পাতা:প্রবাসী (প্রথম ভাগ).djvu/৫২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8२२ তীয় নাট পাক্ষিত্যের বিশেষত্ববিজ্ঞাপক । অন্য কোন সভা সমাজের নাট্যসাহিত্যে এরূপ শ্রেণীবিভাগ দেখিতে পাওয়া যায় না । ইঙ্গ অনু করণ-বাঁদের অনুকূল নহে । কোন সময়ে উপরূপকের আবির্ভাব হয়, তাই নির্ণয় করা সঙ্গজ মহে । রূপক ও উপরূপক শ্রেণার আদিগ্ৰস্থ কালক্রমে বিলুপ্ত হইয়া গিাছে। যাঙ্গ এখনও বর্তমান আছে, তন্মধ্যে মৃচ্ছকটিককেই অধ্যাপক ওয়েবর সর্বাপেক্ষা পুরাতন বলিয়া স্বীকার করিয়া লইয়াছেন । মৃচ্ছকটিক প্রায় দ্বিসহস্ৰ বৎসর পূৰ্ব্বে রচিত বলিয়া ও স্বীকৃত হইয়াছে। সুতরাং অধ্যাপক ওয়েবরের সিদ্ধাস্ত সত্য ইষ্টলে, মৃচ্ছকটিককে ভারতীয় নাট্যসাহিত্যের আদিযুগের গ্রন্থ বলিয়া গ্রহণ করিতে হইবে । কিন্তু মুচ্ছকটিক এরূপ সিদ্ধান্ত সমথন করে না । মুদ্রাধন্ত্র প্রচলিত হইবার পূৰ্ব্বে ভারতবর্ষের স্থায় বহুবিস্তৃত মহাদেশে পুরাতন গ্রন্থ বিলুপ্ত হওয়া বিস্ময়ের ব্যাপার নহে । নাট্যসাহিত্যের পক্ষে তাহ নিতান্ত স্বাভাবিক ব্যাপার ; নাট্যগ্রন্থ অধীত হইত না, অভিনীত হইত । নাট্যশালা ও নাট্যামোদীর গুহই তাহার প্রধান আশ্রয়স্তান ছিল। রুচিপরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে নাট্যশালায় নুতন নুতন নাট্যগ্রন্থের অভিনয় সম্পাদিত হইত ; প্রয়োজন ও অনু রাগের অভাবে পুরাতন নাট্যগ্রন্থের পাণ্ডুলিপি পরিত্যক্ত ও বিলুপ্ত হইবা অনুকূল কারণের অভাব ছিল না। শতবৰ্ষ পুৰ্ব্বে বাঙ্গালা দেশে যে সকল কবি, পাচালী ও যাত্রার পাল৷ প্রচলিত ছিল, তাহার পাণ্ডুলিপি বিলুপ্ত হইয়া গিয়াছে । পুরাতন নাট্যসাহিত্যও সেই স্বাভাবিক নিয়মে বিলোপ প্রাপ্ত হইয়াছে। সুতরাং দ্বিসহস্ৰ বৎসরের পূর্ববৰ্ত্তী কোন নাট্যগ্রন্থ না দেখিয়া, কেবল সেই কারণে, তৎপরবর্তী সময়ে ভারতীয় নাট্যসাহিত্যের জন্মকাল নির্দেশ করা সঙ্গত বলিয়া বোধ হয় না । দ্বিসহস্ৰ বৎসর পূৰ্ব্বে রচিত যে সকল সংস্কৃত গ্রন্থ অদ্যাপি প্রাপ্ত হওয়া যায়, তন্মধ্যে নাট্যসাহিত্যের অস্তিত্বের প্রমাণ প্রাপ্ত হওয়া যায় কিনা, তাহার বিচারে প্রবৃত্ত হইয়া অধ্যাপক ওয়েবর কয়েকটি ভ্রান্ত সিদ্ধাস্তের অবতারণা করয়াছেন। সংস্কৃত সাহিত্য