পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অণশ্বিন "এই প্রবন্ধের শিরোভাগে উল্লিখিত জীবনচলি রচয়িত সোজাসুঞ্জি বলিয়াছেন যে রামমোহন রায়ের পিতা গুসকে ত্যাজ্যপুত্র (উত্তরাধিকারী রূপে পৈত্রিক সম্পত্তি লাভের অনধিকার ) ঘোষণা করিয়াছিলেন ।” কিশোরী চাদ মিত্র অবশ্ব এই উক্তিত্ব প্রতিবাদ করিয়াছেন। কিন্তু আমাদের হাতে যে সকল কাগজপত্র আছে তাহ হইতে দেখা যায় মিত্রমহাশয়ের কথাও একেবারে ঠিক মহে । রাজা রামমোহন রায়ের জীবনের প্রথম ভাগের বিবরণের আর একটি প্রসিদ্ধ আকর, পাকারে লিখিত আত্মজীবনী (autobiographical sketch } । এই পঞ্জের প্রকাশক 638/Rié sffë (Standford Arnot ) বিশ্বাসযোগ্য লোক ছিলেন না এবং এই পত্রের বিবরণের সহিত ডাঙ্গর কাপেন্টারের বিবরণের সম্পূৰ্ণ ঐক্য নাই বলিয়া মিস কলেট (Miss Collot) এই চি থানিকে জাল (spurious) বলিয়াছেন । এই পদ জাল হইলেও ইহাতে কতকগুলি শোনা সংবাদ আছে । রামমোহন রায়ের জীবনের প্রথম ভাগ সম্বন্ধে আদম ( Adam ) সাহেবের চিঠিপত্রে এবং লেখায় এবং এক্ট শ্রেণীর অন্যান্য লেখায় যে সকল সংবাদ পাওয়া যায় তাহাওঁ এই সকল সংবাদকে এক দিকে ভূলচকশুল্প সত্য ঘটনা বলিয়া মনে করা কৰ্ত্তব্য নহে, আর এক দিকে অমূলপ বলিয়া উড়াইয়া দেওয়াও যায় না । রামমোহন রায়ের জীবনের প্রথম সারে চব্বিশ বৎসরের বিবরণ কতক পরিমাণে সংশযাচ্ছন্ন । এই শ্রেণীর প্রমাণ । দ্বিতীয় যুগ (১৭৯৭-১৮১৪) ১৭৯৬ সালের ডিসেম্বর মাসে সাম্পাদিত বাটোয়ারার পর হইতে রামমোহন রায়ের জীবনচরিত সম্বন্ধে অধিকতর নির্ভরযোগ্য প্রমাণ আমাদের হস্তগত হঠয়াছে। এ সকল প্রমাণের মধ্যে রেভিনিউ বোড়ের চিঠিপত্র হইতে রামমোহন রায়ের চাকরী সম্বন্ধে কিছু কিছু সংবাদ পাওয়া যায়, এবং সুপ্রিম কোটের একুইটি বিভাগের গোবিন্যপ্রসাদ বনাম

  • S. D. Collet, Life and Letters of sojo Fannznghten Roy, Calcutta, 1918, pp. 6-7.

মাজ রামমোহন রায়ের জীবনচরিতের উপাদান 8٩بسي! রামমোহন রায় মোকদ্দমার নথীপত্রে + ১৭৯৭ হইতে ১৮১৭ সাল পর্য্যন্ত সময়ের রামমোহন রায়ের বৈষয়িক জীবনের অনেক সংবাদ পাওয়া যায়। 粤 মোকদ্দমার নর্থীতে জীবনচরিতের উপাদান থাকিলেও সেই উপাদান ব্যবহারের অন্তরায় আছে। মোকদ্দমার কাগজের মধ্যে প্রধান, বাদীর আর্জি এবং বিবাদীর জবাব। বাদী আর্জিতে যে দাবী করেন, বিবাদী জবাবে সেই দাবীকে অনেক সময়ই অমূলক বা সম্পূর্ণ মিথ্যা বলেন। বাদীর পক্ষের সাক্ষীরা এবং তাহার দলীলপত্র বাদীর দাবী সমর্থন করে, বিবাদীর সাক্ষীরা এবং তাহার দলীলপত্র তাহার জবাব সমর্থন করে। বিচারক অনেকট এক পক্ষের কথা বিশ্বাস এবং আর এক পক্ষের কথা অবিশ্বাস করিয়া মোকদম নিষ্পত্তি করেন। গোবিন্দপ্রসাদ বনাম রামমোহন রায় মোকদ্দমায় সুপ্রিম কোটের তিন জন জজ বাদীর আর্জি ডিসমিস করিয়াছিলেন, এবং বাদীর উপরে বিবাদীর খরচ ডিক্ৰী দিয়াছিলেন। গোবিন্দগ্ৰসাদের দাবী ডিসমিস হুইবার কারণ, সে সেই দাবী কোটে সুপ্রমাণ করিতে পারে নাই। কিন্তু বিচারালয়ে দাবী সপ্রমাণ হয় নাই বলিয়া ইতিহাসের বিচারালয়ে সেই দাবীকে সকল সময় অমূলক সাব্যস্ত করা সঙ্গত নহে। গোবিনপ্রসাদের দাবী নামঞ্জুর হইয়াছিল বলিয়াই যে তাহার কথা একেবারে মিথ্যা এবং রামমোহন রায়ের সকল কথা সত্য সহজে এমন সিদ্ধাস্ত করা যায় না। নিদিষ্ট সময়ের মধ্যে বিচারকের সন্তোষজনক প্রমাণ উপস্থিত করিতে ন পারিলে সত্য দাবীও নামঞ্জুর হইতে পারে। রামমোহন রায় গোবিন্দপ্রসাদের আর্জির জবাবে যাহা বলিয়াছেন তাহ। প্রকৃত প্রস্তাবে সত্য কি মিথ্যা এই তর্কের চূড়ান্ত মীমাংসা করিতে হইলে ইতিহাসের বিচারালয়ে হাকিমের হুকুম ছাড়া স্বতন্ত্র প্রমাণ উপস্থিত করিতে পারিলে ভাল হয়। লোকে কথায় বলে "একহাতে তালি বাজে মী," এক পক্ষের দোষে মোকদ্দমা হয় না । কিন্তু রামমোহন রায় আবিষ্কার করিয়াছেন । ডাক্তার যতীন্দ্রকুমার মজুমদারের সৌজন্তে আমরা এই নধীর নকল পাইয়াছি এবং তাহ মূল নর্থীর সহিত মিলাইয়া লইয়াছি।