পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৭২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ህ.ግo প্রবাসী ১৩৪৩ কিন্তু কেন ? এই প্রতিষ্ঠানের এত বড় এক জন ডাক্তারের একটি নাস সম্বন্ধে এত উৎসাহ কেন ? এটা ত ভাল কথা নয় । মাকুষ কি কোথাও একটু নিশ্চিন্ত হবার জায়গা পাবে না 7 বয়স বেশ নয় ; বয়স বেশী নয় ত তোমার কি ? নাস-নাস। তার বয়স বেশ কি কম এসব কথা ওর মনে হুবেই বা কেন ? আর জ্যোৎস্নাই বা কেমন ? পড়াশুনা করবে, কাজ শিখবে, ব্যস চুকে গেল । তা নয়, এই সব ডাক্তারকে বাড়ীতে ডেকে আডডা দেবার মানে কি ? ভাবতে ভাবতে নন্দর মনে আর শাস্তি রইল না। এমন সময় থোকাকে নিয়ে কমল এসে উপস্থিত হ’ল ; এবং নিখিলনাথকে দেখে “ওম, আপনি কত ক্ষণ এসেছেন ?” বলে একটু অনুনয়ের স্বরে বললে, “আজ আমায় ছুটি দিতে হবে । ইনি আমার ভগ্নীপতি । সেদিন ত আলাপ করিয়ে দিয়েছিলাম, না, ডাক্তার রায় ?” "র্হ্যা, এতক্ষণ ওঁর সঙ্গে আপনারই কথা হচ্ছিল । আজ তবে আমি যাই । কাল দুপুরবেল ত হ’লে আপনাকে ক্যাম্বেলে নিয়ে যাব ওদের মিউজিয়মটা দেখাতে । আপনি প্রস্তুত থাকবেন " কমল বিনীত ভাবে মাথা হেলিয়ে বললে, “আচ্ছ ।" ૨ (t নিখিলনাথ নন্দকে নমস্কার করে বেরিয়ে গেল । কমল নিতাস্ত ভদ্রতা এবং সন্ত্রম করেই দরজা পৰ্য্যস্ত এগিয়ে দিয়ে | نة وه এক মিনিট নন্দ এবং কমল দু'জনেই নিস্তব্ধ হয়ে উঠে গিয়ে বিদায় দিয়ে আসবার মত আদিগ্যেতায় নন্দর গাত্রদাহ উপস্থিত হয়েছিল । বস্তুত নিপিন্সনাথের সম্বন্ধে কমলের কোন ব্যবহারকে বিকৃত ক’রে না-দেখার মত চরিত্র বা মেজাজ তার ছিল না । সে গুম হয়ে বসে রইল ; এবং কমল তার এই আকস্মিক গাম্ভীৰ্য্যের কারণ বুঝে উঠতে না পেরে মনে মনে একটু অবাক হ’ল । অল্পক্ষণ পূৰ্ব্বেও ত নন্দ তার সঙ্গে লঘু আনন্দের সঙ্গে আলাপ করেছে ! কমল এই গুমটটাকে হাদ্ধা করবার জন্যে একটু হেসে বললে, “এইটে দিদিকে দেবেন। আমি বসে বসে নিজ হাতে রইল । এই ব্লাউসট তৈরি করেছি। দেখুন ত কাজটা পছন্দ হয় কি না 7 দিদি নিশ্চয় খুব খুশী হবে ।” নন্দলালের মন থেকে নিখিলনাথ-ঘটিত উত্তাপ তখনও জুড়িয়ে যায় নি। বিশেষতঃ নিখিলনাথের সঙ্গে জ্যোংস্কার ক্যাম্বেলে বেড়াতে যাওয়ার কথাটা ( নন্দ ওটাকে বেড়াতে যাওয়ার অছিলা বলেই ধরে নিয়েছিল ) তার মনে যে জালা ধরিয়েছিল, একটু বিদ্রুপের সঙ্গেই তার কাজটুকু নন্দর মুখ থেকে বেরিয়ে এল । সে বললে, “পড়াশুনার নাম ক'রে ডাক্তারের সঙ্গে বেশ জমিয়ে নিয়েছ দেখছি । তোমাদের এখানে যত নাস আছে সকলকেই কি তিনি পাল ক’রে আমনি বেড়াতে নিয়ে যান না কি ? না, ওটা তোমার সম্বন্ধেই তার বিশেষ অনুগ্রহ ?” কমল প্রথম কথাটা ঠিকমত উপলব্ধি করতে পারে নি । তার ঝাজটুকুতে বে অপমান লুকিয়েছিল তা রূঢ়ভাবেই তাকে আঘাত করলেও সে আত্মসম্বরণ করবার প্রয়াসে সুধু বললে, “মানে ?” “মানে অতুগ্রহট কোন তরফের— আমি শুধু বঞ্চিত হলাম।” কমল নন্দলালের কাছ থেকে এই রকম কথ। কখনও আশা করেনি । এত দিন নন্দলালের সমাজশাসিত চিত্ত নিজের অশোভন চেষ্টার লজ্জায় নিজেকে প্রাণপণে সংযত ক’রে এসেছে— কমলকে তারই আশ্রয়ে একান্ত অসহায় এবং বঞ্চিত জেনে । কিন্তু আজ তাকে অন্যের সঙ্গমুখে সুখী কল্পনা ক’রে তার অন্তকম্প শুষ্ক হয়ে গেল এবং মুহূর্বে তার লোভাতুর চিত্ত নিষ্ঠুর হয়ে উঠল । যদিও নন্দলালের চিত্তের অস্বস্তিকর উন্মুখীনতার কথা কমলের অবিদিত ছিল না, তবু মন্দলালকে সে ভদ্র সংযত এবং তার প্রতি করুণার্ড বলেই জেনে এসেছে । অকস্মাৎ অপ্রত্যাশিত ভাবে এমন রূঢ় কুরুচিপূর্ণ কথা নন্দলালের কাছ থেকে শুনে সে স্তম্ভিত হয়ে গেল । নন্দলালের কথাগুলো খানিকক্ষণ তার আহত মস্তিষ্কে যেন প্রবেশ করবার পথ না পেয়ে একটা ফুৎসিত মামুষের মুখের মত প্রত্যক্ষগোচর হয়ে তার মুখের দিকে তাকিয়ে তাকে বিক্রপ হতভাগাই কখনও শোনেও নি ।