শৈলালী, কৃশাখী, শৈবৃষ, ভরত, ভরতপুত্র, নট প্রভৃতি শৰে অভিনেতাকে নির্দেশ প্রবাসী [ ১ম ভাগ । করা হইয়াছে। সূত্ৰধার শব্দও অভিনেতৃ বিশেষকে স্বচিত করে । এই সকল শব্দের মধ্যে সূত্ৰধার, শৈলালী ও কৃশাশ্ব শব্দ নাট শব্দের স্তায় বহু পুরাতন, বৈদিক সাহিত্যেও অপরিচিত নহে। পাণিনির বাৰ্ত্তিকে শৈলালী ও কৃশাশ্বী শব্দ নট নামে ব্যাখ্যাত হইয়াছে এবং তাছার যে নাট্যসুত্র অভ্যাস করিত, তাহারও আভাস প্রদত্ত হইয়াছে। অধ্যাপক ওয়েবর ধাত্বর্থ বিচার করিয়া ইহাদিগকে নৰ্ত্তক বলিয়া ব্যাখ্য। করিয়াছেন । ধাতুর্থ অনুসরণ করিয়া সকল কথারই ব্যাখ্যা করা যাইতে পারে ; পঙ্কজকেও শেওলা বলিয়া বুঝাইয়া দেওয়া যায় ! কিন্তু ভারতবর্ষে নৃত্য গীত অভিনয় ভিন্ন ভিন্ন সময়ে পৃথক প্রাদুভূত হওয়ার প্রমাণ নাই । নৃত্য গীত ও অভিনয় একসঙ্গেই প্রাপ্তভূত হইয়াছিল । পুরাতন বৌদ্ধগ্রন্থে ও নাট্যাভিনয়ের উল্লেখ আছে । অধ্যাপক ওয়েবর ঐ সকল গ্রন্থের সমধিক প্রাচীনত্বে সন্দেহ প্রকাশ করিয়া স্বমত রক্ষা করিবার চেষ্ট। করিয়াছেন । দ্বিসহস্ৰ বৎসর পূৰ্ব্বে রচিত ভারতীয় গ্রন্থে নাট্যাভিনয়জ্ঞাপক শব্দের অভাব নাই ; তাহাকে নৃত্যগীত বোধক সংকুচিত অর্থে ব্যাথা না করিলে, অধ্যাপক ওয়েবর স্বমত রক্ষা করিতে পারিতেন না ! ইষ্ঠার সমালোচনা অনাবগুক । ইহাকে স্বমতান্ধত বলিলেও অতুক্তি হয় না । রস ভাব ও বিষয় ভেদেই রূপক নাট্য দশ ভাগে বিভক্ত হইয়া থাকিবে । কোন রূপক বীররস প্রধান ; কোন রূপক রৌদ্র, করুণ, বা হাস্তরসপ্রধান ; কোন রূপক আবার কেবল শৃঙ্গার রসের আধার। সমবকার ও ভাণ বীররসপ্রধান । ডিম রৌদ্ররসে পরিব্যাপ্ত। অঙ্কে করুণরস প্রবল। বাযোগে হান্ত, শৃঙ্গার ও করুণরসের অভাব। প্রহসনে আবার হান্তরসই উচ্ছসিত । নাটক, প্রকরণ ও ঈহমৃগ শৃঙ্গাররসাত্মক। এই রসপার্থক্য ধরিয়া বিচারে প্রবৃত্ত হইলে, নাট্যোৎপত্তিকালে হাস্ত, করুণ ও শৃঙ্গাররসের প্রাধান্ত স্বীকার করিয়া লওয়া যায় না । প্রথমে জয়োল্লাসের আনন্দই মানবসমাজের প্রধান আনন্দ বলিয়। পরিগণিত হইত। প্রার্থনায় জয়tশা উৎসবে জয়ঘোষণা—ইহাই সৰ্ব্বত্র অভিব্যক্ত । মানবসমাজ যথেষ্ট রূপে শৃঙ্খলানিবদ্ধ সমাজতন্ত্রের শান্তিমুখ উপভোগ করি বার পুৰ্ব্বে হান্ত, করুণ বা শৃঙ্গাররসের প্রাধান্ত স্থাপিত