পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আশষণচ কদমা বধিয়া দিয়াছিলেন দিদিমাকে দিবার জন্য। মিষ্টি ন সঙ্গে দিয়া বধূকে বীপের বাড়ী ত পাঠানো ধায় না। শিবু মিষ্টির পুটুলিট হাতে করিয়া দাড়াইয়াছিল। মহামায়৷ আশচলে সিদুরকৌটা বাধিয়া হৈমবতীকে প্রণাম করিয়া চন্দ্রকাস্তের দিকে চাহিয। শুধু একটু হাসিয়া গাড়ীতে উঠিলেন। শিবু ও সুধা বাবাকে পিসিমাকে এবং সঙ্গে সঙ্গে মাকেও প্ৰণাম করিয়া গাড়ীতে উঠিবে কিনা ইতস্তত করিতেছিল । চন্দ্ৰকান্ত তাহদের কোলে তুলিয়া গাড়ীর ভিতর বসাইয় দিলেন । এই সামান্য কয়টা দিনের বিচ্ছেদ, তবু চৈমবতীর চোথে দুই বিন্দু অশ্র ফুটিয়া উঠিল । লগা মাঝি গরু দুইটার ল্যাজ মলিয়া লাঠির গুতা দিয়৷ 'চেট ষ্টেটু, করিতে ই গরু দুইটা চালু পথ দিয়ু হাড় হড় করিয়! গাটী লইয়া ছুটিল । চন্দ্ৰকাসু তখন ঘরের ভিতর চলিয়া গিয়াছেন । :ৈমবতী দুসারে দাঙ্গইয়া তাঙ্গদের শেষ পর্য্যস্ত দেখিতেছিলেন । দুই পাশে ঘন সবুজ শালবনের মাঝখান দিয়া এক্ট বাঙ সি থির মত দীদ পথটি কি মুগ ৯োগের আড়াল হইতেই লাচিয়; উঠিল । পথটি সমুদ্রের বুকের ঢেউয়ের মত ক্রমাগত উঠিয়া নামিয়া চলিয়ছে। গরুর গা ট্রীর চাকাও তাতারই তালে তালে উঠিতেছে পড়িতেছে । লগা মাঝির পাশেষ্ঠ শিবু তাঙ্গর পেলাইটি পিঠে বধিয়া বসি*াছিল। এবার পূজা দেরীতে পড়িয়ছে, ইহার মধ্যেই ভোরের বেলা শীতের হাওয়া দেখা দেয় । শিবুর পিছন হঠতে স্বধা কিছুই দেখিতে পাইতেঢ়িল না। তাঙ্গর ম৷ সুন্দর । বাউ ও পিসিমার 장 8 শিবুল &ন আনন্দে মহামায়া মেয়ের অন্ধকার মুখ দেখিয়া বলিলেন, “সুধী, তুই আমার কাছে এসে বোস ন, মা । কাল রাত্রে ভাল ধূম হয়নি, আয়ু আমার কোলে মাথা দিয়ে একটু ঘুমোবি।” সুধা বলিল, “ন মা, আমি ঘুমোব না। আমি সারা পথ দেখতে দেখতে যাব।” সে মা’র গায়ে পিঠ দিয়া শিবুর দিকে পিছন ফিরিয়া গাড়ীর পিছন দিক দিয়া রাস্ত দেখিতে লাগিল। ভোরবেল জমিদার-বাড়ীর বৃদ্ধ হস্তিনী পিঠের দুই দিকে মোট কাছিতে দুইটা ঘণ্টা দুলাইয়া শালবনে ডাল ভাঙিতে যাইতেছিল ; কিছু সেখানেই প্রাতরাশ করিবে এবং কিছু পিঠে করিয়া লইয়া আসিবে পরের তালখ-বোগরণ \లv9A আহারের জন্য। বহুদূর হইতে তাহার জোড় ঘণ্টার ঢং ঢং আওয়াজ শুনিয়া শিবু ও স্বধার মন চঞ্চল হইয় উঠিয়াছিল। এখন তাহার রাঙা মাটি ও চন্দন চর্চিত কপালটুকু দেখিয়াই সুধা হাততালি দিয়া উঠিল, “লক্ষ্মীপিয়ারী, লক্ষ্মী-পিয়ারী ? গ্রামের দুই-চারিটি ছেলে অনেক কষ্টে ছুটিয়া হাতীর গজেন্দ্রগমনের সহিত তাল রাখিতে চেষ্টা করিতেছিল ; শিবু তাড়াতাড়ি পিছন ফিরিয় তাহাদের সহিত সমস্বরে ছড়া কাটিয়া উঠিল, “হাতীমামী দোল দোল পান খিলিটি—থোল গোল।” মহামায় বলিলেন, “মামা কি রে ? মাসি হয় যে !” সুদা তাড়াতাড়ি মাহুতকে বলিল, “জগদাদ, লক্ষ্মীপিয়ারীকে নমস্কার করতে বল না !” জগা হাসিয়া বলিল, “কিছু বকশিশ কর, তবে ত নমস্কার করবে ? শুধু শুধু নমস্কার কেউ করে ?” স্বদা মুখটি মান করিয়া বলিল, “আমার ত পয়সা নেই।” মহামায় অচিল হইতে দুইটি পয়সা মাটিতে ফেলিয়৷ দিলেন। লক্ষ্মীপিয়ারী শুড় দিয়া পয়সা দুটি তুলিয়া লইয়। পিছনে শুড়টি বাকাইয়া জগাকে পয়সা দিল । তাহার পর দুইবার উদ্ধে শুণ্ড উৎক্ষিপ্ত করিয়া রাজ্যেচিত ভঙ্গীতে নমস্কার করিয়া সমস্ত দেহ সজোরে দোলাইয়ু টং টং করিতে করিতে শালবনের পথে চলিয়া গেল । সেদিন হাটবার। পথে তখনই লোক-চলাচল বাড়িয়া উঠিতেছে । সাওতালদের মেয়ের মাথায় তিন-চারিট ঝুড়ি উপরি উপরি চাপাইয়া লালপেড়ে মোটা শাড়ীর চওড়া লাল অচল কোমরের পিছনে গুজিয়া ঋজুদেহ গতিচ্ছন্দের সহিত অল্প দোম ইয়া সারি সারি পথে বাহির হইয়াছিল । তাহীদের নিটোল কালো হাতে চওড়া শুভ্র শাখ, ঘণ তৈল-চিকুণ চুলে জব কি করবী ফুল। মেয়েদের ঝুড়িতে বেশীর ভাগই চাল কি চিড়, নয়ত লাউ-কুমড়া । হাটের পথিকদের ভিতর মেয়ের ভিড়ই বেশী । পুরুষ অল্পস্বল্প যা আছে, তাহার কেহ স্ত্রীর মাথায় গুরুভার বোঝাটি চাপাইয়া কোলের শিশুটিকে নিজে বুকে করিয়া চলিয়াছে, কেহ বা বাকের ভারে ঘাড় হেলাইয়ু ক্ষেতের " امم