পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

*ఫ్చి সদনুষ্ঠানেরই সহায়তায় ব্ৰতী হইয়াছিলেন। তাহার এই যুগের জীবনচরিতের সকল প্রকার উপাদানই কিছু কিছু আছে, এবং সংবাদপত্রে প্রকাশিত বিবরণ মোটের উপর যথেষ্ট আছে। এই সকল উপাদান অবলম্বন করিয়া ইংরেজী এবং বাংলাভাষায় রামমোহন রায়ের কয়েকখানি জীবনচরিত লিখিত হইয়াছে। কিন্তু এই যুগে রামমোহন রায়ের জীবনের ঘটনা সম্বন্ধে আরও কতক বিবরণ আছে যাহা চরিতকারের নিকট আদর পাইবার যোগ্য নহে। কলিকাতায় প্রথম প্রকাশিত “বেদান্ত গ্রন্থে"র ভূমিকায় এবং অনুষ্ঠানে রামমোহন রায় সাকারোপসনা এবং সাকারোপাসনার পোষক ব্রাহ্মণ-পণ্ডিতগণের উপর দোষারোপ করিয়াছেন, এবং পরবর্তী পুস্তক পুস্তিকায় তাহার মাত্রা বাড়াইয়াছেন। উপনিষৎ, বেদাস্ত, স্বতি, পুরাণ, তন্ত্র এই সকল শ্রেণীর হিন্দু শাস্ত্রের প্রতি বামমোহন রায় গভীর শ্রদ্ধা প্রকাশ করিয়াছেন, কিন্তু শাস্ত্রীগণের সাকারোপাসনার সমর্থনের মূলে তিনি স্বার্থপরতা ভিন্ন কোন সদুদেশ্ব স্বীকার করেন নাই। সুতরাং “বেদান্ত গ্রন্থ” প্রকাশিত হইবা মাত্রই ব্রাহ্মণপণ্ডিতগণ যে রামমোহন রায়ের ঘোরতর শত্রুত আচরণ করিতে আরম্ভ করিবেন ইহাতে আশ্চৰ্য্যাম্বিত হইবার কিছু নাই। এই শক্রতা প্রথম অবস্থায় মৌখিক প্রতিবাদ এবং মৌখিক নিন্দায় প্রকাশ পাইয়াছিল। রামমোহন রায়ের কলিকাতা আসিয়া কাৰ্য্যারম্ভের তৃতীয় বৎসর এই মৌখিক প্রতিবাদ এবং শত্রত কতদূর অগ্রসর হইয়াছিল ইংরেজ মিশনারীগণের লেখায় তাহার পরিচয় পাওয়া যায়। ১৮১৬ সনের ব্যাপটিষ্ট মিশনারী সোসাইটির কার্য্য বিবরণে (Periodical Accounts of the Baptist Missionary Society, vol. vi. pp. 106–109) fifra złotos— “He is said to be vory moral : but is pronounced to be a most wicked man by the strict Hindus”s “তিনি (রামমোহন রায়। অতি সচ্চরিত্র লোক বলিয়। কথিত হয়েন । কিন্তু গোড় হিন্দুর বলেন, তিনি অতি দুষ্ট লোক।” ১৮১৬ সালের মিশনারী রেজিষ্টারে লিখিত হইয়াছে, “The Brahmins had twice attempted his life but he was fully on his guard” “stood of: তাহাকে হত্যা করিতে চেষ্টা করিয়াছিলেন। কিন্তু তিনি সতর্ক ছিলেন "+ মৌখিক নিন্দাবাদের এবং হাতে মারার বৃথা চেষ্টার পর লিখিত প্রতিবাদের প্রকাশ আরম্ভ হইয়াছিল। তন্মধ্যে প্রথম পুস্তক মৃত্যুঞ্জয় বিদ্যালঙ্কার প্রণীত “বেদান্তচন্দ্রিক।” ( ১৮১৭ )। "বেদান্ত চন্দ্রিকা”য় বিদ্যালঙ্কার রামমোহন রায়কে “খকৰ্ধ” বলিয়াছিলেন। “ভট্টাচার্ঘ্যের সহিত বিচার” প্রবাসী raجيب.-.-.. 