পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

& Go দুঃখ-দুৰ্দ্দশার ছবিতে রঙ ফলাইতে আরম্ভ করে । বিশেষ করিয়া শস্তুর মত দরিদ্রের। উঠিবার সময় ছেলেটি অভিভূত শস্তুর হাতে একখানি দশ টাকার নোট দিয়া বলিল, নাও, কিছু ভাল খাবার আনিয়ে খেয়ো । তীব্র আনন্দের বেগ ফেরিওয়ালা শম্ভু সহ করিতে পারিল না, চোখে তাহার জল আসিল এবং অঙ্গুলিধূত নোটথানা থর থর করিয়া কঁাপিতে লাগিল । মুখ তুলিয়া কি বলিতে গিয়া দেখে ছেলেটি সেখানে নাই। শস্তু চীৎকার করিয়া হেমাঙ্গিনীকে ডাকিল, সেদিক হইতে কোন উত্তর না পাইয়া বকিতে বকিতে শতু বাড়ীর মধ্যে ঢুকিল । 登 登 臺 বাড়ীর মধ্যে মানে সেই ঘরে যেখানে হেমাঙ্গিনী বিছানা ঝাড়িতেছিল—শভূ নোটখানা সদ্যপাত চাদরের উপর ফেলিয়া দিয়া বলিল, দেখ, হিমি, দেখ–খুব ভাল লোকের ছেলে না হ’লে এমন হয় । হেমাঙ্গিনী নোটখানার পানে চাহিয়াঙ দেখিল না,— আপন মনে কাজ করিতে লাগিল । শঙ্কুর রাগ হইবার কথা, কিন্তু আনন্দের চড়া স্বরে মন বাধা ছিল বলিয়। সে সহজ ভাবেই রসিকতা করিল, মৰ্ব মাগী কাজের গুমোরে চোখে দেখতে পায় না । এইবার হেমাঙ্গিনী ঝাঝিয়া উঠিল, আমার কাজগুলো তুমি করে দেবে কিনা! ও-সব বড়মান্তী গল্প শোনবার আমার অবসর নেই। টাকা ? যে টাকা দেখে নি সে-ই জুল-জুল ক’রে চেয়ে দেখুক । শম্ভু বুঝিল, হেমাঙ্গিনী তাহাকে তাচ্ছিল্য করিয় ঐক্ষপ কড়া কথা বলিতেছে । সে আর সহ করিতে পারিল না— ঝাপাইয়া হেমাঙ্গিনীর উপর পড়িয়া তাহার চুলের ঝুটি ধরিয়া টানিয়া আনিল ও নিৰ্ম্মম ভাবে প্রহার করিতে করিতে বলিল, তবে রে হারামজাদী—বড় টাকার গুমোর হয়েছে তোর ? নবাবের বেটী....অভিধান-বহিভূত আরও অনেক সম্বোধন করিল। হেমাঙ্গিনী টু শব্দটি করিল না। প্রহার-শেষে শস্তু ই পাইতে লাগিল—হেমাঙ্গিনী যেন কিছুই হয় নাই এমন ভাবে বিশৃঙ্খল চাদরখানা টান-টান করিয়া পাতিতে লাগিল । পরের দিন গৌরী তাহার সিস্কের ডোরাকাটা জামা গায়ে দিতে গিয়া চীৎকার করিয়া কাদিয়া উঠিল । শস্তু ছুটিয়া আসিয়া বলিল, কি রে, কি হ’ল ?