পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\రింకా স্বৰ্গীয়া মনোরমা মজুমদার ব্ৰাহ্মসমাজের অন্যতম নেতা বরিশাল ব্রাহ্মসমাজের ভূতপূৰ্ব্ব প্রধান আচার্য্য, ভক্ত প্রেমিক সাধক, জনসেবক গিরীশচন্দ্র মজুমদার মহাশয়ের যোগ্য সহধৰ্ম্মিণী মনোরম দেবী গত ১২ই বৈশাখ, শনিবার, ৮৬ বৎসর বয়সে কলিকাতা বিদ্যাসাগর ষ্টুটস্থ ৪০ নম্বর বাসভবনে দেহত্যাগ করিয়াছেন। এই পুণ্যশীল রমণীর পরলোকগমনে ব্রাহ্মসমাজের সংস্কারযুগের জ্ঞানী, ভক্ত, কৰ্ম্মী, ত্যাগী প্রথম-প্রদর্শকদিগের এক জন প্রধানার তিরোধান হইল। বাংলার তথা ভারতের অভিনব যুগসন্ধিকালে যে-সকল মহাপ্রাণ ব্যক্তি আত্মোৎসর্গের চরম পরিচয় দিয়া গিয়াছেন, তাহাদিগের মধ্যে মনোরম দেবী এক বিশিষ্ট স্থান অধিকার করিয়াছিলেন। স্বীয় অধ্যবসায় ও একাগ্রত বলে স্বামীসকাশে উচ্চ শিক্ষা iভ করিয়া ১৮৮১ খ্ৰীষ্টাব্দে তিনি ব্রাহ্মসমাজের প্রচারিক; নিযুক্ত হন । ১৮৮৩ খ্ৰীষ্টাব্দে বরিশাল ব্রাহ্মসমাজের বেদী হইতে প্রকাশ্বে সৰ্ব্বসমক্ষে আচাৰ্য্যাণীর কার্য্য যোগ্যতার সহিত সম্পন্ন করেন। আধুনিক সময়ে ইহার পূৰ্ব্বে কোন মহিলা তাহা করিয়াছেন বলিয়া আমি অবগত নহি । ধৰ্ম্মপ্রচারকার্য্যে তিনি যখন খ্যাতিলাভ করেন, ঢাকা টুডেন্‌ ফিমেল স্কুলে দ্বিতীয় শিক্ষয়িত্রীর পদ সরকার তখন তাহাকে প্রদান করেন। মনোরম দেবীই প্রথম দেশীয় মহিলা শিক্ষয়িত্রী। তাহার অসাধারণ শিক্ষানৈপুণ্য ছিল । ১৮৮৮ সালে ডাক্তার (সর ) নীলরতন সরকারের সহিত প্রথম কন্যার বিবাহে এবং বাবু সুরেশচন্দ্র সরকারের সহিত দ্বিতীয় কন্যার বিবাহে ব্ৰাহ্ম পদ্ধতি অনুসারে তিনিই পৌরোহিত্যের কায্য করিয়াছিলেন। র্তাহার পূৰ্ব্বে কোন মহিলা ধৰ্ম্মযাজকের আসন গ্রহণ করেন নাই । ১৯০৭ সনে শিক্ষাকার্য্য হইতে অবসর গ্রহণ করিয়া তিনি কলিকাতায় আসেন এবং এখানে তাহার নীরব শাস্ত জীবনে আধ্যাত্মিকতার ভিতর দিয়া ক্ষুদ্র হইতে ভূমার দিকে অগ্রসর হইতেছিলেন । ১৯১৩ সনে জীবনের উজ্জলতম আদর্শ দেবোপম স্বামীকে হারাইয়া এবং ১৯২৮ সনে অতি স্নেহের জ্যেষ্ঠ পুত্রকে বিদায় দিয়া তিনি গৃহাভ্যস্তরে নীরবে র্তাহার জীবন অতিবাহিত করিয়ু আজ দিব্যলোকে প্রয়াণ করিয়াছেন । Wo. W. “পত্রপুট” গত ২৫শে বৈশাখ রবীন্দ্রনাথের জীবনের ৭৫ বৎসর পূর্ণ হইয়াছে। এই উপলক্ষে শাস্তিনিকেতনে, কলিকাতার প্রবণসী SNSBNご কয়েক জায়গায় এবং অন্য অনেক স্থানে তাহার জন্মোৎসব অনুষ্ঠিত হইয়াছিল। তিনি র্তাহার কৈশোর হইতে বঙ্গদেশকে ও পৃথিবীকে নানা উপহার দিয়া আসিতেছেন। গত ২৫শে বৈশাখের জন্মদিনেও কাব্যাকুরাগীরা তাহার নিকট হইতে একটি উপহার পাইয়াছেন। তাহা “পত্রপুট” । এই গ্রন্থখানির ষোলটি কবিতা গদ্যে লিখিত, কেবল র্তাহার দৌহিত্রীর শুভপরিণয়ু উপলক্ষে লিখিত আশীৰ্ব্বাদটি পদ্যে লিখিত। এই ষোলটি কবিতার মধ্যে ১৪ সংখ্যক যেটি, তাহার রচনার দিন গত ১৯শে বৈশাখ। ষোলটির মধ্যে ইহাই সৰ্ব্বশেষে লিখিত । গ্রন্থখানির পরিচয় পরে দেওয়া হইবে। “অন্নসমস্যায় বাঙালীর পরাজয় ও তাহার প্রতীকর” আচাৰ্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় প্রণীত এই নুতন বহিখানি আমরা গত ২৮শে বৈশাখ পাইয়াছি । ইহার পরিচয় অবহু পরে দেওয়া হইবে । কিন্তু ইহা এত দরকারী বহি, যে, ইহার প্রকাশের সংবাদ অবিলম্বে লিথনপঠনক্ষম অন্তত: সব রেকর্ণব বাঙালীর পাওয়া অবশুক বোধে প্রবাসীর বর্তমান সংখ্যতেই দিলাম । পরাজয়ের বৃত্তাস্ত পড়িলে মনটা দমিয়া যায়, কিন্তু আচাৰ্য্য মহাশয় প্রতিকারের পথও নিদেশ করিয়াছেন । মতরাং বহিখানি পড়িয়া ভগ্নেীদ্যম হইবার কোন কারণ নাই । জাতীয় ও ব্যক্তিগত স্বাধীনতার প্রতি ভারতীয়দের অনুরাগ ইউরোপের সকল দেশের লোকের স্বাধীনতাপ্রিয় , তাহারা অনেক বার নিজেদের দেশের ও জাতির স্বাধীনতার জন্য সৰ্ব্বস্ব ও প্রাণ পৰ্য্যস্ত পণ করিয়াছে। বর্তমানে ইটালী ও জামেনীতে যে তথাকার লোকের ব্যক্তিগত স্বাধীনত: হারাষ্টয় মুসোলিনী ও হিটলারের দাস হইয়া আছে, তাহাও অনেকট। তাহদের জাতি ও দেশ মুসোলিনী ও হিটলারের নেতৃত্বে শক্তিশালী, সমৃদ্ধ ও গৌরবান্বিত হইবে, এই মোহজাত বিশ্বাসের বশবৰ্ত্ত হইয়া। ইউরোপের লোকের নিজেদের বেলায় স্বাধীনতাপ্রিয়, স্বাধীনতার মূল্য বুঝে, কিন্তু ইউরোপের বাহিরের লোকদের স্বাধীনতাও যে তাঁহাদের কাছে তেমনই প্রিয়, ইউরোপের লোকেরা চহা ভাবিয়া দেখে না, কল্পনা করে না, বিশ্বাস করে না । বিশেষতঃ ইউরোপের বাহিরের যে-যে দেশ কোন ইউরোপীয় জাতির অধীন, তাহাদের স্বাধীনতাও যে মূল্যবাম