পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বায় ; সাধারণ হোটেলের ভোজনশালাটিও মূীয় কারুকান্ধে সজ্জিত থাকবে। সে গলিপথের ভিতর দিয়েই যে সব ট্রাম যাচ্ছে, তার পাশেই যে বিস্তৃত হলর পশিও দি লস্ দিলিথিয়াস নামে বুলভার' রয়েছে সেগুলি যেন অলীক। সেভিলের আরব বণিক কৃষ্ণ পোষাকাবৃত সন্ন্যাসী ও উৎফুল্ল প্রশংসাগৰ্ব্বিত ‘মাতাদোরদের সঙ্গে সেগুলি খাপ খায় না একটুও। গ্রানাডার "আলহাম্বা’তেও ঠিক এমনি একটা আভাস পাই। ঐশ্বৰ্য্য ও কারুকার্য্যে আলহা প্রাসাদ শাহ জহানের আগ্রা-দুর্গের কথা মনে করিয়ে দেয়। কিন্তু এ আরও বেশী প্রাচীন ; কালের আঙুলের ছাপ একে আরও যেন বেশী অনচুভূত আকর্ষণ দিয়েছে ; আর জেনারিলিফে উষ্ঠানের মত কোন উষ্ঠান আগ্রা-দুর্গে নেই। অনবদ্য মূরশ কারুকার্য্যখচিত এই প্রাসাদটি যে পাহাড়ের উপর তা যেন এই স্পেনের মধ্যে নয় ; এর চারি দিকের অলিন্দ থেকে যে ধূসর দৃপ্ত দেখা যায়, “নিত্য তুষারা” যে সিয়ের নেভাদা চিরকালের প্রহরীর মত সম্মুখে দাড়িয়ে আছে, আর পর্বতগুহায় যে জিপিরা বাস করে তারাই যেন এখানকার পারিপাশ্বিকের মধ্যে সত্য ; আর বাকী সবই অলীক। সৌভাগ্যের বিষয়, স্বল্পালোকিত প্রস্তরবন্ধুর গিরিপথ দিয়ে এখানে উঠে আসতে হয় ; বিংশ শতাব্দীর মোটর গাড়ীর রূঢ় আত্মঘোষণ আলহাম্বার সান্ধ্য তন্দ্রাটি ভঙ্গ করে না। নারী ও পুণতা আস্তরিক উচ্ছ্বাস আছে যা দেখে স্পেনের বিপ্লববর্ণে সংঘর্ষকে সত্য বলে মনে করা কঠিন। বার্সিলোনার ‘রামলা রাজপথে প্লেন গাছের ছায়ায় বন্ধু-বান্ধবীর দল হাস্যমুখে কৌতুক-পরিহাসের মধ্যে যেরূপে বেড়ায় তাতে দৈনিক খবরের কাগজের বার্সিলোনা বলে মনে হবে না। প্যারিসের শাজেলিজে রাজপথের সভ্যতার কৃত্রিমতা এখানে নেই। এরা এত সহজভাবে বিদেশীকে বন্ধু ক’রে নিল যেন এই রাজপথে ও ভ্যালেন্সিয়ার উৎসবের মেলা "ফেরিয়া'তে কোন প্রভেদ নেই। পথে পথে রৌদ্রের আভায় মুনার কমলাকুঞ্জ অস্তরের দ্বার মুক্ত করে দিল, আর স্পেনের আস্তরিকত অভ্যর্থনায় পরকে আপন ক’রে নিল । এমনই আস্তরিকতার সঙ্গে প্রাদোতে একটি শিল্পী তার বহু যুত্বের ইম্যাকুলেট কনসেপগুনের প্রতিলিপির জন্য একটি অজ্ঞাত বিদেশীর কবিতা গ্রহণ করেছিল – তোমধা আঁকিয় যাও ক্ষণিকের ভাবনা বিকাশ অসীমের একটু কণিকা, আমরা রাখিয়া যাই চিরদিন হদয়-উচ্ছ্বাস প্রাণে পাই সুক্ষরের লিখা ; কত কখ। কয়ে ওঠে তুলিকার নীরব ভাষায় তোমাদের কল্পনার ছায়া, অীমরাও দেখি তাই বার-বার মাননো আশায় যে প্ল লভেছে হেথা কায়া । নারী ও পূর্ণত শ্ৰীমৃগাঙ্কমেলি বসু তোমার বারতা নারী,—নিঝরের মুক্তধারা সম ধৌত করি ভাসাইল চিত্তের শূন্যত মানি মম, চঞ্চল প্রবাহে তার টুটে রুদ্ধ সংশয়ের দ্বার মিলাইল কি আবেগে আত্মারে বিশ্বেরে একাকার ! চলেছি রিক্তক্লিষ্ট দুর্গমের কি অজানা টানে কণ্টক-আকীর্ণ পথে, শূন্যমন, নিরুদেশ পানে উপেক্ষিয়া যুত মোহ—জগতের নিত্য ছলনাতে মুন্দরী এ মায়াময়ী ধরিত্রীরে ছাড়িয়া পশ্চাতে। স্বর থেমে গিয়েছিল জীবনের, কে জানিত কবে চিরজনমের দ্বন্দ্ব মুহূর্ভের মাঝে শাস্ত হবে, বিশ্বেরে তুলিতে গেচু-মায়াহীন চাহিতু নিৰ্ব্বাণ, সহসা কাহার বাণী শুনাইল ব্যথাতুরে গান ! স্বধায় ভরিল বিশ্ব,—অমৃতের তৃপ্তি দিল আনি সৰ্ব্বাঙ্গে শিহরে প্রাণ, জীবনেরে ধন্য বলি মানি, উদিল কুয়াশাজাল ছিন্ন করি প্রভাতের রবি নির্জন প্রান্তরমাঝে দেখা দিল দীপ্ত স্বৰ্গচ্ছবি ! মায়ারে ঘেরিয়া প্রেম স্বপ্তিমাঝে করে জাগরণ অনিত্যের মাঝে নিত্য, সুন্দরের তাহে আগমন । বিশ্বের নন্দিনী তুমি প্রিয়জনে কর আনন্দিত, স্নেহের নিষেকে তব শ্রাস্তি মোর অমৃত-পূরিত।