পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\రిట్రB হইলে গৌড়মগুলের অধিপতি কতকগুলি হস্তী ললিতাদিত্যকে উপহার দিয়া তাহার মনস্তুষ্টি করিয়াছিলেন । রাজতরঙ্গিণীর অনুবাদক বিশ্ববিখ্যাত প্রত্নতত্ত্ববিৎ সত্ব অরেল ষ্টাইন ললিতাদিত্য কর্তৃক কান্তকুজ-জয় ব্যতীত অন্য কোন ঘটনা সত্য বলিয়া মানিয়া লইতে রাজী নহেন ; এবং স্বৰ্গত বন্দ্যোপাধ্যায় মহাশয়ের মতে ইহাই বোধ হয় প্রকৃত ইতিহাস । নেপালের পশুপতিনাথ-মন্দিরের পশ্চিম তোরণের পাশ্বে লিচ্ছৰী-বংশীয় নরপতি জয়দেবের একটি শিলালিপি হইতে জানিতে পারা যায় যে খ্ৰীষ্টীয় অষ্টম শতাব্দীর প্রথম ভাগে ভগদত্ত-বংশীয় কামরূপরাজ ঐহর্ষদেব বোধ হয় গৌড়, ওড্র, কলিঙ্গ ও কোশল অধিকার করিয়াছিলেন। কাশ্মীরের ঐতিহাসিক কহলণমিশ্র ললিতাদিত্যের পৌত্র জয়াপীড়ের বিজয়কাহিনীও লিপিবদ্ধ করিয়া গিয়াছেন। জয়াপীড় কান্তকুজরাজ বজায়ূধকে পরাজিত করিলে পর তাহার সৈন্যগণ র্তাহাকে পরিত্যাগ করিয়া স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করে, এবং তিনি ছদ্মবেশে পুণ্ডবৰ্দ্ধন নগরে গমন করেন । পুণ্ড বৰ্দ্ধন নগর তখন জয়ন্ত নামক এক জন সামস্তরাজের অধীন ছিল । ক্রমে জয়াপীড়ের প্রকৃত পরিচয় প্রকাশ হইয়া পড়িলে জয়ন্ত র্তাহার সহিত এক কন্যার বিবাহ দেন এবং জয়াপীড় জয়ন্তকে ‘পঞ্চ গৌড়ে'র অধীশ্বর করিয়া কাশ্মীরে প্রত্যাবর্তন করেন । অদ্যাবধি কোন সমসাময়িক লিপিতে জয়স্তের নাম পাওয়া যায়ু নাই ; ষ্টাইন সাহেবের মতে জয়াপীড়ের গৌড়বিজয়-কাহিনী সম্পূর্ণ কাল্পনিক। তাহার এই অনুমান প্রাচ্যবিদ্যামহার্ণব নগেন্দ্রনাথ বস্থ ব্যতীত অন্য সকল ঐতিহাসিক কর্তৃক সমর্থিত হইয়াছে। বিদেশীয় রাজগণ কর্তৃক বারংবার আক্রান্ত হইয়া সমস্ত দেশ প্রায় উৎসন্ন যাইতে বসিয়াছিল ; ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ভূস্বামিগণ রাজ্যলোভে সতত যুদ্ধবিগ্রহে লিপ্ত থাকিতেন, শশাঙ্কের মৃত্যুর পরে কোন রাজাই বোধ হয় আর মগধ, বঙ্গ, উড়িষ্যায় স্বীয় অধিকার দৃঢ় ভিত্তির উপর স্থাপন করিতে পারেন নাই। পূৰ্ব্বভারতের প্রজাবৃন্দ এই সকল কারণে দুর্দশার চরম সীমায় নীত হইয়া গোপালদেবকে রাজপদে বরণ করিয়াছিল। এত দিন বিভিন্ন রাজন্তবর্গের শিলালিপি ও তাম্রশাসনের বাক্যাংশ ও কবির কল্পনাপ্রস্তুত কাহিনী, বাংলায় মাংসস্বায়ের ইতিহাসের একমাত্র উপাদান ছিল। অধুনা শ্ৰীযুক্ত প্রবাসী Nరీ8Nలి কাশীনাথ নারায়ণ দীক্ষিত বগুড়া জেলার পাহাড়পুর ও মহাস্থানগড়ে এবং মুর্শিদাবাদ জেলার রাঙ্গামাটি নামক গ্রামে অবস্থিত ধ্বংসস্তুপগুলির মধ্যে যে খনন-কাৰ্য্য করিয়া আসিয়াছেন তাহাতে আমাদের বাংলার ইতিহাস সঙ্কলনের নূতন উপাদান আবিষ্কৃত হইয়াছে। তাহারই কিঞ্চিৎ বিবরণ লিপিবদ্ধ করা এই প্রবন্ধের মুখ্য উদ্দেশু। W3 পূৰ্ব্ববঙ্গ রেলপথে কলিকাতা হইতে ১৮৯ মাইল উত্তরে বগুড়া জেলায় পাহাড়পুর গ্রাম অবস্থিত। প্রায় ত্রয়োদশ বৎসর পূৰ্ব্বে কুমার শরৎকুমার রায়ের অর্থসাহায্যে শ্রযুক্ত কাশীনাথ নারায়ণ দীক্ষিত ও অধ্যাপক শ্ৰীযুক্ত দেবদত্ত রামকৃষ্ণ ভাণ্ডারকরের তত্ত্বাবধানে এখানে প্রথম খনন-কাৰ্য্য আরম্ভ হয় । কিন্তু প্রথম বার বিশেষ কিছুই আবিষ্কৃত হয় নাই ; তাহার পর দুই-এক বৎসর কৰ্ম্ম স্থগিত থাকিবার পর ভরাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায় একটি বৌদ্ধ মন্দিরের ধ্বংসাবশেষের কতকাংশ বাহির করেন । র্তাহার কৰ্ম্মাবসানের পর দীর্ঘ আট বৎসর ধরিয়া ঐযুক্ত দীক্ষিত এই স্থানের খনন-কাৰ্য্য সম্পূণ করিয়াছেন । ভারতীয় স্থাপত্য-শিল্পের ইতিহাসে এই মন্দির চিরস্মরণীয় হইয়া গিয়াছে। পাহাড়পুরের প্রাচীন নাম সোমপুর ; মন্দিরের পাশ্বস্থিত বিহারের অবশেষ খনন করিবার সময় ১৯২৭-২৮ সনে একটি দগ্ধমুক্তিকার মুদ্রিক ( seal ) ঐযুক্ত দীক্ষিত বাহির করেন। মুদ্রিকার উপরিভাগে একটি চক্র আছে এবং তাহার দুই পাশ্বে দুইটি হরিণ অবস্থিত। এই ধরণের মুদ্রা পাল-সম্রাটগণের বহু শাসনে পাওয়া গিয়াছে। ধৰ্ম্মচক্রের তলে প্রাচীন নাগরী অক্ষরে ও সংস্কৃত ভাষায় লিখিত আছে—এই মুদ্রিকাটি ‘সোমপুরের ঐধৰ্ম্মপালদেব মহাবিহারের আধ্য ভিক্ষু সঙ্ঘের' । ভগ্ন ইষ্টকরাশি ও মৃত্তিকা অপসারণের সময় এই মহাবিহারের ইতিহাসের আরও দুই-একটি উপাদান পাওয় গিয়াছে । তাহার মধ্যে ১৫৯ গুপ্তাব্দে ( খ্ৰীষ্টীয় ৪৭৮-৭৯ অক্টে) লিখিত একটি তাম্রশাসন বিশেষ মূল্যবান। এই তাম্রপটে লিখিত হইয়াছে যে, বটগোহালী গ্রামস্থ গুহনী ও তাহার নিগ্রন্থ শিষ্যদিগের অর্চনার নিমিত্ত জনৈক ব্রাহ্মণদম্পতি একখণ্ড ভূমি দান করিয়াছিলেন। এই বটগোহালী