পাতা:প্রবাসী (পঞ্চবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

سورN\ লাগল। তার পর কি ভেবে বললে—অনিল বাড়ীতে আছে, আসছে। মারচৈতন্ত আবার আচ্ছন্ন হ'য়ে এল, তিনি আবার নিম্পদ হ’য়ে গেলেন । পুত্রের সম্বন্ধে সব আগ্রহ অচৈতন্তের ঘোরে ঢাকা প’ড়ে গেল । অনল ক্ষিপ্ৰহস্তে ঔষধ মেড়ে হাতে ক'রে নিয়ে মার মুখের কাছে ঝুকে ডাকৃলে—ম, ••••• মা আবার চম্কে উঠে চোখ ঈষৎ মে’লে জিজ্ঞাসা করলেন~~র্জ্য ? অনিল এল ?... সেই ক্ষীণ কণ্ঠ থেকে আবার ব্যগ্র ঔৎস্থক্যের স্বর বেজে উঠল। বিষন্ন মুখ ফিরিয়ে অনল বললে—অনিল আসছে, তুমি ততক্ষণ বেদানার রসটুকু খেয়ে নাও ত. মুমুধুর মুখে মান ক্ষীণ হাসির একটু রেখা দেখা দিলে, তিনি বললেন-বেদানার রস ? কোথায় পেলি অনল ? মার মুখে হাসির আভাস দেখে অনলের দুই চোখ অশ্রুজলে ভরে উঠেছিল, সে রোদন সম্বরণ করবার চেষ্টা কবৃতে-কবৃতে বললে—তা আমি যেখানেই পাইনে কেন, তুমি *NİS VE. . . . . . মুমুধুর ক্ষীণ কণ্ঠেও দৃঢ়তার স্বর ধ্বনিত হ’ল—তুই নিজে উপোষ করে আমাকে বেদানার রস খাওয়াচ্ছিল,তোর প্রাণ শোষণ ক’রে কিনা আমাকে বঁচি তে হবে ?...... অনল কোমল অথচ দৃঢ় স্বরে ভংগনার আভাস দিয়ে বললে-তুমি অত বোকো না, আমি যা দিচ্ছি লক্ষ্মী মেয়ের মতন খেয়ে ফেলত। এতদিন তুমি আমাদের খাইয়েছ, আমরা ত জিজ্ঞাসা করিনি ঐ সব খাবার তুমি কোথায় পেলে । এখন আমার খাওয়াবার পালা এসেছে, তুমি কিছু জিজ্ঞাসা করতে পাবে না। অনলের মা দীর্ঘনিশ্বাস ফেলে ঔষধটুকু খেয়ে বললেন —অনল, তোকে আমি পেটে ধরিনি ; অনিল হবার আগেই তুই আমাকে মা ব’লে ডেকে মা হওয়ার আনন্দের আস্বাদ জানিয়েছিলি ; অনিল হওয়ার পরেও আমি কোনো দিন তোর চেয়ে অনিলকে বেশী আপনার বা অধিক প্রিয় মনে করতে পারিনি ; তুই বড় হয়ে উঠে প্রবাসী—বৈশাখ, ১৩৩২ [ ২৫শ ভাগ, ১ম খণ্ড একাই আমার ছেলে-মেয়ে শ্বশুর-শাশুড়ী বাপ-মা—সকলের অভাব পূরণ করেছিল... t মার মুখে নিজের প্রশংসা শুনে অনল ব্যস্ত হয়ে কি ক’রে এই প্রসঙ্গ চাপা দেবে ভাব ছিল, এমন সময় অনিল টেড়ি-কাট সমাপ্ত ক’রে ফিট্‌ফাটু বাৰু হ’য়ে সেই ঘরে এসে প্রবেশ করলে । অনিলকে দেখেই অনল ব’লে উঠ ল—ম, অনিল এসেছে------ মা কম্পিত দুই হাত তুলে দুই ছেলেকে ডাক্লেন-- তোরা দুজনে আমার কাছে এসে দু-পাশে বোস। দুই পুত্র মার কোলের কাছে দু-পাশে গিয়ে বসল। মা দু-হাতে দুই ছেলের হাত ধ’রে অনিলের হাত অনলের হাতের উপর ধীরে-ধীরে রেখে বললেন—অনল, অনিলকে তোর হাতে দিয়ে যাচ্ছি, তুই একে দেখিস। ...তোকে বলবার দরকার ছিল না, তুই একে দেখ বিই। কিন্তু অনিল ছেলেমাতুম, ওর বুদ্ধিশুদ্ধিও ভালো নয়, ঙ্গের কাছে ওর পদে-পদে অপরাধ ঘটবে, ওর নির্বদ্ধিত আর দুৰ্ব্বদ্ধিতার জন্যে ও ছয়জ অপকৰ্ম্মও ক’রে ফেলবে, তোকে সেই-সব মার্জন করে--••••••• অনল মাকে বাধা দিয়ে ব’লে উঠল—ম, অমিল যে আমার ভাই, এ-কথা কখনো আমি তুলে যাবে ব’লে কি তোমার মনে হচ্ছে ? পুত্রের প্রচ্ছন্ন তিরস্কারে সচেতন হয়ে মা বললেন— না। আর আমি তোকে কিছু বলব না, তোকে কিছু বলবার দরকার নেই।--অনিল, তোকে আমি তোর দাদার হাতে-হাতে দিয়ে গেলাম, দাদার উপদেশ অীর আদেশ মেনে চলিস, মনে রাখিস মরবার আগে তোদের মা তোকে এই অনুরোধ করে যাচ্ছে। অনিলের মা ঔষধের উত্তেজনায় এত কথা বলতে পারলেও তা’র প্রতিক্রিয়ায় একেবারে অবসন্ন হয়ে নিঝুম হ’য়ে পড়লেন। ক্রমশঃই তার অবস্থা খারাপ হ’তে লাগ ল, মৃত্যু ধীরে-ধীরে তাকে গ্রহণ করছিল। অনিলের মন বাইরে যাবার জন্যে ছটফট করলেও মরণাপন্ন মাকে ফেলে সে যেতে পারছিল না,-মায়ের প্রতি মমতার জন্য ততটা নয়, যতটা অনলের ভয়ে। তা’র এত যত্বের ও সাধের প্রসাধন ও সজ্জা ষে নিরর্থক হ’ল এই