পাতা:প্রবাসী (ষট্‌ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

b-、R প্রবাসী SNSBNー খাওয়াতে পারি। চিড়ে-মুড়কি কত কি জোগাড় করে এই বন্যায় তার পায়ে আছড়ে পড়লাম মড়ার মত, একটা কুটো যদি দাতে কাটলে। কে আবার সাহায্য করবে বাৰু, যার যার নিজের নিজের ঘর সামলানোরই ধুম। তিল তিল করে মরতে দেখলে মানুষের মাথা কি ঠিক থাকে ? শেষকালে বললাম—‘মরবি যদি মর মর, চোখের ওপর শুকিয়ে না মরে ঐ সোতে ডুবে মর। হেসে—শুকনে মুখের সে কি হাসি! যেন টিটকারি দিতে লাগল। বলে —ছেলেটাকে নিয়ো, বাপ হওয়ার বড় সখ কিনা তোমার, বলতে বলতে ভাঙা ঘরের আড়া থেকে সোতের মুখে ঝাঁপিয়ে পড়ল। --তার পর আর কি ! ওই ঘণ্টা গলায় বেঁধে ফিরছি, মরুক, ওর জন্যে—” আমি হঠাৎ ত্রস্ত স্বরে, গেল গেল, এহ,—ধর, গৰ্ত্তের মধ্যে পড়ে গেল যে, জলের মধ্যে ছেলেটা—বলিয়া চেচাতীয় উঠিয়া পড়িলাম। আমি উঠতে-না-উঠতে লোকটা লাফ দিয়া খাদের মধ্যে নামিয়া পড়িয়া কাদামাখা ছেলেটাকে তুলিয়া আনিয়া বুকের মধ্যে সবলে চাপিয়া ধরিল। —ওরে বাপধন, এই যে আমি, ভয় কি ; ভয় কি মাণিক ! বলিতে বলিতে চুমায় চুমায় রোরুদ্যমান ছেলেটাকে আচ্ছন্ন করিয়া দিল । আমার চোখে কেন জানি না জল আসিয়া পড়িল ৷ পকেট হইতে দুইটি টাকা বাহির করিয়া বলিলাম—এই নাও, এই টাকা দুটো নিয়ে যাও ! ঘাড় ঘুরাইয়া বাবরী দুলাইয়া তাচ্ছিল্যের সহিত সে কহিল—আমন কত টাকা আমার আছে । বলিয়া ছেলেটাকে বুকে চাপিয়া সে নির্নিমেষ শূন্তদৃষ্টিতে সেই ধাবমান মৃত্যুময় খরস্রোতের দিকে চাহিয়া রহিল। স্তব্ধ হইয়া চাহিয়া দেখিলাম—জ্যোৎস্নায় তাহার কোলে ছেলেটিকে দেখাইতেছিল ঠিক কষ্টিপাথরের বাটিতে এক দল! মাখনের মত। যেন তাহার সমস্ত কালিমাপূর্ণ জীবনের গরল মন্থন-করা একবিন্দু অমৃত । প্রত্যাশা শ্ৰীসুধীন্দ্রনারায়ণ নিয়োগী আরেকটি দিন এল, ট্রাথি মেলি প্রভাত আলোকে আশাহত হিয়ামাঝে আজিকার প্রভাতের অালে। মনে মনে ভাবিলাম কতদিন দেখি নাই চোথে জানি না কেমন ক’রে আরবার ভরসা জাগাল । সে আনন্দ-প্রতিমারে। একে একে মরেছে পিপাসা— নয়ন ছাড়ে নি আজো শেষবার দেখিবার আশা। তব আবির্ভাব-বার্তা ঝলকিল অরুণ-আলোকে : স্মৃতির নিকুঞ্জে মোর ছায়া যার ফেরে অহরহ ফুল হেসে কহে তাই, পাখী তাই গাহিছে পুলকে। সে ত কত্ব কায়া ধরি’ আসিল না বিরহ ; too, এল জ্যোতিৰ্ম্মী আশা অন্ধকার-যুবনিক ঠেলি ; এলে না মালিনী মোর-এল খরা ফুল ঝরাবার । আজ রবো পথ চেয়ে অনিমিখ আঁখি দুটি মেলি ।