পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৮৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

سوه \ه a বিজলী বলিল---আর বলাবলি কি, কার ভেতরে যে কি আছে তা কি কেউ বলতে পারে ? সকলবেলা কলেজ হোষ্টেলে গিয়ে দেখি এই ব্যাপার। একটা দুৰ্ব্বোধ্য চিঠিও নাকি তার বালিশের নীচে পাওয়া গেছে। সে চিঠিতে আছে গুচের হেঁয়ালি--হয়ত বা প্রেমেই পড়েছিল । বিচিত্র কি ! স্বব্রত বলিল-দূর । বিশ্বজিতের মত ভাল ছেলের পক্ষে তা কি সম্ভব কখনও ! তিমিরবরণ বলিল—বেশী ভালদের নিয়েই ত এই সব বিপদ যত । বিজুলী বলিল--রাথ, তোর ভাল ছেলে । যত সব মুখ ধুর দল ! আহ, কি স্বৰ্দষ্টান্তই রেখে গেলেন পৃথিবীতে । একেই ত বাপু বিষ-ছড়ানো পৃথিবীতে কোন রকমে কায়ক্লেশে বেঁচে আছি, তার মধ্যে আবার এসব কেন ? বিজলী যেমন দুঃখিত হইয়াছিল তেমন আবার ক্ষুণ্ণও হইয়াছিল বিশ্বজিতের এই আত্মহত্যায়। বিশ্বজিতের দুঃখ যত বড়ই হউক না কেন, বিজুলী তাহাকে কোন দিনই ক্ষমা করিতে পরিবে না । তিমিরবরণ কিন্তু সহজেই বিশ্বজিতকে ক্ষমা করিতে পারিল তাহার আত্মহত্যার কোন কারণ যথাযথভাবে না জানিয়াওঁ । এমনও ত হইতে পারে যে প্রেম তাহার আত্মহত্যার কারণ একেবারেই নয় । আর তাহা যদি হয়ও তবুও তিমিরবরণ তাহাকে ক্ষমা করিতে পারবে । বিশ্বজিৎও ত এই ব্যথাতীর্থেরই এক জন যাত্রী ছিল—তীর্থের ওপারে সে অনায়াসেই পৌছাইয়া গিয়াছে, বাচিয়াছে। বিশ্বজিতের প্রতি তাহার কোনও অভিযোগ নাই । সুব্রতর অভিযোগ ছিল । কেননা স্বত্রতকে সে সত্যই ভাবাইয়া তুলিয়াছে। প্রেমে পড়িয়া মাহুষের আত্মহত্যার অবস্থাও কখনও আবার আসিতে পারে নাকি ? বিচিত্র জগৎ—এখানে সকলই সম্ভব ! স্বত্রত কেমন হতাশ ও ব্যাকুল হইয় উঠে । তার পরে বিজলী দুই একটা কথার পরেই বিদায় লইয়া চলিয়া যায় । ‘প্রক্সী'র কথা বলিয়া দিতে তাহাদের আর মনে থাকে না । অবশু, কলেজ ছুটি হইয় যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশী, কাজেই তাহার সেজন্য ভাবনাগ্রস্তও হয় না। বাড়ীতে প্রবেশ করিয়াই তাহার গুনিতে পায় যে, সুব্রতর পাচ বৎসর বয়স্ক ছোট বোন লীন৷ কঁাদিয়া-কাটিয়! বাড়ী মাথায় করিয়! তুলিয়াছে এবং বায়না ধরিয়াছে, তাহাকে তাহার দিদির কাছে অবিলম্বে পৌছাইয় দেওয়া হউক। এ দুই দিন কিন্তু সে চুপ-চাপ ছিল। আজ কিন্তু তাহাকে সাম্লানো দায় হইয়া উঠিয়াছে। সুব্রত এ সংবাদে