পাতা:প্রবাসী (প্রথম ভাগ).djvu/৫১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8>ぐ。 নানারূপ কারুকার্য আছে, এবং মুসলমানধৰ্ম্মবিরুদ্ধ হইলেও প্রাচীরের উপরে নীচে সকল স্থান বিবিধ সুন্দর চিত্রে চিত্রিত। মসজিদের মাঝখানে কতকটা স্তান শ্বেত মৰ্ম্মরের, তাহ ব্যতীত সূৰ্ব্বত্রই লাল প্রস্তর । চিত্রের রঙ্গ অনেক স্থানেই নষ্ট হুইয়া গিয়াছে, তথাপি এখনও চিত্তাকর্ষক । The Joiirn:il of Indiam Art nni! I ndi:stry,vol Viii, April 1889, No 66, কাগজে স্মিথ সাহেব এই সকল চিত্রের নমুনা দিয়াছেন । আকবরসহ এই মসজিদেই ইমাম রূপে স্বপ্রবর্তিত ধৰ্ম্মমত প্রচারে প্রয়াসী হইয়াছিলেন । এবং এখানেই প্ৰসিদ্ধ আকবরনাম আইন-আকবরী লেখক আবুল ফজল আকবরসাহের প্রথম সাক্ষাৎকার লাভ করেন । মসজিদের প্রধান খিলানের উপর এইরূপ লিখিত আছে--এই মসজিদ “দ্বিতীয় স্বৰ্গ” । পারস্ত ভাষায় প্রচলিত সঙ্কেতলিপি অনুসারে এই অর্থ বোধ হয় যে "এই মসজিদ ১৫৭১ খ্ৰীষ্টাব্দে প্রতিষ্টিত ।” মসজিদের পশ্চাতে উত্তর-পশ্চিম দিকে ধ্বংসাবশেষের মধ্যে ফকিরের সেই ছয়মাসবয়স্ক শিশুর কবর, কুমার সলিমের মাতুড়ঘর ও ফকির প্রথমে যে গুহায় বাস করিতেন সেই গুহা,এই সব প্রদর্শিত হইয়া থাকে। এখানে পাথুরিয়া দিগের নিৰ্ম্মিত একটি ছোট মসজিদও বৰ্ত্তমান । বুলনা দরজায় প্রবেশ করলেই দশকের সম্মুখে চত্বরের উত্তর ভাগে 'শ্বেত মৰ্ম্মর রোয়াকের (raised platform) উপর নাতিবৃহৎ নাতিক্ষুদ্র একটি প্রিয়দর্শন মন্দির রহিয়াছে। ইহাই সলিমচিস্তির দর্গানামে প্রসিদ্ধ। আকবর সাহ ও তৎপরে জাহাঙ্গীর বাদসাহ সলিমচিস্তির উপর আপনাদের আকৃত্রিম ভক্তি ও শ্রদ্ধার এই মনোরম স্মৃতিচিহ্ন নিৰ্ম্মাণ করাইয়াছিলেন। মুসলমানের ও এখানকার সকলেই সলিমচিস্তির দর্গার যথেষ্ট সম্মান করিয়া থাকেন। যখন ফতেপুর-সিক্রির অন্যান্ত স্থান জনমানবশূন্ত, তখনও সলিমচিন্তির দর্গার যথেষ্ট সমাদর। আজিও হিন্দু মুসলমান সকলেই, বিশেষুত: , বন্ধ্যা স্ত্রীলোকেরা, তীর্থস্থান রূপে সেখানে গমন করিয়া মানত করিয়া থাকেন। বুলদরজার প্রকাও কপাট ও মন্দিরের বেড় ( প্রাচীর ) মানতের নিদর্শনে পরিপূর্ণ। বাহির হইতে সলিমচিন্তির দর্গ সম্পূর্ণ বিশুদ্ধ খেত মৰ্ম্মরের বলিয়াই বোধ হয়। চারিদিকের ঝিল্লি প্রবাসী - [ ১ম ভাগ । কাটা (জালিকাটা trellis work) শ্বেত মৰ্ম্মরের বেড় (প্রাচীর) দূর হইতে সুন্দর রেশমের বুনট লেসের পদাবলিয়া ভ্রম হয়। প্রকোঠের চারিদিকে বারেন্দ, বারেন্দার উপর ঘরের চালার মত হেলান কর্ণিস। বাহিরে প্রাচীরগাত্রে কোরানের বচন সকল অঙ্কিত রহিয়াছে। প্রকোষ্ঠের ভিতরে ৪ ফুট উচ্চ পৰ্য্যস্ত শ্বে ত মৰ্ম্মরের ; তার উপর লাল প্রস্তর। প্রকোষ্ঠের ভিতরে অনেক বিচিত্র কারুকার্য্য বৰ্ত্তমান এবং প্রাচীরেও নান। স্থানে পূৰ্ব্বে বিবিধ রঙ্গের সুন্দর চিত্র বর্তমান ছিল বলিয়া বোধ হয়। ১৮৩৬ খৃষ্টাব্দে আগ্রার তৎকালীন কালেক্টর মেনসেল সাহেবের আজ্ঞার সেই সকল চিত্র স্থানে স্থান পুনরুদ্ধার করা হয় । এই সকল আধুনিক চিত্র স্মিথ সাহেব তাহার Archaeological Survey lapor এ আসল চিত্রের সম্পূর্ণ বিপরীতভাবাপন্ন বলিয়াই মত প্রকাশ করিয়াছেন । স্মিথ সাহেব অনেক স্থানে পূৰ্ব্ব চিত্র পুনরুদ্ধার করিতে সক্ষম হইয়াছেন। তিনি পূৰ্ব্ব চিত্র ও Mansoli সাহেবের আদেশে যে সব চিত্ৰ পূৰ্ব্ব চিত্রের পুনরুদ্ধাররূপে চিত্রিত হইয়াছিল, তাহর নমুনা Journnl of Indiam Art. and Indu-f ry, V. l viii Oct. Is08, No iii, পত্রিকায় প্রকাশ করিয়াছেন। সলিমচিস্তির কবরের উপর ছত্ররূপে একটি আবলুস কাষ্ঠের চান্দোয়া (Canopy) চারিদিকে চারিটি ঐ কাষ্ঠের থামের উপর নির্ভর করিয়া রহিয়াছে। চান্দোয়া ও তাহার পায়া চারিটি অতীব সুন্দর ঝিনুকের (nother of peal ) কfরুকাৰ্যখচিত । উহা প্রকোষ্ঠের আধ আধ আলোতে অতিশয় চিত্তাকর্ষক দেথায় । দেখিলে স্বতঃই মনে হয় এরূপ কারুকার্য্য নিশ্চয়ই বিরল হইবে । ফতেপুর-সিক্রির প্রাসাদাদির মধ্যে তুলনায় সলিমচিন্তির দর্গ নিঃসন্দেহ শীর্ষ স্থানীয় । আকারে বিশেষ বড় না হইলেও “in respect of design and the costliness of material of which it is built, it stands unrivalled and is a perfect gem of art” (Smith, Archaeological Survey.) দর্গার ঠিক সম্মুখে দক্ষিণদিকে একটি চৌবাচ্চা আছে। কিঞ্চিং পুৰ্ব্ব-উত্তরে সলিমচিস্তির পরিবারের মেয়েদের গোয়স্থান, এবং তাহারই পাসে চিস্তি সাহেবের পৌত্র জাহাঙ্গীর বাদসাহের রাজত্বকালে বাঙ্গালার শাসনকর্তা ইসলামখায়