পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8లెరి গেল। অতি কৰ্তর সহানুভূতির সহিতই সকলে তাহার মৃত্যু-প্রতীক্ষায় দাড়াইয়া ছিল। মধ্যে মধ্যে দুই-চারিটি কথা এখান-ওখান হইতে বুজুদের মত উঠয় মিলাইয়া যাইতেছিল। —কি হয়েছে—কেয়া হুয়! হায় ? কোন উচ্চ বলিষ্ঠ কণ্ঠের প্রশ্নে জনতা চকিত হইয়া উঠিল। আমিও মুখ তুলিয়া দেখিলাম আমার সম্মুখেই পশুটির ওপাশের জনতার পশ্চাতে সকলের মাথার উপর এক অস্বাভাবিক মূৰ্ত্তি। মাথায় তাহার বিশৃঙ্খল দীর্ঘ রুক্ষ চুল, দীর্ঘ শ্মশ্র গুফে সমাচ্ছন্ন মুখ, চোখে প্রখর দৃষ্টি, সে মূৰ্ত্তি দেখিয়া ভয় হয় । তাহার দিকের জনতা সরিতে আরম্ভ করিল। সে আবার প্রশ্ন করিল—কেয়া হুয়া হায় ? কে উত্তর দিল—একটা কুকুর মরেছে। অকস্মাৎ সে চীৎকার করিয়া উঠিল—মরছে ! তাহার সম্মুখের জনতা তখন সম্পূর্ণরূপে সরিয়া গিয়াছে। তাহার সর্ব অবয়ব দেখিতে পাইলাম। এক বিশালকায় পুরুষ, প্রায় নগ্নদেহ, কোমরে গামছার মত এক ফালি কাপড় মাত্র কোন রূপে জড়ান আছে, দেহের প্রত্যেক পেশীটি সবল এবং দৃঢ় । পিঠে একটা ছোট পুটুলীর মত কি বাধা রহিয়াছে আর হাতে এক প্রকাও লাঠি। লাঠিগাছটা ফেলিয়া দিয়া সে অবর্ণনীয় আকুলতার সহিত ওই মৃত্যুমুষ্টিনিপীড়িত জীবশিগুটির বুকের উপর ঝুকিয়া পড়িয়া একাগ্র দৃষ্টিতে কুকুরটার মৃত্যুযন্ত্রণ দেখিতে লাগিল । কে মৃদুস্ববে বলিল—পাগলের খেয়াল ! কে এক জন পাগলকে রহস্য করিয়া বলিল—বাবুজী ডাগদার বোলাই ? পাগল মুখ তুলিয়া বিপুল ব্যস্ততার সহিত বলিল হা-ই; জলদি জলদি । একঠো রাজ দে দেঙ্গে হাম ! জলদি ! আবার সে কুকুরটার উপর ঝুঁকিয়া পড়িল । কুকুরটার আৰ্ত্তনাদ স্তন্ধ হইয়া আসিয়াছে । দেহে তথন মুতু্য-আক্ষেপ দেখা দিয়াছে, মধ্যে মধ্যে সমস্ত দেহটাকে টানিয়া টানিয়া সে ইা করিতেছিল। দেখিতে দেখিতে একটা সুদীর্ঘ আক্ষেপে দেহটাকে টানিয়া পশুটা স্থির হইয়া গেল । কে এক জন বলিয়া উঠিল—ব্যস্ হো গিয়া ! পাগল চীৎকার করিয়া প্রশ্ন করিল—অ্যা—হো গিয়া ? তার পর কুকুরটার দেহের উপর শূন্যমগুলে দুই হাত প্রসারিত করিয়া কি যেন খুজিতে আরম্ভ করিল। ঐ ভদীতেই সে ধীরে ধীরে খাড়া হইয় উঠতেছিল। সোজা হইয়া দাড়াইয়া সে জনতার দিকে চাহিয়া প্রশ্ন করিল— কিধার গিয়া ? কিধার গিয়া—অ্যা ? উচ্চরোলে জনতা এবার হাসিয়া উঠিল, পাগল