পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

سb جاسb থেকে নামতেই বেশ এক পসলা বৃষ্টিও হয়ে গেল। ভাগ্যক্রমে আমাদের আত্মীয়ের বাড়ী অনতিদূরেই ছিল, তাই বেশী ভিজতে হ’ল না । বাড়ী পৌছে অল্প জিরিয়ে আমরা পণ্ডিত মালবীয়ের সঙ্গে দেখা করতে বেরলাম। অনেক দূরে চকের গলির মধ্যে র্তার বাড়ী । মালবীয়-পরিবারের অনেক লোকের সেখানে বাড়ী। আমরা তাই ভুলক্রমে অন্য একটি মালবীয়ের ওখানে গিয়ে উঠলাম। র্তারা আমাদের সঙ্গে লোক দিয়ে পণ্ডিত মূলচন্দ মালবীয়ের বাড়ী পৌছে দিলেন। পরে জানতে পেরেছিলাম যে আমরা প্রথমে যার বাড়ী গিয়েছিলাম তিনি কাশী হিন্দু-বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা পণ্ডিত মদনমোহন মালবায়ের বড় ছেলে । পণ্ডিত মূলচন্দ মালবীয় আমাদের অনেক আদরআপ্যায়ন ক’রে বসালেন । আমাদের থাকার ও থাবারদাবার ব্যবস্থা করতে যাচ্ছিলেন, কিন্তু আমর বারণ করলাম । তিনি আমাদের বলে দিলেন যে কোন জায়গায় ক্লাস হবে ও কখন আমাদের যেতে হবে । আমার মা গত বৎসর ফল-উৎপাদকদের সমিতির দ্বারা একটি কাপ, একটি মেডেল, একটি সার্টিফিকেট পুরস্কৃত হয়েছেন শুনে খুব খুশী হলেন— বললেন যদি প্রত্যেক বাড়ীতে মেয়ের আচার, মোরব্বা ইত্যাদি তৈরি করে ও বাড়ীর ছেলের সেগুলি ফেরি ক’রে বিক্রী করে, তাহ’লে বেকার সমস্যার আংশিক সমাধান আপনিই হয়ে যাবে। যে-সব ছাত্র এর পূর্বে এখান থেকে পাস ক’রে বেরিয়েছে তাদের দিয়ে তিনি বাড়ীবাড়ী পাঠিয়ে ক্লাসে প্রস্তুত অনেক জিনিষ বিক্ৰী করিয়েছেন। পণ্ডিতজী আমাদের বার-বার বলে দিলেন, যে, ফলসংরক্ষণপ্রণালী কেবলমাত্র সঙ্গের জন্য যেন না শিখি। যদি আচার মোরব্ব বিক্রী করতে আমাদের বিশেষ আপত্তি থাকে তাহলে যেন অন্য গরিব লোকদের শেখাই । আমরা পণ্ডিতজীর কাছে বিদায় নিয়ে বাড়ী এলাম । একটা টংগা ঠিক করা হ’ল আমাদের রোজ সিটি এংলোভাণীকুলার স্কুলে পৌঁছে দেবার ও বাড়ী ফিরিয়ে নিয়ে আসবার জন্য। ঐ স্কুলেই আমাদের ক্লাস হওয়া স্থির হয়েছিল। পরদিন সকাল সাড়ে ছ’টার সময় সেখানে গিয়ে দেখি যে অনেক ছেলেমেয়ে এসেছে। অধিকাংশ মেয়ের প্রবণসী SNごBNつ সঙ্গে আমার আগে থেকে পরিচয় ছিল ব’লে বেশ সুবিধা ट्’ळ । সাতটা বেজে যাবার পর আমাদের ক্লাস আরম্ভ হ’ল । শ্ৰীযুক্ত কৃষ্ণমোহন ফলরক্ষার উপযোগিতার বিষয়ে বক্তৃত। দিলেন । তিনি বললেন যে প্রতি বৎসর বিদেশ থেকে ক্রোরাধিক টাকার ফল ও ফল হতে প্রস্তুত নানাবিধ বস্তু চালান আসে, অথচ আমাদের দেশের ফল ঠিক করে রাখতে না জানার জন্য নষ্ট হয় । ভারতবর্ষে নানা প্রকার জমি ও ঋতুর সমাবেশ হওয়ায় ও এখানকার মাটি বিশেষ উৰ্ব্বর বলে প্রচুর পরিমাণে নানা প্রকার ফল উৎপন্ন হয় ও হ’তে পারে। আমরা বিদেশকে লক্ষ লক্ষ টাকা দিই, কিন্তু উপযুক্ত বিক্রয়-ব্যবস্থার অভাবে আমাদের দেশের ফল নষ্ট হচ্ছে লোকেও অনাহারে মরছে । ফলরক্ষার ব্যবসায়ে লাভবান হওয়া সহজ, কিন্তু আমাদের দেশের বি-এ এম-এ পাস-কর ছেলেরা পনর টাকার একটি চাকরির জন্য লালায়িত হয়ে থাকে । ফলরক্ষীব্যবসায়ে প্রধান সুবিধা এই যে অল্প মূলধনে মুরু করা যায়, আবার পরে অল্প অল্প ক'রে বাড়িয়ে বড় কারবারে দাড় করানও যেতে পারে । এই ব্যবসায়ে অসুবিধা যে নেই তাও নয়। আমাদের সবচেয়ে মুস্কিল এই যে, এখানে টিন বা বোতলের কোন কারখান নেই। বিদেশ থেকে যে-টিন আসে সেগুলি কলকাতা থেকে এলাহাবাদে আনতে আট-দশ পয়সা প্রত্যেকটির দাম পড়ে যায়। এত বেশী দামে টিন ব্যবহার করলে আমরা বিদেশী পণ্যদ্রব্যের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় হেরে যাব। নিজেদের টিন-ফ্যাক্টরী থাকলে টিম সস্তা হবে, কারণ শুদ্ধ বসানর জন্যও বিদেশী টিনের দাম বেশী । কাছাকাছি টিনের কারখানা থাকলে আনাবার খরচ বেশী হবে না ও শুষ্ক প্রভৃতি ত বেঁচেই যাবে। আমাদের আর একটা অসুবিধা এই যে এদেশের বেশীর ভাগ লোক ফলের উপকারিত সম্বন্ধে খুব সচেতন নন। এক মাত্র বড়লোকেরাই বিদেশী টিনে-বন্ধ ফল খেতে পারেন। মধ্যবিত্ত লোকের ফল খুব সস্ত হ’লে কেনেন, কিন্তু ফলকে খাদ্যদ্রব্য বলে ধর্তব্যের মধ্যে আনেন না। পেয়ার, কুল, ও আম ইত্যাদি এদেশে প্রচুর এবং