পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

سيBot: প্রবাসী sNこ8Nご আনয়ন করা হইয়াছে নিরপেক্ষভাবে তাহার বিচার করা দরকার। তৎপূৰ্ব্বে একটা কথা বলিয় রাখিতেছি যে, বিশ্ববিদ্যালয়ের আভ্যন্তরীণ শাসন-ব্যাপারে এখনও যেসব ক্রটিবিচ্যুতি আছে, এই আন্দোলনকারীরা সে-সব বিষয়ে কোনও উচ্চবাচ্য করেন নাই। সেরূপ করিলে দেশবাসীর বিশেষ উপকার হইত, বিশ্ববিদ্যালয়ও দোষমুক্ত হইতে পারিত। তাহারা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশোধনের জন্ত কোনও গঠনমূলক প্রস্তাব পেশ করিতে পারেন নাই । কেবলমাত্র অনুরোধ জানাইয়াছেন, সরকার বাহাদুর যেন বিশ্ববিদ্যালয়ে হস্তক্ষেপ করেন । এই অনুরোধই র্তাহাদের গোপন উদ্দেশ্য নগ্নমূৰ্ত্তিতে প্রকটিত করিয়াছে। বলিয়াছি, বিশ্ববিদ্যালয়কে দোষমুক্ত করা তাহদের মূল উদ্দেশ্য নহে, যেন-তেন-প্রকারে উহার বিরুদ্ধে একটা আন্দোলন খাড়া করিয়া উহার স্বাতন্ত্র্যটুকু নষ্ট করাই হইল এই আন্দোলনের মূল অভিপ্রায় । বিশ্ববিদ্যালয়-সংক্রাস্ত কোন বিষয়েষ্ট তাহদের কোন অভিজ্ঞতা নাই । চাকরি-সৰস্ত অথবা ব্যবস্থাপক সভার জন্য আসিম-সমস্ত এক বস্তু আর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত একেবারে ভিন্ন বস্তু। এই দুহ বস্তুকে একাসনে রাথিয় একই দৃষ্টিতে দেখিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সৰ্ব্বনাশ সাধিত হইবে। কিছুদিন পূৰ্ব্বে একটি প্রবন্ধে লিপিয়াছিলাম যে, বাংলসাহিত্যের উপর হিন্দুদের যে এত প্রভাব তাহ হিন্দুদের পক্ষ হইতে কোনরূপ ষড়যন্ত্রের ফলে নহে। তাহ নিতান্ত সহজ ও স্বাভাবিক ভাবেই হইয়াছে । বিশ্ববিদ্যালয়ের বেলায় হিন্দুদের ঠিক সেই কথা কলিকত। প্রযোজ্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর প্রভাব যে প্রবল তাহ আমরা অস্বীকার করি না। কিন্তু আমাদের বিশ্বাস, তাহা কোনও ষড়যন্ত্র বা চক্রাস্তের ফলে হয় নাই, তাহাও সাহিত্যের মত স্বাভাবিক ভাবেই হইয়াছে। প্রথম যুগ হইতেই মুসলমানদের অবহেল, উদাসীনতা এবং প্রাচীন পন্থা ও গতানুগতিকতাকে দৃঢ়ভাবে ধরিয়া রাধিবার জন্যই বিশ্ববিদ্যালয় হঠতে মুসলমানরা “নির্বাসিত” হইয়াছে। সেই যুগ হইতে আজ পর্য্যস্ত মুসলমানদের মক্তব-মাদ্রাসা ও মধ্যযুগীয় শিক্ষার প্রতি আগ্রহ একটুও কমে নাই। ইংরেজী ভাবধার প্রচারের একমাত্র প্রতীক