পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৬৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

&6.8 প্রবাসী SN28Nジ প্রতিবেশিনী ঠোট বাকাইয়া বলিল, ওঁ-তোর গৌরী তথাপি প্রতিবাদ করিল, ইঃ, পরের বই কি ? বর বুঝি ? আমাকেই ত দিয়েছে । ধ্যেৎ—বলিয়া গৌরী ভ্ৰকুটি করিয়া ছুটিয়া পলাইল । ক্ষণপরে গৌরীর মা গরুকে জীব দিতে আসিলে প্রতিবেশিনী বলিল, কি লো, শিব নাকি জামা দিয়ে গেছে ? দিব্যি জামা দেখলুম। তাই বলছি বরাত তোর ভাল । মেয়ের দৌলতে সোনাদানার মুখ দেখবি, রাজরাণীর স্বথে থাকবি । গৌরীর ম: বলিল, আমার মুখ চাই নে দিদি, গৌরী সুখী হলেই হ’ল । প্রতিবেশিনী বক্র হাসি হাসিয়া বলিল, ওই হ’ল ! পোর নামে পোয়াতি বৰ্ত্তায় । সুন্দরী মেয়ে—বুড়ে বয়সে তোদের ব্যাঙ্কের পুজি ! তা কত টাকা বায়ন দিলে ? —বায়না কিসের, দিদি ? বিস্মিতা হেমাঙ্গিনী সপ্রশ্ন দৃষ্টতে চাহিল। —নেকী ! কিছুই জানেন না ! জিজ্ঞেস করিসূ শস্তুকে— সে জানে । —সত্যি দিদি, আমি কিছু বুঝতে পারছি নে – —মরণ দশা! এত ন্যাক যারা তাদের আবার এ পথে আসা কেন ?—বলিয়া ফিস্ ফি করিয়া কি বলিতেই–‘ছি’ বলিয়া হেমাঙ্গিনী পিছন ফিরিল। 壽 籌 磡 গলির গায়েই খোলার চালা। একটি মাত্র নাতি প্রশস্ত জানাল দিবারাত্র থোলা থাকে। ছোট ঘর, মাটির দেওয়াল, মাটির মেঝে । জানালার ধারে তক্তপোষের উপর আড়ম্বরহীন বিছানা পাতা । গোটা দুই তাকিয়া ও ঝালর-দেওয়া মাথার বালিশ দু-টা ; বালিশের পাশে একথান তালের পাখা ৷ তক্তপোষ বাদ দিলে যে-টুকু মেঝে দেখা যায় পরিষ্কার করিয়া নিকানে। হেমাঙ্গিনী দরিদ্র হইলেও পরিচ্ছন্নতার দিকে প্রখর দৃষ্টি আছে । উপরের জানাল হইতে গলি যেমন স্পষ্ট দেখা যায় — ঘরের মধ্যে তক্তপোষে আসিয়া বসিলেও ভিতরের দুগু দেখিতে কিছু মাত্র অসুবিধ বোধ হয় না। কথা পৰ্য্যস্ত স্পষ্ট শোনা যায় । গলি হইতে ফিরিয়া হেমাঙ্গিনী ঘরের মধ্যে ঢুকিল । গৌরী তক্তপোষের উপর পুতুল সাজাইয়াখেলা করিতেছিল— মাকে দেখিয়া বড় একটা পুতুল দেখইয়া কি বলিতে যাইতেছিল--হেমাঙ্গিনী বাধা দিয়া বলিল, পুতুল রাখ, জামাটা খোল দেখি । গৌরী বলিল, বা রে, এখন খুলব কেন—সেই নাইবার সময় । শাসনের স্বরে হেমাঙ্গিনী বলিল, খোল বলছি। পরের জামা গায়ে দিয়ে আর আদিখ্যেতা করতে হবে না, খোল । হেমাঙ্গিনী