急N?8Nご নামক উত্তরে রামমোহন রায়ও বিদ্যালঙ্কারকে আক্রম করিয়াছেন এবং বলিয়াছেন, “তিনি গোপনে নানাবিধ আচরণ করেন" অর্থাৎ তিনিও “বকধুৰ্ত্ত” বা ভণ্ড। এই রূপ বাদ প্রতিবাদ যেমন চলিতে লাগিল, তেমন ব্যক্তিগত চরিত্রে দোষারোপের মাত্রা বাড়িতে লাগিল। এই মাত্রা খুব চড়িয়াছে “পাষণ্ড পীড়নে”। এই পুস্তকে রামমোহন রায়কে “নগরান্ত বাসী" বা অস্ত্যজ চণ্ডাল বলা হইয়াছে এবং লিখিত হইয়াছে ( ১৬৩ পৃ: )— “কিন্তু নগরাস্তবাসীর অস্থাপি জবনী গমনের tিহ, প্রকাশ হইতেছে যেহেত, নিজবাস স্থানের প্রাস্তেই জবনী গমনের ধ্বজপতাকা রোপণ করিয়াছেন ।*+ এই ধ্বজপতাকা আর কেহ কথন দেখেন নাই । সুতরাং অন্তের ইহার অস্তিত্ব স্বীকার করিবার কোন প্রয়োজন নাই ? আমাদের দেশে কথা আছে, “জরের মাথা ব্যথা, বিবাদের তেড়া কথা।” “বেদস্ত চন্দ্রিকা”, “পথ্য প্রদান” শ্রেণীর পুস্তকে প্রতিবাদ এবং বিবাদ ( গালাগালি ) দুই আছে । বিবাদের তেড়া কথা প্রকৃত ঘটনার বিবরণ সম্বলিত জীবনচরিতের উপাদান রূপে গৃহীত হইতে পারে না, সেকালের রুচির পরিচায়ক বিবাদের ইতিহাসে উল্লিগিত হইতে পারে । ১৮২৯ সালের ২৯শে ডিসেম্বর সহমরণ রহিত বিষয়ক সরকারী আদেশ প্রচারিত হইলে রামমোহন রায়ের প্রতি গোড় হিন্দুগণের আক্রোশ চরম সীমায় পৌছিয়াছিল। সহমরণ প্রথা পুনঃপ্রবর্তনের আন্দোলনের জন্য তাহারা ধৰ্ম্ম সভা স্থাপন করিয়াছিলেন । এই সভা সিদ্ধাস্ত করিয়াছিলেন, যে হিন্দু সহমরণ-প্রথার বিরোধী পক্ষ সমর্থন করিবেন তাহাকে জাতিচু্যত করা হইবে। “সমাচার চন্দ্রিকার” সম্পাদক ভবানীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় “ধৰ্ম্ম সভার” সম্পাদক হক্টয়াছিলেন, এবং তাহার পত্রিক সভার মুখপত্র হইয়াছিল। ইহার পর “সমাচার চন্দ্রিকা"য় রামমোহন রায়ের যে সকল অপবাদ প্রচারিত হইয়াছে তাহা জীবনচরিতের উপাদান রূপে বিচারযোগ্য বিবেচনা করিলে তাহার স্মৃতির প্রতি আবিচার করা হয়। রামমোহন রায় শৈবমতে ভিন্নজাতীয় স্ত্রীর বিবাহ সমর্থন করিয়া গিয়াছেন বলিয়া অনেকে মনে করেন “পাষণ্ড পীড়ন”-কারের প্রচারিত অপবাদ একেবারে অমূলক নহে। কিন্তু রামমোহন রায়ের মত নিৰ্ভীক পুরুষ যদি কোন অহিন্দু স্ত্রীলোককে শৈবমতে বিবাহ করিয়া থাকিতেন, তবে তিনি যে এইরূপ স্ত্রীকে “পাষণ্ড পীড়ন”কার এবং ভবানীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় ভিন্ন আর সকলের চক্ষুর অন্তরালে রাখিবেন, ইহা বিশ্বাস করা যায় না। a ×athwotrofit swig Last Days of Rajah Rammohun Roy, Calcutta 1915 pp. 29 and #2. f Mary Carpenter, op. cit, pp. 29 and 32. + স্ত্রীব্রজেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় উদ্ধত । “প্রবাসী চৈত্র, ১৩৩৭, b88 尔 | ? সমসাময়িক ও নিরপেক্ষ “সমাচার দর্পণ" যে এই সব কুৎসা বিশ্বাসের অযোগ্য ও মিথ্যা মনে করিতেন, তাহ আমি গত বৎসর কাঞ্চন সংখ্যার ৭•৪ পৃষ্ঠায় দেখাইয়াছি ।--প্রবাসীর সম্পাদক ।