তখন প্রবাসী $ శ్రీ 3 S) ফিরাইয়া লইয়া সবেগে মাখা নাড়িতে নাড়িতে চীৎকার করিয়া উঠিল—আরে ফু-ফু-জারে ফু | লাঠি তাহার পড়িয়া রহিল। দীর্ঘ পদক্ষেপে অতি দ্রুত সে চলিতে আরম্ভ করিল। চলিতে চলিতে সে সবেগে মাথা নাড়িতে নাড়িতে বারবার তখনও প্রাণপণে ফুৎকার দিতেছিল—আরে ফু-ফু—জারে ফুঃ ! বাড়ীর মধ্যে আসিয়াই বড়মামাকে প্রশ্ন করিলাম -একটা পাগল দেখলাম বড়মামা, ফু-ফু করতে করতে চলে গেল । বড়মামা বলিলেন—আরে উনিই হচ্ছেন রসরাজবাৰু, আমাদের বাঙালী ব্রাহ্মণ রসরাজ ঘোষাল। পাগল হয়ে গেছেন । দিদিমা এইসময় সেখানে আসিয়া পড়িলেন—তিনি বলিলেন—কে রে ? —রসরাজ পাগলের কথা হচ্ছে মা ! দিদিমা বলিলেন—কালীসাধনা করতে গিয়ে উনি পাগল হয়ে গেছেন। মা আসবার আগে নানা বীভৎস ভয়ঙ্কর মূৰ্ত্তি আসে কিনা সাধককে ভয় দেখাতে। তাই এক মূৰ্ত্তি দেখে উনি ফু-ফু করে আসন ছেড়ে উঠে পড়েছিলেন। সেই অবধি অহরহ ফু-ফু ক’রেই বেড়ান। বড়মামা বলিলেন—লোকে বলে ওই কথা, তবে ওদের ংশটাই যে পাগলের বংশ। ওর মা ছিলেন অল্প পাগল, এক বোন ছিল পাগল। এক ভাই ছিল, তারও মাথা খারাপ ছিল। তবে কেউ ওর মত উন্মাদ ছিল না।...রসিকবাৰু শিক্ষিত লোক-বি-এ পড়তে পড়তে পাগল হয়ে গেলেন । দিদিমার কথাটাই বিশ্বাস করিতে আমার ভাল লাগিল, মনে মনে নান কল্পনা করিলাম সমস্ত দিন। সেদিন অপরান্ত্রে ন-মামার সহিত বেড়াইতে বাহির হইলাম। আমরা দু-জনে প্রায় সমবয়সী। গঙ্গার কূলে কূলে অপ্রশস্ত একটি রাস্ত, সেই রাস্ত ধরিয়৷ চলিয়াছিলাম। পাগলকে সেখানে আবার দেখিলাম, সে তাহার অভ্যন্ত দীর্ঘ সবল পদক্ষেপে দ্রুতবেগে বিপরীত দিক হইতে আমাদের দিকেই আসিতেছিল । ন-মাম তাহাকে প্রশ্ন করিয়া বসিলেন—কি রসদ, কোথায় যাবেন ? পাগল থমকিয়া দাড়াইল । কিছু ক্ষণ মামার মুখের দিকে চাহিয়া থাকিয়া বলিয়া উঠিল—মর ষায়েগা ! আমরা হতভম্ভ হইয়া গেলাম। পাগল আমাদের মুখের দিকেই চাহিয়া ছিল, সে জাবার চীৎকার করিয়া বলিয়া উঠিল—সব কুছ—বিলকুল—তামাম দুনিয়া ! আমি ভাবিতেছিলাম ছুটিয়া পলাইব কি না ! ন-মামাও ভয় পাইয়াছিলেন। কিন্তু কিছুই করিতে হইল না, পাগলই আমাদের নিষ্কৃতি দিল । পরমুহূৰ্বেই সে আরম্ভ করিল—জারে ফু-জারে ক্ষু, ফু-ফু-ফু ! সঙ্গে সঙ্গে সে দ্রুতবেগে চলিয়া গেল । BBBB BBBBB BB BBBS BBBB B D BBB BB BB BBB BBB BBBB BBBB BBB