পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬০৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাঙালীর দ্বিতীয় পাটকল ঐসিদ্ধেশ্বর চট্টোপাধ্যায় বাংলার ৯৪টি পাটকলের মধ্যে মাত্র একটি বাঙালীর ছিল। এইবার সৌভাগ্যক্রমে দুইটি হইতে চলিল। পাট বাংলার নিজস্ব সম্পত্তি বলিলেও চলে, কিন্তু ইহার লাভ বাঙালী পায় না। পাট যৎসামান্য মূল্যে বিক্রীত হয়, আর ইহার দুই গুণ, তিন গুণ মূল্যে পাট হইতে উৎপন্ন চট ও থলিয়৷ বিক্রীত হয় । বহু বংসর ধরিয়৷ এইরূপ চলিতেছে, কোনও প্রতীকার হইতেছে না। সরকার যদি পাট-তদন্ত-কমিটির সম্মুখে উপস্থিত কৃষক ও মফস্বলের সাক্ষীদের একমাত্র মত মানিয়ু লইয়া বাধ্যতামূলক পাটচার্য নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করিতেন তাহা হইলে পাটের দর চড়িত, কিন্তু তাহারা স্বেচ্ছমূলক প্রচারের পথ অবলম্বন করিয়া সাধারণের কতকগুলি অর্থের অপব্যয় করিলেন। গত বৎসর সরকার যাহ স্থির করিয়া দিয়াছিলেন, তাহার এক-তৃতীয়াংশ অধিক পাট জন্মিয়াছিল । এবার আবার তাহ অপেক্ষাও অধিক পাট জন্মিবে, কারণ অধিক জমিতে চাষ হইয়াছে । সুতরাং পাটের কলওয়ালাদের হাতেই রহিয়" যাইতেছে । কল যদি বাঙালীর বেশী থাকিত, হইলে এই প্রভূত লাভের একটা বড় অংশ বাঙালী পাইত । কলিকাতার বাঙালী ধনীদের হাতে অর্থ বড় কম নাই ; কিন্তু তাহারা শিল্প-বাণিজ্যে বলিয়া প্রতিজ্ঞ করিয়া বসিয়া আছেন । এদিকে বেকার যুবকের আত্মহত্যার সংবাদ সংবাদপত্রে নিত্যপাঠ্য হইয় উঠিল। যে-সকল বাঙালী সহিস করিয়া শিল্প-বাণিজ্যে অর্থনিয়োগ করিতেছেন, তাহার। জাতির কৃতজ্ঞত:ভাজন । যে কলটি চলিতেছে তাহ রাজা শ্ৰীজানকীনাথ রায় প্রতিষ্ঠা করিয়াছেন । ঠহ ইংরেজী ১৯৩১ সাল হইতে চলিতেছে । ইহার তিন হাজার শ্রমিকের মধ্যে অৰ্দ্ধেক বাঙালী । আর কোনও পাটকলে বাঙালী শ্রমিকের সংখ্যার অতৃপাত এত নহে, যৎসামান্য মাত্র । বাঙালী পাটের দালালের এই কলে কাজ পায়, অন্য সব কলে লা-পাওয়ার জন্য বাঙালী দালালের সংখ্যা ক্রমশঃ হ্রাস পাইয়া একটি লাভজনক পৃথ রুদ্ধ হইতেছে । রাঞ্জ শঙ্গানকীনাথের কলে পাঁচ শত র্তত আছে । সম্প্রতি হাওড়া কদমতলার নিকট শানপুরে শ্রশালামোহন দাস リ。 তাহী টাক লগাইবেন না একটি পাটকল নিৰ্ম্মাণ করিতেছেন। ইহাতে দুই শত তাত বসিবে ও চৌদ্দ শত লোক কাজ পাইবে । এই কলে যে-সকল क्षेत्र|अtभ{हम शान् যন্ত্রপাতি বসিতেছে, তাহার প্রধান অংশ ঐআলমোহনের নিজের এঞ্জিনীয়ারীং কারপনায় বাঙালী শ্রমিকের দ্বারা প্রস্তুত । ঐ আলামোহন চৌদ্দ বংসর বয়সে কলিকাতার রাস্তায় মাথায় করিয়া থৈ ফিরি করিয়াছেন । ভারতীয়দের মধ্যে তিনিষ্ট সর্বপ্রথম ওজন-কল তৈয়ারী করেন । তাহার গুঞ্জন-কলের কারখাল, হঠতে এখন ভারত-সরকার ও বিভিন্ন রেলওয়েকে ওজন-কল সরবরাহ করা হষ্টতেছে । যে অতিকায় ওজন-কলের উপর বেলওয়ের মালগাড়ী মালমৃদ্ধ ওজন হয়, তাহা এই বাঙালীর কারখানায়ু প্রস্তুত হইতেছে । এষ্ট শিল্পপ্রতিষ্ঠার ফলে গত তিন বৎসরে ভারতের অন্তত: এক কোটি টাকার বিদেশী আমদানী বন্ধ হইয়াছে । ঐআলামোহনের পাটকলের বিশেষত্ব এই, যে, তিনি নিজের টাকা ও মধ্যবিত্ত লোকের টাকার মূলধনে ইহা প্রতিষ্ঠা করিতেছেন । আমাদের ধনীরা যদি ব্যবসায়-বাণিজ্য ন-চ করেন, তাহ হইলে মধ্যবিত্ত ও দরিদ্র সম্প্রদায়কে বঁচিবার পথ বাহির করিতে হইবে ।