অসহিষ্ণু উচ্চ কণ্ঠে বলিল, আবার মুখের ওপর কথা, খোল হতভাগা মেয়ে ! দিয়েছে ? তোর সাত পুরুষের ফুটুম তোকে জামা দিয়েছে ! খোল, আজ এলে যার জামা তাকে ফিরিয়ে দেব । গৌরী কাদিতে কাদিতে জামা খুলিয় রাগ করিয়া তক্তপোষের এককোণে ছুড়িয়া ফেলিয়া বলিল, এই নে তোর জামা, দিস ফিরিয়ে—তার গায়ে ছাই হবে । কথাটা হেমাঙ্গিনীর মনে লাগিল । ছোট মেয়ের জাম সে কি করিবে । ফিরাইয়া দিতে গেলে হয়ত রাগ করিবে । তা রাগ করিবে বইকি । যাহার আভিজাত্য স্মরণ করিয়া হেমাঙ্গিনী মাটির ঘরে বসিবার আহবান পৰ্য্যস্ত জানাহঁতে পারে নাই—জামা ফিরাইতে গেলে তাহাকে রীতিমত অপমান করা হইবে বইকি । সে যে অসৎ এই কথাটাই হেমাঙ্গিনী বার-বার ভাবিতেছে । কোথাকার কার কথা শুনিয়া হেমাঙ্গিনীর মন এমন তিক্ত হইয়া উঠিয়াছে যে এমন সুন্দর সকালবেলার যত কিছু সৌন্দৰ্ঘ্য প্রতিদিনকার আনন্দভরা কাজকৰ্ম্ম সকলই কেমন বিস্বাদ হইয়া গিয়াছে। দরিদ্রের উপরে দয়া যাহারা করে, তাহদের অস্ত:করণের মহকুকে সন্দেহ করা হেমাঙ্গিনীর উচিত মতে । মেয়ের রোরুদ্যমান মুখের পানে চাহিয়া হেমাঙ্গিনী থানিকক্ষশ ধরিয়া এই সব কথাই বোধ করি ভাবিল। তারপর জামাট তুলিয়া লইয়৷ গৌরীর নিকটে আসিল ও তাহার মাথায় একখানি হাত রাপিয়া স্নিগ্ধস্বরে বলিল, নে গায়ে দে জাম । বোকা মেয়ে, তোকে রাগাচ্ছিলাম বুঝতে পারলি নে । o 事 爭 সন্দেহের বীজ একবার উপ্ত হইলে অঙ্কুরিত না হহয়! পারে না । মেয়েকে সুন্দর করিয়া সাজাঙ্গতে হেমাঙ্গিনী দিবসের অনেকখানি সময়ই নষ্ট করে । কাপড় পরাইবার কোন ভঙ্গীটি মনোজ্ঞ, চুলের কোনখনিট র্যাপাষ্ট্রয় রাখিলে মুখখানিকে পদ্মফুল বলিয়া ভ্রম হইবে, টিপটি কপালেং মাঝখানে যুগ্মভ্রর সমাস্তরালবত্ৰী করিয়। অতি সক্ষ ভাবে অাকিয়া দিলে দেবীপ্রতিমার মত দেখাইবে—এ-সব বিষয়ে হেমাঙ্গিনীর প্রথর দৃষ্টি থাকিলেও মেয়েকে সে চোখে চোপে আগলাইয় ফেরে। যেমন সে গলিতে গরুর কাছে আসিয়া দাড়াষ্টয়াছে অমনই দেথা যায় হেমাঙ্গিনা কাঞ্জের অছিলাম দোরগোড়ায় উকি মারিতেছে ; যেন গলিটার খবরদারী না করিলে তাহার প্রধান একটি কাজের অঙ্গহানি হইবে । ছেলেটি যখন আসে তখন ত হেমাঙ্গিনীর সব কাজই পড়িয় থাকে । গৌরীকে গল্প করিতে দিয়া সে অস্করালে দাড়াইয়৷ উহাদের ভাবভঙ্গী লক্ষ্য করে। উহাদের গল্প শোনে--