজেই পুরাপুরি মন খুলিয়া তর্ক-বিতর্ক করিতে দিয়াছিলেন । তাহার