পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৯৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

マラーF আছে । শিরাবহুল ইণ:তর আঙলগুলি ক্ষয়ে ক্ষয়ে গেছে, শূৰ্ণ পায়ে চামড় ফেটে গিয়ে কর্কশ হয়ে আছে। “ওকি জুতোস্বদ্ধ বিছানায় বসেড় কেন ?” বলে সে স্বামীর পা হ’তে ধূলিমলিন জুতো খুলে থাটের তলায় রাথলে { তার স্বামী বললে, “৪ষ্ট কাপড় এনেছি, দেখ ।” বুচির মা হাতটা আর একবার আঁচলে মুছে নিয়ে মোড়ক খুললে, শাড়ীর জরির পান্ডের দিকে মুগ্ধ, একটু লুব্ধ চোথে চেয়ে বললে, “হা, এ ত খুব দামী দেখছি ।” “কি করা যায় বল, সুরমার শাশুড়ী ত শাসিয়েছে পূজোর তত্ত্বে তাকে এবার ভাল কাপড় না দিলে ছেলের আবার বিয়ে দে:প * “ওদের ত অবস্থা ভাগ, কাপড়ের কি অভাব ? তবু কি চশমশোর, কি জায়গায় যে মেয়ের বিপ্নে দিয়েছি।” - “ও সবাই সমান । মেয়ের বিয়ে আমাদের জন্মগত অভিশাপ । যে বেলিরা যত বেশ রক্ত করে সে বেটার। তত বেশী চশমথ্যের ” – তার স্বরটা ঝণঞ্জে উগ্ৰ । বুচির মা একটু কুষ্টিত ভাবে অনেক ততস্তত: ক'রে বললে, "এ গু:োর জন্যে কিছু আনলে না, ওরা ত আমায় ছিড়ে থাচ্ছে পূর্ক্সেব কাপড়, পূজোর কাপড় ক’রে ।” রক্ষ কর্কশ স্বরে তার স্বামী বললে, “হ্য, আমার বড় টীক দেখে বিনা তোমরা সকলে, এবার তোমাদের ছাপ্পায় কোটি যদুবংশের জন্যে দোকান উঠয়ে আনিব । চকুম ত কব: ইচ্ছে লম্বা লম্বী, আসে কেথেকে টাকাটা ? তোমরা অ}ছ ? ঈ পাল, কেবল আমায় শুষে খাচ্ছ বারে। মাস, একটি পয়সা রোজগারের মুরদ আছে ?” বুচির মা নিরুত্তরে জানলার দিকে মুখ ফিরিয়ে দাড়িয়ে রইল । অন্য দেশের মেয়ে হলে বলতে পারত, ছেলেমেয়েদের জগতে মিঃ এনেছ, তাদের ভার বইতে তুমি বাধা, বলতে পারত, ‘কেশীর হতে তোমার সংসারে বেতনবিহীন বঁদীর মতম বিরামবিহীন থেটেড়ি, তোমার সস্থান পালন ক'রে করে আকলিল্পথ হয়ে গেছি, এতেও কি আমার জীরিক অর্জন কল্প হচ্ছে না ? বলতে পারত, ‘বাইরে উপাহনের শিক্ষা দেয় নি তাই ভিটে-মাটি বেচে তোমার বরপূণ দিয়ে বাপ মা আমার বিয়ে দিয়েছিল । কিন্তু সে বাংলা দেশের সহনশলা মেয়ে, কোন কথা বললে না, শুধু এই পূজোর দিনে এমন ভাবে বকুনি খেয়ে তার দু-চাৰ্থ উপচে জল গড়িয়ে পড়ল । বুfচর বাপ একটু নরম হয়ে বললে, “কি ক'রে কাপড় আনি বল ? বিয়ের পণের পাচ-শ টকা আজিও ওদের দিতে পারি নি, সত্যিই ওরা একটা কিছু ক'রে বসে যদি তাহলে সারাঞ্জন্ম মেয়ের ধাক্ক, সামলাতে হবে । হাতের বোতামগুলে! নিতাই স্বাকরার দোকালে বন্ধক রেখে ওই কাপড় আনলাম।” চিত্রলেখ Գoգ আঁ্য বল কি গেী, সেই বোতামগুলো বেচলে ?” বুচির মা'র ব্যথিত বিন্মিত কণ্ঠে তার স্বামী দুঃখিত ভাবে বললে, “আর কোন উপায় থাকলে ওগুলো কি আমি দিতাম ? তুমি তা বুঝবে না ?” অাজকের এ অবসন্ন জীবনের পাতা উণ্টে তার মন পৌছল একটি দিনে যখন বসন্তে মঞ্জরিত বুক্ষের মত সতেজ স্নিগ্ধ ছিল মন, রৌদ্র-ঝলসিত শত-মধ্যহ্নের মত মধুর লাগত জীবন । তখন নববধূ বুচির-মা নতুন সংসার পেতেছে, তার স্বামী নতুন পেয়েছে কাজ। প্রত্যেকটি দিন এক-একটি পরিপূর্ণ রহস্ত, সমস্ত সংসার একটি প্রোজ্জল আশা । তখন একটিমাত্র সন্তান স্বরম, তার কথা-হাসি বাপ-মায়ের কৌতুকের উৎস । এখনকার এতগুলি ছেলেমেয়ের মত তার আগমন অবাঞ্ছিত হয় নি। ঐশ্বৰ্য্য ছিল না তাদের কোনদিন, কিন্তু তখনও অভাব এমন স্বভাবে দাড়ায় নি । একদিন খাবার খুব আয়োজন হয়েছে –মাছের মুড়োর কালিয়, মাংস, পায়েস,—বুচির বাপ জিজ্ঞেস করলে, “আজ ব্যাপার কি, অন্নপূর্ণার ভাণ্ডার খুলে গেছে যে !” ঝুঁচির মা খুকার হাসি হেসে বললে, “বা রে, নিজের জন্মতিথিও মনে থাকে না !” “তাই নাকি! তাহলে ত শুধু খাওয়ালে হবে না, দক্ষিণও চাই ।” স্ত্রীর চিন্তিত মুখ দেখে সে বললে, “এত ভাবছ যে, দক্ষিণার নামে ভয় পেয়ে গেলে নাকি ?" “ন, কিছু ভাবছি না।" কিন্তু কুঁচির মা মনে মনে তখন ফন্দি আটিছে । স্বামী ত তাকে প্রায়ই সাবান, গন্ধতেল, রঙীন সেমিজ এসব উপহার এনে দেন। পাওয়ার আনন্দ আছে অশেষ, কিন্তু দেওয়ার গৌরবে যে তৃপ্তি তারঙ তুলনা হয় না –কিন্তু সে কি দেবে, তার ত নিজের একটি টাকাণ্ড নেই। স্বামী কাজে চলে যাবার পর অনেক ক্ষণ ভেবে ভেে হঠাৎ তার মুখ উজ্জল হয়ে উঠল। কনের সোনার বড় বড় ভুল-দুটি খুলে নিয়ে দাসীকে নিয়ে স্থাকরণকে ডেকে পাঠালে । তার কয়েক দিন পুরে ঝুঁচির মা ধোম পরিষ্কার শার্টে সোনার বোতামগুলি সযত্নে লগিয়ে যখন স্বামীকে পরতে দিলে, সেদিনের বিস্মপুলকিত আননস্থতি আজকেও বাদলব্যথিত দিনে রৌদ্রের স্বপুছবির মত দু জনের মনের গোপনে ভরে আছে। অনেক অভাবেও তাই তার। এই ক'টি বোতামকে এত দিন বঁচিয়ে রেখেছিল --- বাইরে পূজোর বাজনা জোরে বাজছে । স্বামী স্ত্রী দু-জনের মনে হচ্ছিল জীবনের দেবতা জীবনের যাত্রারম্ভে যে শুদ্ধ আনন্বেদ আবৃত্তি করেছিলেন তার শেষ ঝঙ্কার সংসারের কর্কশ কোলাহলে আজ নিমগ্ন হয়ে কোথায় হারিয়ে গেল |- * *