—রোরুদ্যমানা বালিকা দু'টি হাত দিয়া স্বন্দর জামাটি মেলিয়া ধরিয়া ভাঙা গলায় বলিল, দেখ না, বাবা, কে ছিড়ে দিয়েছে । হাত দিয়া টানিয়া ফাসাইয়া দিলে যেমন হয় তেমনই বিত্ৰ ভাবে জামাটা ছিড়িয়াছে । শস্তু গৌরীর হাত হইতে জামাটি লইয়া উলটাইয়া পালটাইয়া বন্ধক্ষণ দেখিল । দুঃখটা প্রবাসী ১৩৪৩ গৌরীর চেয়ে তাহকে যেন বেশী বাজিয়াছে এমনই ভাবে জামার পানে চাহিয়া সে দীর্ঘনিশ্বাস ফেসিল । গৌরী কাদিতে লাগিল, শম্ভু কি বলিয়া সত্ত্বেনা দিবে ঠিক করিতে না পারিয়া বলিল, ও বেল বাবু এলে চেয়ে নিস আর একটা । হেমাঙ্গিনী কোথায় আছে বোঝা গেল না । কেন-ন, এতবড় ক্ষতির বিরুদ্ধে সে কোন মন্তব্যই করিল না । দুপুরে গৌরী সেই ঘরে আসিয়া হেমাঙ্গিনীকে বলিল, আজ আমার চুল বেঁধে দিবি নে ? বা রে! হেমাঙ্গিনী বলিল, রোজ-রোজ চুল বঁধে না, যা । গৌরী নাকে র্কাদিতে কাদিতে বলিল, বা রে,--আমি বুঝি বেড়াতে যাব না ? হেমাঙ্গিনী বিরক্ত হইয়া মেয়ের পিঠে দুৰ্ম্ম করিয়া এক কিল বসতিয়া দিয়া বলিল, চুলোয় যাবি, আয় ।--বলিয়া টানিয়া বসাইয়া কয়েক মিনিটের মধ্যেই কবরী-রচনা শেষ করিয়া দিল । গৌরী কাদিতে কঁাদিতে বলিল, উঃ, এমন টান-টান করে বেঁধেছ চুল যে মাথায় লাগছে । দাতে দাঁত রাখিয়া হেমাঙ্গিনী বলিঙ্গ, এখন থেকে বাঙ্গার না দিলে মেয়ের মন ওঠে না ! পাতা কেটে চুল বঁধব, টিপ পরব, সিস্কের জামা গায়ে দেব-ভাবন কত— গেীরী বলিল, বা রে, নিজেই বকেন ধুলো মাথলে-— আবার নিজেই— —ই। বকি । তোমায় ত পেত্নী সেজে থাকতে বলি নে, যদিও পেত্নী সেজে থাকাই তোর উচিত। রূপ । রূপ ! ও রূপের জন্যে তোর যদি শতেকথোয়ার না হয়-- টান-টান থোপা বঁধ, গায়ে সামান্য সুতার আধ-মধুলা জাম, মুখখানি বিষন্ন, তবু গৌরীকে স্বন্দরী নং বলিয়া উপায় নাই । বুধি গরুর কাছে সে ধীরে ধীরে আসিয়া দাড়াঙ্গল । ওদিকের দুঃর হইতে সেই প্রতিবেশিনী বলিল, ও মা, ও কি ছিরি । যেমন থোপা বঁধার ঢং তেমনই জাম। পরানোর বাহার । তাঞ্জার হোক একটা বড়লোকের ছেলের سمسـة عتت iة হেমাঙ্গিনী উদ্ধার মত গলির মধ্যে আসিয়ু তীব্র স্বরে বলিল, যথম-তথম ও-সব খারাপ কথা ব'লে না বলছি । প্রতিবেশিনীও দামবার পাত্ৰী নহে, মুখ বাকাচয় বিধিয় বিধিয়া বলিল, ওলে, তেজ দেখে যে আর বঁাচিনে । বলে জন্ম গেল ছেলে খেতে-আজ বলে ডান ! তার পর যে-সব তীব্র গালির স্রোত আরম্ভ হইল তাহার তোড়ে গৌরীর মা গৌরীকে লইয়া গলি হইতে পলাইল । আমরাও জানালা বন্ধ করিয়ু দিলাম। জানালা বন্ধ করিয়া ভাবিতে লাগিলাম—কি এ রহস্ত ! যে-হেমাঙ্গিনী গৌরীর স্বন্দর মুখের পানে চাহিয়া সগৰ্ব্বে