পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আশ্বিন মানুষের মন ty*(ఫె

  • *** পল। এই স্বপ্নালোকের মধ্যে শচীন্দ্রের কাছে অস্পষ্ট রইল না যে, যে-কথা প্রকাশের 传 হয়ে কতক্ষণ কেটেছে সে জানতেও ব্যাকুলতায় আজ এই মোহময় রহস্যময় নিবিড় নিন্তন্ধ সন্ধ্যায় রে নি ।

হঠাৎ সে চমকে উঠল পাৰ্ব্বতীর কণ্ঠস্বরে । “এবারকার স্কর হিসাবটা আপনাকে নিতান্তই ভাবিয়ে তুললে দেখছি। | কার হাংড়ে তার বিশেষ কিছু সুরাহা হবে বলে ত বোধ হয় না। তার চেয়ে বরঞ্চ বিলেতী হাতের দেশী রান্না খাবার সাহস থাকে ত আমার সঙ্গে উঠে 'আসুন ।” এই কৌতুকের সমস্তটা তার মস্তিষ্কে প্রবেশ করে নি, এমনি ক’রে শচীন্দ্র পাৰ্ব্বতীর দিকে চেয়ে রইল। পাৰ্ব্বতী আবার বললে, “থিদেতেষ্টা কি ভুলে গেছেন ন। কি ? রাতদিন ভাবলে যেটুকু বুদ্ধি বাকী আছে তাও ক্ষয়ে ফুরিয়ে যাবে।” এতক্ষণে শচীন্দ্র প্রকৃতিস্থ হয়ে সময়োচিত কৌতুকের হাসি মুণে টেনে এনে বললে, “আমাকে আধমুনে কৈলেস ঠাউরেছ না ! নইলে বিকেলে তোমার ছাত্রীদের রসরচনা যে পরিমাণু .. ” “তা লোভে পড়ে অত না খেলেই হ’ত। মেয়েদের খুশী করবার জন্যে ? ও হবে না ; কিছু না খেলে ভাল হবে না বলে দিচ্ছি।" ‘বেশ ত! আমি কি বলেছি খাব না ? তবে ভুক্তদ্রব্য পরিপাক করতে একটা যে সময়ের আবশ্বক তাকে অযথা সংক্ষেপ করতে গেলে—” “কে বলছে সংক্ষেপ করতে ? এই আমি বসলাম— দেখি কতক্ষণে আপনার সময় হয়।” বলে পাৰ্ব্বতী একটা চেয়ার টেনে এমে তার পাশে বসূল । অন্ধকার ঘনতর হয়ে সমস্ত আকাশ এবং পৃথিবীর সম্পর্ক নিবিড়তর করে তুলেছে। অনেকক্ষণ নি:শব্দে বসে এই পরম নিবিড়তার মোহময় অনুভূতি দুজনে ভোগ করছিল। শচীন্দ্রের মনের মধ্যে যে চিন্তাগুলি তার চিত্তকোষের চতুর্দিকে অন্ধ মৌমাছির মত গুঞ্জন করে ফিরছিল তার এক সময় সহসা যেন চঞ্চল হয়ে উঠল। শচীন্দ্র আরামকেদারার উপর সোজা হয়ে উঠে বসতেই পাৰ্ব্বতী একটু অবাক হয়ে জিজ্ঞাম চোখ তুলে চাইল ; এবং সেই মুহূর্তেই তার চিত্ত চঞ্চল হয়ে উঠেছিল, সে-কথা তার কাছে কিছুমাত্র সত্য নয়। সে যেন স্পষ্ট ক’রে তীব্ৰ ক’রে অনুভব করলে যে কমলের বিলীয়মান স্মৃতি কালের প্রভাবে তার প্রত্যক্ষগোচর নয় এইমাত্র। তাই যখনই সে নিজের বিরহবিধুরচিত্তকে পাৰ্ব্বতীর আচঞ্চল প্রত্যক্ষপ্রেমের অভিমুখে অগ্রসর করে দেবার চেষ্টা করেছে—শুকতারার পানে নিশীথরাত্রির অভিসারের মত—তখনই তার মানসসরোবরের গভীর অদৃশু গোপনতল ভেদ ক’রে কমলের স্মৃতি কখন উষার আলোকে তার সহস্র দল মেলে ফুটে উঠেছে । তবে এ কি ! বারংবার কেন তার এই মোহ ! যে-নারী তারই প্রতি একনিষ্ঠ প্রেমে তার প্রেয়সীর স্মৃতিসমাধির পরিচর্য্যায় নিজেকে একান্তভাবে উৎসর্গ করেছে, যার নিবেদিত প্রেমের অর্ঘ্যকে সে বারম্বার প্রত্যাখ্যান করতে কুষ্ঠিত হয় নি—এ কি তার প্রতি করুণায় । এর মধ্যে কি শুধু তার জীবনদায়িনীর প্রতি, তার অনন্যতার প্রতি কৃতজ্ঞতা ছাড়া আর কোন বস্তু নেই? এ কি সহজলভোর প্রতি তার বাসনার বিলাস ? তা হ’লে তার চেয়ে অবমানকর পাৰ্ব্বতীর সম্বন্ধে আর কি হতে পারে ! সে কি জেনেশুনে পাৰ্ব্বতীকে এই অবমাননার মধ্যে আহবান করতে অগ্রসর হয়েছে ? নিজের মনে মনে নিজেকে সে ধিক্কার দিলে । সে প্রতিজ্ঞা করলে যে পাৰ্ব্বতীকে সে তার নিজের স্বার্থপূর্ণ কৰ্ম্মবন্ধন থেকে সম্পূর্ণ মুক্তি দেবে। পাৰ্ব্বতীর অভিভূত চিত্তকে কোনমতেই আর এই তার আত্মবিলোপের অন্ধকূপে পড়ে থাকতে দেবে না। এতে তার নারী-প্রতিষ্ঠান যদি লোপ পায় তাতেও তার দুঃখ নেই। পত্নীর যে-স্থতিকে সে বাইরে রূপ দিতে চেয়েছে চিরদিন অপরূপ হয়ে সে তার অস্তরে প্রতিষ্ঠিত রইল। এই বলে মনের মধ্যে কমলার স্মৃতিকে জাগিয়ে তোলবার চেষ্টায় নিজের অনন্য প্রেমের আত্মপ্রসাদ মনে মনে সে অনুভব করতে লাগল । צס\ সীমা এসেই চলে গিয়েছিল রোগীর পথ্যের ব্যবস্থা এবং অতিথি-সংকারের অবস্থানুকূল আয়োজন করতে। ঘন্টাখানেক