পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১০২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৯৫৪ প্রবাসী-আশ্বিন, ১৩৩৩ [ ২৬শ ভাগ, ১ম খণ্ড মা দেখেন ছেলের মুখে রক্ত। “করেছিস্ কি ? করেছিস কি ? বোনকে খেয়েছিস্ ?” “নামা, না মা । ইদুর খেয়েছি। বোন আমাকে কত আদর করলে, কত যত্ন করলে।” ল্যাজ-কাটা সব কথা মাকে খুলে বললে । সেই থেকে নাগপঞ্চমী পূজার স্বষ্টি হ’ল । শ্ৰী অরূপকুমার সিদ্ধান্ত জীবজন্তুর সংসার-যাত্র। পৃথিবীতে এত জায়গা থাকিতে এটুলি যেমন গরুর গায়েই বাস করে, উকুন যেমন চুলের মধ্যে থাকিতেই ভালোবাসে, তেমনি অনেক জীব আছে তাহারা নিজেদের জন্য অদ্ভুত বাসস্থান ঠিক করিয়া লয়। আমাদের দেশে শকুনি যেমন, তেমনি আফ্রিকায় একরকম গো-খাদক পাখী আছে, তাহারা জীবস্ত গরু মহিষের উপর বসিয়া তাহাদের চামড়া হইতে ছোট ছোট পোকা তুলিয়া তুলিয়া খায়। ঈজিপ্টে আর একরকম পাখী দেখা যায়, কুমীরের সঙ্গে তাহাদের খুব ভাব। খাওয়া-দাওয়া সারিয়া কুমার মহাশয়রা যখন জল হইতে উঠিয়া নীল নদীর তারে ভূড়ি উলটাইয়া রোদ পোহাইতে থাকেন, তখন এই পাখীরা আস্তে আস্তে তাহাদের কাছে আসে। কুমীরর অমনি ই। করে। তথন এই পাখী, কুমীরের দাতের ফাকে ফাকে, চোয়ালে ও মুখের ভিতর যে-সব মাংসের টুকরা লাগিয়া থাকে তাহা খুটিয়া খুটিয়া খায়। কুমীর কোন বাধা দেয় না, বরং একটু একটু করিয়া সেও ই বাড়াইতে থাকে। পাখী তাহার মুখ পরিষ্কার করিয়া দেয়, আর নিজেরও পেট ভরায় । কুমীর আরামে চোখ বুজিয়া পড়িয়া থাকে,— নাতি-নাত নীরা কাণ খুটিয়া দিলে বুড়া দাদামশাইরা যেমন আরামে পড়িয়া থাকেন। পাখীগুলি একবারে কুমীরের মুখের ভিতর ঢুকিয়া যায় ; কুমীর তাহাদের কোন অনিষ্ট করে না । এই পাখীরা কুমীরের গায়ের জোক বা পোক-মাকড়ও খুটিয়া খাইয়া কুমীরের দেহ পরিষ্কার করিয়া দেয় । & কোন কোন পিপড়ার বাসায় একরকম মাকড় বাস করে, তাহারা যেন পিপড়ার ঘনিষ্ঠ আত্মীয় । ইহারা যে ہممبسی۔بعیہ--س~مہ সব সময় আত্মীয়ের কাজ করে তাহা নয়, শত্রুর কাজও করে । পিপড়ারা যখন একজনের কাছ হইতে আরএকজনের কাছে খাবার চালান করে তখন ঐ আত্মীয় মাকড় সে-খাবার ছে৷ মারিয়া খাইয়া ফেলে । পিপড়ার কিন্তু তবুও এই মাকড়কে তাড়াইয় দেয় না। কেনন, ইহারা পিপড়াদের পরিত্যক্ত খাদ্যকণ বা জঞ্জাল খাইয়। ফেলে, মরা পিপড়াও খাইয়া ফেলে। এই উপকারের জন্য পিপড়ারা আপনাদের খাবার হইতে ইহাদিগকে কিছু কিছু দেয় । পিপড়ার ঘরে ইহাদিগকে ভিখারী বলা চলে। সামুদ্রিক জীবের মধ্যেও এইরূপ বন্ধুত্ব দেখা যায়। অনেক সময় বিটারলিং নামে একপ্রকার সমুদ্রের ছোট মাছের সঙ্গে লাল তন্তু দিয়া বাধা একরকম শুক্তি বা ঝিমুক দেখিতে পাওয়া যায় । এই মাছের যখন ডিম পাড়িবার সময় আসে তখন ইহার ডিম্বনলী ক্রমে ক্রমে বড় হইয়। দেহ হইতে সুন্দর লাল নলের মত বাহির হইয়। আসে ৷ ইহাতেই শুক্তি আকৃষ্ট হয় ও আপনার দেহের আবরণ বাড়াইয়া তাহার দ্বারা ঐ মাছের ডিম্বনালীতে নিজেকে আটুকাইয়া রাখে। এইরূপে ঝিনুক লাগিলেই মাছ তাহ জানিতে পারে এবং ঝিনুকের কানকোতে বা খোলায় ডিম পাড়িতে থাকে। প্রায় একমাস ধরিয়া ঝিনুকেই ঐ ডিম বাড়িতে থাকে। মাছ যখন নিরাপদ জায়গায় ডিম বাড়াইতে থাকে, শুক্তিও তখন ছাড়িয়া কথা কয় না। সেও নিজের ডিম ছাড়িয়া দেয় । ডিমগুলি লাল নল বাহিয়া মাছের দেহে আশ্রয় লয় ও সেখানে বাড়িতে থাকে । ফিসালিয়া নামে একরকম সামুদ্রিক জীব জলের উপর ভাসিয়া বেড়ায় । একরকম ছোট মাছের সঙ্গে ইহাদের খুব বন্ধুত্ব । কোন শত্রু তাড়া করিলেই এই মাছ আসিয়া ফিসালিয়ার আশ্রয় লয় । পুকুরের পানার যেমন শিকড় ঝুলিতে থাকে ফিসালিয়ার সেইরূপ শিকড়ে ঐ মাছ লুকাইয়া বেশ আত্মরক্ষা করে । মোট কলাগাছকে ছোট ছোট করিয়া কাটিলে তাহার একটা খাদি যেমন দেখায় সমুদ্রে প্রায় সেইরকম এক জীব জন্মে। অনেক সময় বড় শামুকের বা শাকের খোলার উপর এই জীব থাকে। এই জীবের ভিতর এক