পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

टंङTछे ঢুকে পড়তে রাজী । কিন্তু তা যখন হ’ল ন',- যে পথে এসেছে সেই পথেই সে সোজা দৌড় দেবে কি না ভাবছে,এমনি সময় দুই দরজা দিয়ে প্রায় যুগপৎ ইপাতে ছাপাতে যুগলে এসে পড়লেন—নীরদ-দাদা ও লীলা-বৌদিদি। বৌদিদি বলল—কি হয়েছে দুগগা ? দুর্গ দু-চোখে আগুন ছড়াচ্ছে, দারুণ রাগে মুখ লাল । হাত দুখানা কোমরে দিয়ে কুস্তিগীরের ভঙ্গীতে দাড়িয়ে বলল-চোর-চুরি করেছে, দিদি। আমি দাড়িয়ে আছি, পিছন থেকে এসেই— নীরদ মুধানাথের অবস্থা দেখে খিল থিল ক’রে হেসে উঠল । বলল—কি চুরি করেছে, বোন ? তোর হিয়া-মনপ্রাণ নাকি ! লীলাও হেসে তাড়াতাড়ি কলকণ্ঠে সুধানাথকে অভ্যর্থনা কবল--কি ভাগ্যি,--মেঘলা রাতে চাদের উদয় ? জলকাদায় গা-হাত-পা সমস্ত যে চিতে বাঘের চামড়া হয়ে উঠেছে । ওরে কালীপদ, জল নিয়ে আয়ু। ঘটির কৰ্ম্ম নয়.কলসী--- কলসী বেশ স্বধী এর । স্বামী-স্ত্রী দু-জনেই আমুদে। হাসিখুশীর মধ্যে দিনগুলো পাখনা মেলে উড়ে যায়। স্বধানাথ নিঃশ্বাস ফেলল। আর, এমনি তার কপাল—এই আনন্দের হাটে এসে পড়ে হঠাৎ এক বিপৰ্য্যয় ঘটিয়ে বলল, জের তার কিছুতে মিটছে না। অর্থাৎ সেই যে রণরঙ্গিণী বেশে দুর্গ। অন্তরালবর্তিী হয়েছে, আর তার সাড়াশন্ধ নেই। ঘণ্টা-দুই পরে নারদ আর সুধানাথ থাটের উপর পা ঝুলিয়ে বসেছে। খোকা ঘুমিয়েছে। বাইরে অবিশ্রাস্ত বর্ষাধারা---ছড় ছড় ক’রে রোয়াকের উপর নলের জল পড়ছে। গল্প কেমন যেন জমেও জমছে না। অবশেষে নীরদ ডাকল— দুর্গ দেবি ! ডাকের পর ডাক ; দেবী প্রসন্না হ’লেন না। স্বধানাথ বলল—ডাকাডাকি ক’রে মান আরও বাড়িয়ে তুলছ দাদা,--- তার চেয়ে আমার মামলার কথাটা শোন দিকি এইবার । নীরদ হেসে তাড়া দিয়ে উঠল—বুকের পাটী কম নয় দেখছি। চুড়ির আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে. চুপ, চুপ, ওরে ইপিড– সপণঘাত RS& এমনি সময় দ্রুতপদে এসে দাড়াল লীলা । —ডাকছ তোমরা ? নীরদ বলল—ডাকছি, কিন্তু তোমাকে নয়। তোমায় ডাকলে লাউয়ের ঘণ্টে যে মূল পড়বে না। এমন অবস্থায় ডাকব— সত্যি সত্যি আমরা কি এমনি বোকা ? লীলা বলল - তাই ত বলি। তোমার সকল রসজ্ঞান রসনায়। হঠাৎ পরমহংস হয়ে গিয়ে যে ক্ষীর ছেড়ে নীরে রুচি জন্মাবে...কিন্তু দুগগ ছুটে গিয়ে বলল—যাও দিদি, শিগগির—আমি তরকারি দেখছি.. স্বধানাথ বলল—তিনি ! তা হলে আবার ডবল নুন পড়বে ন। ত? যে রাগ করে গেছেন! নীরদ ঘাড় নেড়ে গম্ভীরভাবে মন্তব্য করল—সেটি হবার জো নেই, ভাই। দুর্গাদেবী ভাল মেয়ে---লক্ষ্মমেয়ে-- কলেজে সায়ান্স কোস নিয়েছেন। একবার এক নজর ভিতর দিকে চেয়ে সে মুখ টিপে হাসল, বলতে লাগল— বোনটির আমার ল্যাবরেটরির জানালায় উকি দেওয়া অভ্যাস। চালাকি কথা নয়। নিক্তি মেপে আউন্স হিসাবে মৃন দেন। তরকারি ধরে যেতে পারে, শুকিয়ে পুড়ে কয়লা হয়ে যেতে পারে, কিন্তু নৃনের গোলমাল হবে না--- --জামাই বাবু! আচম্বিতে দুর্গার আবির্ভাব। কণ্ঠঝঙ্কারে পুরুষ দুটিকে সচকিত ক'রে বলতে লাগল—জামাই বাৰু, আপনাদের পাড়াগায়ের লোক এমন নিন্দুক ? নীরদ বলল— এ কি বোন, রান্নাবান্না এরই মধ্যে সারা ক'রে এলে ? —না, নামিয়ে রেথে এলাম। জবাবটা নিয়ে আবার গিয়ে চাপাবে। কিন্তু জিজ্ঞাসা করি, কবে আপনাকে পোড়া তরকারি খাওয়ালাম ? গলা হঠাৎ খাদে নেমে গেল। অর্থাৎ বজ্রবিপ্লবের পর বৃষ্টির সম্ভাবনা । এর জন্য নীরদ প্রস্তুত ছিল না। বারম্বার বলতে লাগল-না:, তোমাদের নিয়ে চলে না। একটা ঠাট্টা করলাম...তাতেই একেবারে ?...লোকে যে বলবে, একেবারে খুকী ?-- এবং লোকটি যেন একেবারে তৈয়ারি ছিল । কথায় কথায় যে রাগ করে, তাকে রাগাতে ভারী মজা। ভালমামুষের মত স্বধানাথ জিজ্ঞাসা করল - খুকীটি কে বৌদিদি ?