পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮৬৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

سebبومt প্রবাসী $Nరిgరి ভিক্ষুকে জিজ্ঞাসা করিলাম, উত্তরাষাঢ়া লক্ষত্রের দ্বিতীয় পাদে স্বৰ্ষা কবে পদাপর্ণ করবেন ? ভিক্ষু বোলা হইতে পাজি বাহির করিলেন। প্রায় পনর মিনিট গভীর তন্ময়তার সহিত পাজি দেখিয়া মুখ তুলিলেন। দেখিলাম, তাহার অধরোষ্ট কঁাপিতেছে, চক্ষু অশ্রুপূর্ণ। তিনি বলিলেন, ‘কাল পয়লা মাঘ ; স্বৰ্য উত্তরষাঢ়া নক্ষত্রের দ্বিতীয় পাদে পদার্পণ করিবেন –কি অলৌকিক সংঘটন! যদি তিন দিন পরে এসে পৌছতুম— তাহার কণ্ঠস্বর থরথর করিয়া কাপিয়া গেল, অফুট বাষ্পরুদ্ধ কণ্ঠে বলিলেন, ‘তথাগত ! কি সৰ্ব্বগ্রাসী আকাঙ্ক্ষা পরিপূর্ণতার উপাস্তে আসিয়া প্রতীক্ষা করিতেছে, ভাবিয়া আমার দেহও কাটা দিয়া উঠিল। মনে মনে বলিলাম, তথাগত, তোমার ভিক্ষুর মনস্কাম যেন ব্যর্থ না হয়।’ 8 পরদিন প্রাতঃকালে আমরা স্তম্ভ-অভিমুখে যাত্রা করিলাম, মোড়ল স্বতঃপ্রবৃত্ত হইয়া আমাদের সঙ্গে চলিল । গ্রামের সীমানা পার হইয়াই পাহাড় ধাপে ধাপে উঠতে আরম্ভ করিয়াছে। স্থানে স্থানে চড়াই এত দুরূহ যে হস্তপদের সাহায্যে অতি কষ্টে আরোহণ করিতে হয়। পদে পদে পী ফস্কাইয়া নিম্নে গড়াইয়া পড়িবার ভয় । ভিক্ষুর মুখে কথা নাই ; তাহার ক্ষীণ শরীরে শক্তিরও যেন সীমা নাই। সৰ্ব্বাগ্রে তিনি চলিয়াছেন, আমরা তাহার পশ্চাতে কোনক্রমে উঠিতেছি। তিনি যেন তাহার অদম্য উৎসাহের রজ্জ্ব দিয়া আমাদের টানিয়া লইয়া চলিয়াছেন। তযু পথে দু-বার বিশ্রাম করিতে হইল। আমার সঙ্গে একটা বাইনকুলার ছিল, তাহারই সাহায্যে চারি দিক পর্যবেক্ষণ করিতে লাগিলাম। বহু নিয়ে ক্ষুদ্র গ্রামটি খেলঘরের মত দেখা যাইতেছে, আর চারি দিকে প্রাণহীন নিঃসঙ্গ পাহাড় । অবশেষে পাচ ঘন্টারও অধিক কাল হাড়ভাঙা চড়াই উত্তীর্ণ হইয়া আমাদের গন্তব্য স্থানে পৌছিলাম। কিছু পূৰ্ব্ব হইতেই একটা চাপা গম্‌ গম্‌ শৰ কানে আসিতে ছিল—যেন বহুদূরে দুদুভি বাজিতেছে। “উহাই উপলা নদীর প্রপাতের শব্দ ' প্রপাতের কিনারায় গিয়া যখন দাড়াইলাম তখন সম্মুখের অপরূপ দৃপ্ত যেন ক্ষণকালের জন্য আমাদের নিম্পন করিয়া দিল । আমরা যেখানে আসিয়া দাড়াইয়াছিলাম তাহার প্রায় পঞ্চাশ হাত উৰ্দ্ধে সংকীর্ণ প্রণালীপথে উপলার ফেনকেশর জলরাশি উগ্র আবেগভরে শূন্তে লাফাইয়৷ পড়িয়াছে ; তার পর রামধন্থর মত বঙ্কিম রেখায় দুই শত হাত নীচে পতিত হইয়া উচ্ছ,স্থল উন্মাদনায় তীব্র একটা আবৰ্ত্ত সৃষ্টি করিয়া বহিয়া গিয়াছে। ফুটন্ত কটাহ হইতে যেমন বাষ্প উত্থিত হয়, তেমনই তাহার শিলাহত চুর্ণ শীকরকণা উঠিয়া আসিয়া আমাদের মুখে লাগিতেছে। এখানে দুই তীরের মধ্যস্থিত খাদ প্রায় পঞ্চাশ গজ চওড— মনে হয় যেন পাহাড় এই স্থানে বিদীর্ণ হইয়া অবরুদ্ধা উপলার বহির্গমনের পথ মুক্ত করিয়া দিয়াছে। এই ভুলভ্য খাদ পার হইবার জন্য বহুযুগ পূৰ্ব্বে দুৰ্ব্বল মানুষ যে ক্ষীণ সেতু নিৰ্ম্মাণ করিয়াছিল তাহ দেখিলে ভয় হয়। দুইটি লোহার শিকল—একটি উপরে, অন্তটি নীচে–সমান্তরাল ভাবে এতীর হইতে ও-তীরে চলিয়া গিয়াছে। ইহাই সেতু। গর্জমানপ্রপাতের পট-ভূমিকার সম্মুখে এই শীর্ণ মরিচ-ধরা শিকল দুটি দেখিয়া মনে হয় যেন মাকড়সার তত্ত্বর চেয়েও ইহারা ভঙ্গুর, একটু জোরে বাতাস লাগিলেই ছিডিয়া দ্বিখণ্ডিত হইয়া যাইবে । কিন্তু ওপারের কথা এখনও বলি নাই। ওপারের দৃশ্বের প্রকৃতি এ-পার হইতে সম্পূর্ণ পৃথক—এবং এই ধাতুগত বিভিন্নতার জন্যই বোধ করি প্রকৃতিদেবী ইহাদের পৃথক করিয়া দিয়াছেন। ওপারে দৃষ্টি পড়িলে সহসা মনে হয় যেন অসংখ্য মর্থরনিৰ্ম্মত গম্বুজে স্থানটা পরিপূর্ণ। ছোটবড় মাঝারি বর্মুলারুতি শ্বেতপাথরের চিবি যত দূর দৃষ্টি যায় ইতস্তত ছড়ানো রহিয়াছে ; যাহারা সারনাথের ধামেক ৰূপ দেখিয়াছেন তাহারা ইহাদের আকৃতি কতকটা অকুমান করিতে পরিবেন। এই প্রকৃতি-নিৰ্ম্মিত ৰূপগুলিকে পশ্চাতে রাখিয়া, গভীর খাদের ঠিক কিনারায় একটি নিটোল স্বন্দর স্তম্ভ মিনারের মত খজুরেখায় উর্ধে উঠিয়া গিয়াছে। দ্বিপ্রহরের সূৰ্য্যকিরণে তাছার পাষাণ গাত্র ঝকমক মোড়ল বলিল,