পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্রণবণ অলখ-ঝেণরণ な等奪 মুখ দেখতে দিত না, সিথি কেটে চুল বাধতে দিত না, পাছে রূপের গুমোর শিথি ।” বড় জা বলিতেন, “আচ্ছ, ঠাকুরপোকে বলব এবার আয়নায় ঘর মুড়ে দিতে। প্রাণে যত রকম সাধ আছে মিটিয়ে নিস ; যুগল রূপের ছায়াও মন্দ দেখাবে না।" কুধ সেষ্টপানেই পিঠ ফিরাইয়া বসিয়া থেলিতে পেলিতে সকল কথা শুনিত আর ভাবিত, ভগবান আমাকে সুন্দর করেন নাই তাহাতে কাহার কি ক্ষতিটা হুইল ? আবার ভাবিত, ‘আমি সুন্দর হ'লে আমার মা বাবা যে এত সুন্দর তা বুঝতে পারতাম না । আমার মত সুন্দর বাপ মা কারুর নেই।" মামার বাড়ীতে যখনই মেয়েদের জুটল হইত, তখনই দেখা যাইত, খানিকক্ষণ হাসি-তামাসা ৪ ঘর-সংসারের স্বথদু:গেব গল্পের পর গল্পের ধীণ অকস্মাং মোড় ফিরিত । মেয়েদের গলা নীচ ইষ্টয় আসিত, দরেব সঙ্গিনীরা অনেকটা কাচে, আগাইয়। বসিতেন, বোঝা যাইত, এইবাৰ গল্লট সব কয় জনেরই সমান চিন্তাকর্মক হইয়া উঠিয়ছে । কিন্তু শুধ-শিবুর কাছে এই বারেই তাহা দুৰ্ব্বোধ হইয় পড়িত । সুধ বুঝিতে পরিত, থাকিয়া থাকিয় কোনও একজন পুরুষের কথা উঠিতেছে, যাঙ্গর নামটা বারংবার উচ্চারণ করিতে মেয়েদের একটু ভয় আছে । ন-জানি কে শুনিয়া ফেলিবে । আকারে ইঙ্গিতে কিন্তু সব গল্পটাই হইয়। যাইত । মাতুষটা কি একটা ঘোরতর অন্যায় কাজ করিয়াছে, নীচু গলায় চোখ বড় বড় করিয়া সকলে তাহারই গল্প ঘোরালো করিয়! তুলিত । কিন্তু এত বড় অন্যায়ের আলোচনায় সব চেয়ে আশ্চর্যোর বিষয় এই যে প্রায় সকলেই থাকিয়া থাকিয়া মুচকিয় হাসিয়া উঠিত। মানুষের অপরাধের ভিতর আনন্দরস কোথ; হইতে আসে ভাবিয়া মৃধা কত সময় অবাক হইয় মাসী ও মামীদের মুখের দিকে তাকাইয়া থাকিত কিন্তু তাহার উপস্থিতিটাকে বিশেষ কেহ গ্রাহা করিত না, কেহ ফিরিয়া তাহার দিকে তাকাইতও না । মাঝে মাঝে মহামায় এক-একবার বলিয়া উঠিতেন, “মধা, যা দিকি এখান থেকে, বুড়োদের কথা যত ষ্টা ক'রে গিলতে হবে না। বিশ্বের ছাইভস্ম !” মাহুষের বয়স বাড়িলে এই জাতীয় বুড়োমি গল্প যে পৃথিবী জুড়িয়া অধিকাংশ লোকেই করে, তাহা সুধা তখনও বুঝিতে শিখে নাই । সে মনে করিত, জগতের যত সামাজিক অপরাধ তাহার মামার বাড়ীর পাড়ার বিশেষ কয়েকটি লোকই বোধ হয় করিয়া থাকিবে, তাই এই বাড়ীতে এই অপরাধের এত আলোচনা । তাহার ইতিপূৰ্ব্বে ধারণা ছিল, সামাজিক আইন সম্বন্ধে শিশুরাই অজ্ঞ, তাই তাহারা না জানিয়া কাহাকেও আঙুল দেখায়, কাহাকেও মুখ ভেঙায় কিংবা কাহাকেও বা পথে শোনা দুই-একটা গালাগালি উপহার দিয়া বসে। বয়স্ক লোকে জানিয়া শুনিয়া সমাজের কাছে এক সঙ্গে অপরাধী ও হাস্যাম্পদ কেন হইয়া বসে ভাবিয়া সে কুল-কিনারা পাইত না । বয়সে মানুষের বুদ্ধি তাহ! তুষ্টলে বড়ে ম{ । বডমামী পাৰ্ব্বতীর একটু বিশেষত্ব ছিল, সৰ্ব্বদা গল্পগুলিকে এই পথে টানিয়া লইয়। যাইবার ক্ষমতায় । ছোটমামীর যেমন রূপের অহঙ্কার ছিল, বড়মামীর তেমনই ছিল শালীনতার । যখন তপন তাহার মুথে পাড়ার মেয়েদের নামে শোনা যাইত, আর বঁচি না।” “ভাবুনী"দের তিনি দু-চক্ষে দেখিতে পারিতেন ম। তাই বোধ হয় নিজে কখনও একথান ভাল কাপড় কি গহন পরিতেন না। চুলটা মাথার উপর উবু বুটি করিয়া বাধিয়া মোট একখানা শাড়ী জড়াইয়া সকাল সন্ধ্য। তাহার কাটিত । মুখে হাসির অভাব কখনও দেখা যাইত না, কিন্তু আর কোনও ভূষণের ধার তিনি দারিতেন না। পান্ডার নম্মদাদিদির স্বামীর গল্প মহিলা-মজলিশে প্রায়ই হইত। সে যে ঠিক কি করিয়াছিল, সেটা ভাষায় কেহ ব্যক্ত করিত ন বলিয়া মৃধ অপরাধটা বুঝিতে পাতি না ; তবে মাতৃষটার মত মন্দ লোক পুথিবীর ভদ্রসমাজে আর যে নাই এ-বিষয়ে হ্ধ স্থিরনিশ্চয় হইয়াছিল। কিন্তু লোকাচার সম্বন্ধে স্থধার জ্ঞান সম্পূর্ণ পাণ্টাইয় গেল যেদিন সে দেখিল যে নম্মদাদিদির স্বামী উপেনবাবু পূজা উপলক্ষ্যে শান্তিপুরে ধুতি চাদর পরিয়া ফুলবাবুটি সাজিয়া বাড়ী বাড়ী প্ৰণাম করিয়া বেড়াইতেছেন । বড়মামী মৃদ্ধ তাহাকে কত ঘটা করিয়াই ন? অভ্যর্থনা করিতে আসিলেন । অন্য মামীর জামাইয়ের সামনে মুখে ঘোমটা দিলেও সাতদিক্ হইতে সাতজন সন্দেশ জল পান যোগান দিতে লাগিলেন । যে

    • মেয়ের ভাবন দে’থে