পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

位*2 প্রবাসী SNご8Nご সেই কবিবন্ধুটি এসেছিলেন এবং আর কিছু পরেই আবার আসবেন জানাতে ব'লে গেছেন। আপনাকে তার নাকি আজ পাওয়াই চাই, নইলে তার ভয়ানক ক্ষতি হয়ে যাবে। তিমিরবরণ উপরে উঠিয়া গেল । ঘরের দরজা খুলিয়া ভিতরে প্রবেশ করিয়া রাস্তার দিকের দরজাটা খুলিয়া দিয়া ক্ষণেক চল-চঞ্চল রাস্তার পানে অলস দৃষ্টি ফেলিয়া নিজের চৌকির উপর আসিয়া বসিয়া চিঠি ছুইখানি পড়িতে লাগিল । একখানি একটি মাসিক পত্রের সম্পাদকের নিকট হইতে আসিয়াছে, অপরখানি লিথিয়াছে তাহারই এক বন্ধু শিলং হইতে । সম্পাদক লিথিয়াছেন,—তিমিরবাবু, আমাদের কাগজের অবস্থা ত আপনার অজানা নাই, কাজেই আপনি আপনার গল্পের জন্য পারিশ্রমিক ন-চাহিয়া কোনও ভাল গল্প যদি অবিলম্বে পাঠাষ্টয়া দেন ত বিশেষ বাধিত হইব । ইত্যাদি । শিল হইতে বন্ধু লিপিয়াছে,—হঠাৎ সেদিন একখানি মাসিকপত্র আসিয়া হতে পড়িল, তোমার অরণ্যের বাথা' গল্পটি তাহাতে বহির হইয়াছে পড়িয়া মুগ্ধ হইলাম। তোমার সব গল্প পড়িতে পাই না বলিয়া দুঃখ হয় । তুমি যদি তোমার গল্প প্রতি মাসে যে যে কাগজে বাহির হয় তাহার একখানা করিয়া কাপি আমাকে পাঠাহয় দাও ত আমার পড়া হইতে পারে। এটুকু কষ্ট আমার জন্য স্বীকার করিবে নিশ্চয়। ইত্যাদি । তিমিরবরণ বিরক্ত হইয় চিঠি দুষ্টখানি দূরে ছুড়িয়া ফেলিয়া দিয়া উঠিয় দাড়াইল । তার পরে হোটেলের চাকর শঙ্কুকে ডাকিয় এক কাপ চায়ের অর্ডার করিল এবং ফিরিয়া দেখিল, তাহার কবিবন্ধু পার্থ আসিয়া পডিয়াছে। শঙ্কুকে আবার ডাকিয়া তিমিরবরণ দুষ্ট কাপ চায়ের কথাত জানাইয়। দিল । পার্থকে ঘরে অনিয়া বসাইয়। তিমিরবরণ বলিল— তুই নাকি এরই মধ্যে দু-বার এসে আমায় খোজ করে গেছিস্ । কেন, আমাকে তোর এত দরকার কিসের ? পার্থ কিছুক্ষণ নীরব থাকিয়া বলিল-তোকে আমার দরকার নয়, দরকার আমার টাকার । আজ যদি টাকা কোথাও না পাই ত কাল থেকে সব উপোসী থাকতে হবে । তার পরে আবার ছোট বোনটার কাল থেকে জর দেখা দিয়েছে, না জানি টাইফয়েডেই দাড়িয়ে যায় । একে একে সব সম্পাদকের দরজাতেই গিয়ে গড়িয়েছিলাম, কিন্তু আমার দশটা কবিত। কেউ দশ টাকা দিয়েও কিনতে রাজী হ’ল না। ইচ্ছে হ’ল, ঘরে ফিরে কবিতাগুলো সব ছিড়ে ফেলি। এর চেয়ে রাস্তায় দ্বাড়িয়ে ভিক্ষে চাইলেও যে এতক্ষণে দশটা টাকা রোজগার হতে পারত, অথচ পার্থ সেন নাকি আবার ভাল কবিতাও লেখে —তার নাম থাকলে নাকি আবার কাগজও বিকোয়,–আবার সম্পাদকের তাগিদেও তাকে অস্থির হতে হয় । চমৎকার কিন্তু ! তিমিরবরণ পার্থের হাতে সম্পাদকের ও তাহার শিলঙের বন্ধুর চিঠি ছুইখানি ঘরের মেঝে হইতে তুলিয়া দিয়া বলিল— এ চিঠি ছু-খান পড়ে দেখ । আর তোর কত টাকার দরকার এখন শুনি ? পার্থ বলিল—দুটো-চারটে—যা তুই দিতে পারিস তাই আমার দরকার । তিমিরবরণ বলিল—চারটে পৰ্য্যন্ত দেবার মতই আমার আছে, তার বেশী আঞ্জ আর দিতে পারব না। পার্থ বলিল—ঐ হ’লেই যথেষ্ট হবে । শঙ্কু আসিয়া চ দিয়া গেল । পার্থ চা পান করিয়াই উঠিয়া দাড়াইয়া বলিল—কই, দে তবে, আজ আর বসব না। আর তুইণ্ড ত পড়াতে বেরুব আর একটু পরেই। পারিস ত আসছে রব বার একবার আমাদের বাড়ী যাস । মা তোর কথা বলছিল আজও । তিমিরবরণ টাকা বাহির করিয়া পার্থের হাতে দিয়া বলিল—কলেজ থেকে ফেরার পথে পারি ত কাল একবার যাব'থন । —যাস কিন্তু । বলিয়া পার্থ চলিয়া গেল । তিমিরবরণ তাড়াতাড়ি গিয় রাস্তার দিকের বারান্দার রেলিঙের উপরে ঝুঁকিয় দাড়াইল । পার্থের কথাই সে ভাবিতেছিল। পার্থ চমৎকার কবিই লেখে। পার্থের কবি-প্রতিভা সাধারণ নয় । কিন্তু পার্থ কি বিপদেই পড়িয়াছে ! অতবড় সংসার তাহার একার ঘাড়ে । সংসারে বিধবা মা আছেন, একটি বিধবা বোন, দুষ্টটি অবিবাহিত; বোন ও তিনটি ছোট ভাঙ্গ । পার্থ কবি, কিন্তু দায়িত্বজ্ঞানহীম হঠতে পারে নাই বলিয়াই তাহাকে এই সংসারের জন্য ছুটাছুটি করিয়া মরিতে হয় । হয়ত কবি-প্রতিভা তাহার একদিন এই দুঃগদৈন্মের মধ্যেই সমাধি লাভ করিবে । হয়ত সে কোনও এক সওদাগরী অrিসের এক কোণে অলক্ষিত থাকিম্বু কলম পিষিয়া যাইবে সারা জীবন । তিমিরবরণ একটা দীর্ঘনিশ্বাস ফেলিয় রাস্তার দিকে চাহিয়া দেখিল, পার্থ একটা বাস-এর পিছন দিয়া সাবধানে রান্ত পার হইয়| ওপাশের ফুটপাত ধরিয়া বাড়ীর দিকে ষ্ঠাটিয় চলিয়াছে । পার্থ কবি-হিসাবে এষ্ট স্বল্প *াগ মধ্যেই বেশ নাম করিয়াছে, হয়ত রাস্তার লোক আগুল তুলিয়া তাহাকে দেখাইয় অপরের কাছে তাহার পরিচয়ও দিয়া 叱夺1 একে একে রাস্তার অালো গুলি জঙ্গিয় ওঠে, রাস্তার রূপ বদলাইতে থাকে । তিমিরবরণ ঘরের দরজা বন্ধ