পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

سواه) بسيb প্রবাসী SNみ8N○ ওতপ্রোত হয়ে থাকে অথচ সমস্ত বিদীর্ণবদের আকুল আহবান যার কানে পৌছায় না। এমনি করে তার কত রাত্রির অবসান হয়ে গেছে শয্যাহীন ডেকৃ-চেয়ারের কোলে তা কেউ জানে না শচীন্দ্রনাথ এই প্রতিষ্ঠানের পরিদর্শক হিসাবে পরিচিত। মাসে একদিন আশ্রমের কাজকৰ্ম্ম পরিদর্শন এবং আশ্রমের সংবাদ নেবার জন্য শচীন্দ্রকে কমলপুরীতে আসতে হয়। এই দিনটির অপেক্ষায় পাৰ্ব্বতীর মাসের বাকী উনত্রিশদিন কৰ্ম্মশৃঙ্খলার আয়োজনে কেটে যায়। বিশেষ উৎসাহে এই দিনটিকে সে এক প্রকার উৎসবের দিনে পরিণত করবার চেষ্টা করে । সমস্ত গ্রাম সেদিন বিশেষভাবে মার্জিত হয়, ছাত্রীরা বিশেষ ভাবে শুভ্র বসনে নিজ নিজ নির্দিষ্ট কৰ্ম্মে নিযুক্ত থাকে, ব্যায়াম-ক্রীড়ার বিশেষ বন্দোবস্ত করা হয় এবং আশ্রমের আহারে বিশেষ রসনাপরিতৃপ্তিকর আয়োজনের প্রাচুর্য্য থাকে। আহারের স্থানে কোন পুরুষের আহার নিষিদ্ধ থাকায় পাৰ্ব্বতীর গৃহেই শচীন্দ্রের আহারের ব্যবস্থার নিয়ম আছে ; এবং এই একদিন পরম যত্নে স্বহস্তে শচীন্দ্রের জন্যে রান্না করে তাকে খাইয়ে তার সামান্য সেবাযত্ন করে যে তৃপ্তিটুকু সে লাভ করে, শচীন্দ্রের অনুপস্থিতিতে মাসের অন্য দিনগুলিতে সেইটুকুই তাঁর সম্বল । সমস্ত মাসের অস্তে আজকাল শচীন্দ্রও এই দিনটির জন্ত যেন অপেক্ষা করে থাকে। কমলের প্রতীক্ষায়, কমলের অনুসন্ধানের নিরস্তর ব্যর্থতায় তার স্নেহাতুর চিত্ত ক্রমে যেন নিরাশ্রয় হয়ে পড়ছিল। তার সেই ভাগ্যবিড়ম্বিত পত্নীর ঐকান্তিক প্রেমের পরমনির্ভরশীলতা যে নিবিড় বেদনায় তার বিরহাতুর চিত্তকে উদভ্ৰান্ত করে রেখেচিল তার কোন বৃহৎ মূল্যদান না করে সে শাস্ত হতে পারছিল না। তাই তার বিপুল অর্থ এবং প্রেমের রচনা এই কমলাপুরী বাংলার অসহায় নারীদের সেবার স্থত্রে তার চিত্তকে একটি পরম সাম্ভুনার আশ্রয় দান করেছিল। নারী-প্রতিষ্ঠানের কর্শ্বের জনতায় এবং নব নব কল্পনার আবেশে তার চিত্ত যখন বিভোর তখন ধীরে ধীরে বৎসরে বৎসরে কখন তার নিজেরই অজ্ঞাতে কমলের বিরহবেদনার তীব্রতা যে মান হয়ে এল তা সে লক্ষ্যও করে নি। কমলের স্বতি তার কাছে ক্রমে একটি স্নেহপূর্ণ করুণ ইতিহাসের সামগ্রী হয়ে উঠল ; এবং এই পরিপূর্ণ পরিব্যাপ্ত স্থতির প্রদোষান্ধকারে পাৰ্ব্বতীর কৰ্ম্মনিরত স্নেহপ্রভাব তার তমসাচ্ছন্ন চিত্তাকাশে শুভ্র ছায়াপথের স্নিগ্ধতা বিকীর্ণ করে বিরাজ করতে লাগল। we সেদিন সমস্ত কাজকর্শ্বের অবসানে সন্ধ্যাবেলা শচীন্দ্র পাৰ্ব্বতীর বাসগৃহের বারান্দায় অৰ্দ্ধমুদিত নেত্রে আরামকেদারায় গুয়ে আছে নদীর বাতাসে তার ক্লাস্ত দেহ মেলে দিয়ে। সন্ধ্যার গাঢ় ছায়াপাতে জলস্থল যেন দিনের মুখরতার উপর নৈঃশব্দোর যবনিকা টেনে দিয়েছে। তারার আলোকে আকাশের অন্ধকার তখনও স্বচ্ছ হ’য়ে ওঠে নি। অনতিদূরে নদীর পরপারে, চষা-ক্ষেতের মাঝখানে চাষীর কুটির থেকে একটি ক্ষীণ প্রদীপের আলোকরেখা সেই অন্ধকার যবনিক ভেদ ক’রে শচীন্দ্রের মনের উপর একটি অপরূপ মোহ বিস্তার করছে। তার মনে হচ্ছে ঐ কালে পর্দাটার অন্তরালে মানবজীবনের সব সুখশাস্তি আনন্দ আরামের নিরবচ্ছিন্ন প্রাণধার বয়ে চলেছে। সেখানে কৃষক-বধূ তার নিপুণহাতে পরিষ্কার করে উঠানটি নিকিয়ে রেখেছে, পিতলের বাসনগুলি পরম যত্বে মেজেঘসে উজ্জল ক’রে রেখেছে, সন্ধ্যাবেলায় নদীর ঘাট থেকে গাটি ধুয়ে তা’র মাটির ঘটট পূর্ণ ক’রে নিয়ে গেছে। সেখানে নিজের মধ্যে সমস্ত সম্পূর্ণ, সমস্ত পরিতৃপ্ত, সমস্তই পৰ্য্যাপ্ত। ঐ সূক্ষ্ম ক্ষীণ আলোকধারাস্বত্র যেন তারই নিশ্চিন্ত শান্তিপূর্ণ সহজ স্বন্দর স্বৰ্গচু্যত অনাবিষ্কৃত জীবনধারার শান্ত মধুর ইতিহাস বহন করে আনছে । গৃহাভ্যস্তরে পাৰ্ব্বতী গৃহকৰ্ম্মে ব্যস্ত । ক্ষণে ক্ষণে তার মৃদুপদধ্বনি, তার কাজের ছোটখাট শব্দের পরিচয় শচীন্দ্রের অবচ্ছন্ন চেতনার উপর, পরপারের চাষীর কুটীর থেকে প্রক্ষিপ্ত আলোকপাতে, তার অস্তরের প্রেক্ষাগৃহে এক অনিৰ্ব্বচনীয় রূপকথাকে চলচ্চিত্রে প্রভাসিত করে তুলেছে। নিজের অজ্ঞাতেই গৃহকৰ্ম্মনিরত পাৰ্ব্বতীর এক অপরূপ কল্যাণী মূৰ্ত্তি কখন এক সময় সেই প্রচ্ছদপটের উপর প্রতিফলিত হয়ে তার বহুদিনবিশ্বত শাস্তিময় গৃহ-নীড়ের একটি মনোরম প্রতিচ্ছবি তার বুভূক্ষু অন্তরাত্মাকে অমৃতের