পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১০৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১ম সংখ্যা ] আত্মদশন _ ہی سوا কেমন করিয়। বাচিতে হয় । হাস্য-পন্থী এখন সবচেয়ে বড় ও কাজের প্রশ্নটার মীমাংসা করিবার চেষ্টা করা যাক ; কেমন করিয়া বাচিতে হয় । মানুষ ত ভূমার ক্ষণিক অবতার ; সেই ক্ষণিক আবির্ভাবের স্থায়িত্বটুকু লইয়া সে কত মায়াজাল রচনা করে। সে অপূর্ণ হইলেও নিজের সঙ্গে নিজে খেলা করে, অথচ কেমন যেন একট। সঙ্কীর্ণতার চাপে কষ্টও পায়. বন্ধু আমার! মস্ত একজন নট তুমি ; নিজের স্বষ্টিতে নিজে এমন মজিয়াছ যে রঙ্গমঞ্চে কোন একজন মানুষের জীবন বলি দিলে তুমি শোকে মুহমান হও ! তোমার ব্যক্তিত্ব তোমার মহান স্বষ্টি-প্রেরণারই খেলনা, তাই ত তোমার বিকাশের অন্ত নাই। তোমার নিজের তৈরি খেলায় নিজেকে ধরা দিয়াছ ; তোমার নিজের স্বষ্টির কাছেই নিজে ঠকিতেছ! তুমি যেন মুনে স্থলী ( Mounct Sully ) হাম্লেটের ভূমিকায় নামিয়াছ । বেচারা ভাবিতেছে সে যেন সত্যই হ্যামলেট ! বুঝিতেই পারিতেছে না যে যত বড়ই হোক তা’র বীরত্ব, সেই একটা চরিত্রের মধ্যে নিজেকে বন্দী করিলে নিজেকে ছোট করা হয় ; তবু অতখানি সহানুভূতি ও পরের প্রাণে অনুপ্রবেশও ওরই মধ্যে বড় জিনিষ ; এক জন নট দুই তিন কত চরিত্রের জীবনে নূতন করিয়া জীরন্ত হইতেছে। কিন্তু অসংখ্য জীবন-বৈচিত্র্যের কাছে "দুই তিনটা জীবনের ছবি আর কি ? তাহা হইলে কি উন্ট ঝোকে পড়িয়া Spinozaর মত বলিতে হইবে—শুধু জ্ঞানের সাহায্যে, জ্ঞানের মধ্যে বাচিতে হইবে ? তাহাতে কি ঘটিবে ? অহম্কে বলি দিয়া ভূমা হওয়া । কিন্তু এখানে আমার প্রকৃতিও স্বাভাবিক জ্ঞান বিদ্রোহ করিতেছে ; এমন-কি, যদি শুধু জ্ঞানীই হইয়া উঠি তাহা হইলেও ত চিরন্তন জীবনের অস্পষ্ট অসম্পূর্ণ আভাস ছাড়া আর কিছুই পাইব না ; আর সেই অস্পষ্টতার কাছে আমার নিজের জীবনের অপরোক্ষ দৃষ্টি ও অনুভূতিকে বলি দিব ? সেটাও ত এক রকম ক্ষতি ; প্রজ্ঞা বলে যে জ্ঞানের যথার্থ কাজ সর্বদ আমাদের ব্যক্তিগত জীবনের মৰ্ম্মস্থলে ভূমাকে উপলব্ধি করা–তাহাতে জীবনের দুঃখ বেদন ছাকিয় লওয়া— র্তাহাতেই আবার জীবনের যত আনন্দকে ধৌত-বিশুদ্ধ কর । তাহা হইলে আমরা যাহ-তাহ বুঝিয়া বাচিতে শিখিতে হইবে । এই ক্ষণিকের নটভূমিকায় সমস্ত মন দিয়া নামিতে হইবে। কখন ইহার স্বাক্ষাতিসূক্ষ্ম ভাবব্যঞ্জনা, আবার কখন প্রলয়ের তাণ্ডব দুইটাকেই আয়ত্ত করিতে হইবে । সমস্ত শক্তির সঙ্গে ভাবা, অনুভব করা, কাজ করা—এই ত জীবন ! কিন্তু সৰ্ব্বদা এমনি একটা শান্তিহীন উদাম জীবন যাপন করিতে হইবে না, স্বভাবকে সংযত করিয়া সময় সময় তাহাকে ছাড়াইয়া যাইবার প্রয়োজনও আছে। আমি যাহা তাহাই হইব, কিন্তু আমার পূর্ণ আমি হইতে হইবে এবং (তদপেক্ষা কঠিন সাধন ) আমার কাছে আমি যেন প্রতারিত না হই । এই দুই পরস্পরবিরুদ্ধ শক্তির মাঝখানে টাল সাম্লাইয়া ওজন ঠিক রাখিয়া চল| কি কঠিন ব্যাপার । ইচ্ছ। করিলেই মানুষ পারে না ; কিন্তু তবু চেষ্টা করারও মূল্য আছে । ঐ মধ্যম পন্থা ধরিয়া চলিতে পারিলে সকলই সুন্দর সকলই কল্যাণকর বোধ হইবে ; কারণ সমস্তই যে এক অনুপম শিল্পীর চোখে দেখ রঙ্গনাট্যের মতন । হাস্যরসিকের হাসির স্পর্শমণি যেন সমস্ত স্থখকে অনুপম ও সমস্ত দুঃখকে জ্যোতিৰ্ম্ময় করিতেছে! হাসি যাদুমন্ত্রের আংটিটা পৃথিবীর কপালে ছোয়াইল আর মাটি যেন সোনা হইয়া গেল ! স্বৰ্য্যের আলো যেমন চাষার " কুঁড়ে ঘর ও তা’র তুচ্ছ পোষাক স্বন্দর করিয়াতোলে,তেমনি যা কিছু নীচ, যা কিছু আমাদের বিতৃষ্ণা জন্মায়, সব যেন আলোর অভিষেকে জ্যোতিৰ্ম্ময় ! নিখিল বিশ্বের মৰ্ম্মগত প্রশান্তি যেন তাহাদিগকে এক অপূৰ্ব্ব মুরলালিত্যে । ডুবাইয়া দেয়। হাসি! এই ত বিশ্রামের অমৃতরস, এই ত নিজেকে দেবতার মত মুক্ত সৰ্ব্বশক্তিশালী মনে করা । নিষ্ঠুরতম জীবনের লৌহখৃস্থলকে উপেক্ষা করিম 'যন্ত্রণার মধ্যেই অনুপম আনন—মৃত্যুর মধ্যেই অমৃত আস্বাদ করা । এই বিশ্বাস আত্মার মধ্যে য়েন শাস্তির