বিশ্ববিদ্যালয়কে তাহারা কোনও দিন স্নেহের চক্ষে দেখেন নাই। সময়ের সহিত তাল রাখিতে না পারিয়া মুসলমানরা একটা মস্ত সুযোগ হারাইয়াছে। হিন্দুরা সে স্থযোগ ত হারায় নাই, বরং তাহার সদ্ব্যবহার করিয়া নিজেদের কার্য্য সিদ্ধ করিয়া লইয়াছে, এটা কি তাহাদের মস্ত বড় অপরাধ ? স্বতরাং বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর হিন্দুদের যে প্রাধান্ত হইয়াছে তাহাকে উহাদের “হীন ষড়যন্ত্র, চক্রান্ত” ইত্যাদি বলিয়া বর্ণনা করা নিতান্ত অন্যায়। তাহদের এই প্রাধান্ত কোন চক্রান্তের ফলে প্রতিষ্ঠিত হয় নাই । তাছা সম্ভব হইয়াছে একেবারে স্বাভাবিক ভাবে ও স্বাভাবিক অবস্থার মধ্যে । যখন দেশের প্রত্যেক স্তরে সাম্প্রদায়িকতার বিষ ছড়াইয় পড়িয়াছে, সেই সময় আবার নূতন করিয়া সাম্প্রদায়িকতার অনলে ইন্ধন জোগাইয় দেওয়া ঘোর অন্যায়। ইহাতে মুসলমানদের অগ্রগতির পথে অভিনব বাধা উপস্থিত হইবে। রাজনীতির সাম্প্রদায়িকতাকে সাহিত্যে আমদানি করিলে সৰ্ব্বত্র যে কুফল হয়, মুসলমানদের বেলায়ও তাঙ্গই হইবে। ইহাতে সত্যকারের সাহিত্যচর্চায় ত ব্যাঘাত ঘটবেঙ্গ, তাছাড়া ধৰ্ম্মান্ধত আসিয়া সমাজের ভবিষ্যৎ-দৃষ্টিকে কলুষিত করিয়া দিবে। সাহিত্য সমগ্র জগদ্বাসীর উপভোগের সামগ্রী । যদি কোথাও দেশ কাল ধৰ্ম্ম ও জাতির বিচার ন৷ থাকে তবে তাহ সাহিত্যজগতে । রচনা প্রকাশিত করেন, তখন তাহা হইয় পড়ে সার; বিশ্বের সম্পদ । বিশ্ববাসী তাহা হইতে রসাস্বাদন করিতে থাকে । তাতীর ধৰ্ম্মভাব দ্বারা কেহই বিপ্রাস্ত হয় না। রচনার নিজস্ব গুণ না থাকিলে তাত বেশ দিন টিকে না, কিন্তু রচনার মধ্যে প্রকৃত সম্পদ থাকিলে তাহা কালজয়ী হয়। ‘পিলগ্রামস প্রোগ্রেস', 'প্যারীড়াঙ্গজ ল%', 'প্যারাডাইজ রিগেও', 'ইমিটেশন অব ক্ৰাইষ্ট প্রভৃতি ধৰ্ম্মভাবমূলক অমূল্য পুস্তক পড়িয়া ভারতের কোনও হিন্দু অথবা মুসলমান, খ্ৰীষ্টানধৰ্ম্ম গ্রহণ করিয়াছেন অথবা তং প্রতি আকৃষ্ট হইয়াছেন, এমন কথা কেহই বলিতে পারেন না । আবার কালিদাস, ভবভূতি প্রভৃতি কবিগণের অমর গ্রন্থ পড়িয়া কেহ “গুপ্তি" হষ্টয়া যান নাই, অথবা হিন্দুধৰ্ম্মের অন্ধপূজকও হন নাই। ঠিক সেইরূপ ফিরদৌসী, হাফেজ, রুমী, ওমর খৈয়াম পড়িয়া কোনও অমুসলমান ইসলামের শাস্ত শীতল ছায়ার তলে আশ্রয় লইতে আসেন নাই। যদি কেহ ভক্ত হইয় থাকেন, কোনও লেখক যখন স্বায়