পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১৭৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

مسة وت" জ্যৈষ্ঠ * . “তোমার সঙ্গিনীও বাচাল হ'য়ে উঠেছে আরু ; তোমাদের দু-জনের প্রাণে প্রাণে একটু বিশ্রম্ভলপ হোক, আমি দুৰ্য্যন্তের মত গুনি-চোখবোজার আড়াল থেকে ” আরতির মুখের ভাবটি নিমেষে নরম হইয়া আসিল, কি একটা যেন সুখের বেদনায়। ব্যাঞ্জোটি কোলে রাখিয়া, বুকে চাপিয়া বলিল—“হঁ্যা শোন ওর কথা শোনাতেই ও আমায় আজ এই বর্ষার মাঝরাতে ঘরছাড়া ক'রে টেনে এনেছে ।” সঙ্গে সঙ্গে ব্যাঞ্জো রণরণিয়া উঠিল। সে কি সঙ্গীত! মল্লুজের মনে হইল চাপার আধ ফুটন্ত কলি হইতে গন্ধের মত আরতির দুটি হাতের অঙ্গুলিগুচ্ছ হইতে সঙ্গীত ঝরিয়া পড়িতেছে । অবিশ্রান্ত বর্ষার বাবু ঝবু তালের সঙ্গে দ্রিম্—দ্রিমৃ—দ্রিম্-কথন মিলিয়া গলিয়া বেদনাতুর হইয় এই আশ্রময়ী রজনীর সঙ্গে এক হইয়া গেল—অতল অন্ধকারে, মিলনের সম্ভাবনার বাহিরে কি যেন একটা চিরবিরহের সুর ; অন্ধ, নিস্ফল অমুসন্ধানের ব্যথায় ভরা। অশ্রীতে মল্লজের চোখের পাতা ভারী হইয়া আসিল । একটা তন্দ্রায় যেন ক্রমেই আচ্ছন্ন হইয়া আসিতেছে, কেমন একটা ভয় হইতেছে—এই আসন্ন নিদ্রার মধ্য দিয়া সে এমনই একটা অতলে গিয়া পড়িবে যে সেখান হইতে আর শত চেষ্টাতেও আরতির নাগাল পাওয়া যাইবে না।--তবু এই না-পাওয়ার আশঙ্ক-এও যে কত মধুর—কি যে অশ্রতে ভরা সুখ--- স্বর বহিয়াই চলিয়াছে—রিম্ ঝিম্ রিম্ ঝিমৃ–কথন মৃদু,--ধেন আর শোনাই যায় না ; সহসা কখন ঝঙ্কত— নিজের পুর্ণতায়, নিজের গতির আবেগে আবৰ্ত্ত হষ্টি করিয়া ••• মন্তজ বলিল—“আর, তুমি-আমি যেন হচ্ছি নদীর দুটি কূল ; মাঝখান দিয়ে এমনি চিরবিরহের ধারা আমাদের দু-জনকে চিরকালের জন্যে এক ক'রে চলুক। মন্দ কি আরু ?” হঠাৎ একটা প্রবল ঝন্‌ঝৰ্মানির পর সঙ্গীত থামিয়া গেল। আরতি চেয়ার ছাড়িয়া, ব্যাঞ্জো রাখিয়া আসিয়া চৌকির নীচে মলুজের সামনেটিতে বসিল ; দুষ্টামির হাসি হাসিয়া বলিল— “হ্যা, তোমার কাকা চিরকাল নদী হয়ে আমাদের তফাৎ প্ৰতাপস ❖ላ« يتمتع ক’রে রাখুন, আর তুমি দিব্বি থাক তোমার তপস্যা নিয়ে--- তবে ঐ রইল তোমার ব্যাঞ্জো—কি যে সাধ!--” মমুজ মুখটি কাছে আনিয়া গাঢ়স্বরে বালল, “আমার যে কি তপস্তা—কি সাধ, তুমিও কি জান না আরু ?” হাসিতে আরতির কিছু অশ্র ঝরিয়া পড়িয়াছে, কিছু চোখেই টল্‌ টল্‌ করিতেছে,—সেটুকু আদর করিয়া মুছাইতে গিয়া মনুজের হাতটা খানিকট। শূন্যে গিয়া ভারী হইয়া গেল, পতন হইতে নিজেকে সামলাইয়া লইয়া সে ধড়মড় করিয়া উঠিয়া পড়িল । ঘড়ির রেডিয়াম ডায়ালে দেখিল—একটা বাজিয়া দশ মিনিট হইয়াছে। মনে হইল যে এলামের শেষ ঝঙ্কারের স্বর তখনও হাওয়ায় কোথায় একটু ভাসিয়া বেড়াইতেছে। থানিক ক্ষণ কৃতজ্ঞ দৃষ্টিতে ঘড়িটার দিকে চাহিয়া রহিল । বাহিরে বর্ষ, মাথার কাছের জানালাটা খুলিয়া গিয়া সজোরে আৰ্দ্ৰ বাতাস আসিতেছে । চৌকির একধারে আসিয়া পড়িয়াছিল—আর একটু হইলেই হইয়াছিল আর কি ! বই লইয়৷ সাধনা করিবার আর প্রবৃত্তি হইল না ; মনে হইল যেন এখনও আরতি নীচে, বুকের কাছটিতে বসিয়া আছে । আবার এমনই একটি স্বপ্নের মধ্যে একবার ভাল করিয়া তাহাকে যদি পাওয়া—এই আশায়, জড়িমা কাটিবার পূৰ্ব্বে, মমুজ আবার তাড়াতাড়ি—আরতির বিদ্রুপে সরসিত সেই সঙ্কীর্ণ চৌকিটায় গুইয়া পড়িয়া নিদ্রার সাধনায় লাগিয়া গেল। ব্যাঞ্জোর প্রত্যাশায় ঘড়িটাতে এলামের জন্য একটু দমও দিয়া দিল—অবশু বী-দিকে চাবি দিয়াহ । 豪 嶺 용. পরের দিন কাকা বলিলেন—“না, রাত জেগে পড়াটা তোমার পক্ষে এখন ঠিক হবে কিনা সে-সম্বন্ধে মন স্থির করতে পারছি না-ভেবে ভেবে কাল আমারই ঘুম হয় নি, তাইতে শরীরটা এত খারাপ হয়েছে...থাক্ না-হয়, দু-এক জন ভাল ডাক্তারকে জিজ্ঞাসা ক'রে দেখি। ঘড়িটা আপাতত: আমার ঘরেই রেখে এস ।” কাকীম কুটনা ফুটিতেছিলেন, মুখ অন্ধকার করিয়া মমুজ পাশে গিয়ু বসিল । একবার আড়চোখে দেখিয়া