চটিয়া গিয়া বলিল—তা মরুক গে, কাদছে ত কঁাদুক গে, আমরা তার কি করব গুনি ? প্রবাসী ১৩৪৩ স্বত্রভর মা রমা দেবী আসিয়া তিমিরবরণকে বলিলেন— ভাল বিপদ হয়েছে আমার । তখনই ত আমি কৰ্ত্তাকে বারবার বলেছি যে, কাজ কি বাপু অচেনা অজানা ঘরে—তাও আবার দূরে—বিয়ে দিয়ে। কিন্তু আমার কথা কি কারও কানে গেল ! এখন দুর্ভোগ ত ভুগতে হবে আমাকেই । মেয়েটাকে শ্বশুরবাড়ী পাঠিয়ে আমার যেন হয়েছে জালা ! একেওকে ডাকতে গিয়ে তারই নামটা বেরিয়ে আসে মুখ দিয়ে। আমারও যেমন ! আহ, মনটা যেন কেমন হয়ে গেছে ! কে জানে কেমন ঘরে পড়ল আবার— যে অভিমানী মেয়ে আমার ! আবার ওটার জালায় ত আমি আরও গেলুম ---লীন, এখনও থম্ বলছি বাপু, মেজাজ আমার বিগড়ে দিস নে । সেই তখন থেকে কান্না জুড়েছে, আমার হাড় না-জালিয়ে যেন ওদের সোয়ন্তি নেই । রম দেবী আর দাড়াইলেন না। ক্ৰন্দনরত লীনাকেই বোধ করি শাসন করিতে চলিয়া গেলেন । তিমিরবরণের কেন জানি হাসি পাইল । চমৎকার মাচুষের বেদন, আর আরও চমৎকার তাহার অভিব্যক্তি ! স্বত্রত মহা বিরক্ত হইয়া তিমিরবরণকে নিজের ঘরের মধ্যে লইয়া গিয়ু লইয়' সশন্ধে ঘরের দরজার থিন্সটী আ টিয়া झेिल । কাব্যপাঠ করিয়া আনন-আহরণের চেষ্টা তাহাদের বার্থ হইয়া যায় । পৃথিবীর ধাই।-কিছু সুন্দর তাহারই অস্তরে লুক্কায়িত আছে অব্যৰ্থ ব্যথা-শর-আঘাত তাহার অনিবাৰ্য্য । সে আঘাত তাহাদের সহ করিতেই হয় । তিমিরবরণ স্বত্রতর নিকট বিদায়ু লইয়া রমা দেবীর সঙ্গে দেথা করিয়া বিকালের দিকে যখন তাঙ্গদের বাড়ী হইতে যায় তখনই ঠিক সুব্রতদের বাড়ীর দুইখান বাড়ার পরের বাউী হইতে একটা শোকরোল গুলিতে পায় । সমস্ত অস্তর তাহার নিমেষে স্পর্শ করিয়া সে শোকরোল ঝঙ্কারিত হইয় উঠে, মুহূর্তে সে এই সহসা-সমুখিত শোকরোলের কারণ বুঝিতে পারে। সুব্রতর বোন মীন এবং বাড়ীর আর সকলের কাছেও সে ইতিপূৰ্ব্বে শুনিয়াছিল যে, কল্যাণীর স্বামীর টাইফয়েড, দিন-দিন খারাপের দিকেই চলিয়াছে । কল্যাণী মীনার চেয়ে বছর-পাঁচেকের বড় হুইবে চয়ুত । মীনা কল্যাণীর বিশেষ অন্তরঙ্গ ছিল। তাতার কাছেই তিমিরবরণ কল্যাণীর সংসারের মৃথ-দুঃখের অনেক কথা শুনিয়াছে এবং এজবেশী গুনিয়াছে যে, কল্যাণীর সহিত তাহার নিজের কোন পরিচয় না-থাকাসত্ত্বেও তাঙ্গকে আর অপরিচিত। মনে হয় না । মীনার কাছে কল্যাণীকে একদিন সে আসিতেও দেখিয়াছিল। সেদিন কল্যাণীর মুখ সে ভাল করিয়া না