পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১০৬৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

సెసిe জীবন ও কার্য্যের ছায়া এখন অবধি দেখিয়াছি । ইহাই তাহার বিশ্বভারতীতে আরও গভীররূপে ব্যক্ত হইবে বলিয়াই আমাদিগের আশ । ভগবান কবিকে ও বিশ্বভারতীকে “ফরেন পলিসি”, “ডিপ্লোম্যাসি” ও “হাই ফাইন্যান্সের” কবল হইতে রক্ষা করুন । তাহার অতুsরদিগের মধ্যে এসকল দিকে আকাজক্ষা র্যাহা’দগের আছে, তাহাদিগের স্থান “স্বরাজ-পার্টিতে”, বিশ্বভারতীতে न८६ । আচার্য জগদীশচন্দ্র বস্থ বিদেশীর হাতে পাসমার্ক। না পাইলে আমরা কোনো মনীষীকে সমাদর করি না – এই ধরণের একটা অপবাদ বাঙালীর আছে । আচার্য্য জগদীশচন্দ্র বসু সম্বন্ধে লিখিতে গিয়া এই কথা যথার্থ বলিয়া মনে হয় । তাহার প্রাপ্য সম্মান তিনি এখানে কিছুই পান নাই ; প্রশংসা ত দূরের কথা তাহার গবেষণা দ্বারা বিজ্ঞান-জগতে ঘেআলোড়ন জাগিয়াছে তৎসম্বন্ধে আমাদের দেশের শতকরা ৯৯ জন সম্পূর্ণ অজ্ঞ ; এমন-কি, কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের, কোনো কোনে বিজ্ঞানাধ্যাপককে ও আমরা বলিতে শুনিয়াছি যে, জগদীশচন্দ্র ভূয়ে (Bogus) জিনিষ লইয়া মাথা ধামাইতেছেন ; বিজ্ঞানের বাস্তবতায় কবিতার আকাশ-কুসুম রচনা করিবার প্রয়াস করিতেছেন মাত্র । আইনষ্টাইন-প্রমুখ মনীষীদের নিছক প্রশংসাবাদ অর্জন করিয়া ফিরিবার পর এই সব বিরুদ্ধবাদীরা কি বলবেন জানি না-হয়ত একটু হাসিবেন মাত্র । যে বস্থ-বিজ্ঞানমন্দিরে বসিয়া জগদীশচন্দ্রের অপূৰ্ব্ব প্রতিভার বিকাশ হইয়ছে, গুণীর সমাদর থাকিলে সেটি এতদিন তীর্থক্ষেত্রে পূরিণত হইত। বে-তার টেলিগ্রাফের সম্ভাবনার কথা সৰ্ব্বপ্রথমে তাহারই মনে উদিত হইয়াছিল, অথচ সহায়ভূতি ও অর্থাভাবে যে তাহার সেই গবেষণা পরিণতিপ্রাপ্ত হইল না এই কলঙ্ক চিরদিন বাঙল। দেশকে পীড়া দিবে। অসম্ভব প্রতিকূল ঘটনার সহিত মুদ্ধ করিয়া তিনি যে বিজ্ঞান-জগতে প্রতিষ্ঠালাভ করিতে পারিয়াছেন ইহা তাহারই অদম্য উৎসাহ ও প্রতিভা জ্ঞাপন করিতেছে ; দেশ তাহাকে এত কাল প্রত্যাখ্যানই করিয়া আসিয়াছে । সম্প্রতি ইউরোপের বিজ্ঞান-জগং এই বাঙালী বৈজ্ঞানিকের অপূৰ্ব্ব প্রতিভাকে নমস্কার নিবেদন করিয়াছেন। আশা হয়, ইহাতে র্তাহার স্বদেশবাসীর চক্ষু ফুটিবে । ইউরোপের যে যে প্রদেশে তিনি গমন করিয়ছেন সেই সেই দেশেই তিনি প্রভূত সম্মান অর্জন করিয়াছেন । সেদিন জেনেভা বিশ্ব-বিদ্যালয়েব এক প্রবাসী—আশ্বিন, ১৩৩e * { ২৬শ ভাগ, ১ম খণ্ড বিশেষ সভায় জগদীশচন্দ্র পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মনীষীকুলের নিকট যে-প্রশংসা পাইয়াছেন তাহ পৃথিবীর খুব কম বৈজ্ঞানিকের ভাগোই ঘটিয়াছে, তাহার যুক্তির সারবত্ত৷ ও তাহার আবিষ্কৃত যন্ত্রের অপূৰ্ব্ব সূক্ষ্মতা দেখিয় তাহারা বিস্মিত হইয়াছেন । জগদ্বিখ্যাত অধ্যাপক এলবার্ট আইনষ্টাইন মুগ্ধ হইয়া সমস্ত দেখিয়া শুনিয়া বলিয়াছিলেন — জগদীশচন্দ্র যে সকল অমূল্য তথ্য পৃথিবীকে উপহার দিয়াছেন তাহার যে-কোনটির জন্য বিজয়স্তম্ভ স্থাপন করা উচিত । অক্সফোর্ড, ব্রিটিশ এসোশিয়েশনে ৬ই আগষ্ট তারিখে জগদীশচন্দ্র ইংলণ্ডের খ্যাতনামা শরীরতত্ত্ববিদ ও প্রাণী তত্ত্ববিদ্যুদিগের সম্মুথে তাহার নূতন আবিষ্কারসমূহ যন্ত্রসহযোগে প্রদর্শন করেন । তিনি সেখানে নিঃসন্দেহে প্রমাণ করিয়াছেন যে, উদ্ভিদ ও প্রাণীদের আভ্য স্তরীণ কলকব্জা, নিশ্বাস-প্রশ্বাস, আহার গ্রহণ ও পরি - কি ইত্যাদির প্রণালী সম্পূর্ণ এক প্রকার । বিজ্ঞানের উন্নতিতে ভারতবর্ষের ইহা এক অপূৰ্ব্ব দান । উপস্থিত পণ্ডিতমণ্ডলী আচাৰ্য্য জগদীশের অপূৰ্ব্ব গবেষণা শুনিয়া ও তাগর যন্ত্রের অসাধারণ স্বস্মতা দেথিয় তাহাকে প্রভূত প্রশংসা করেন ও বেতার সহযোগে এই প্রশংসা বাৰ্ত্ত। পৃথিবীর সর্বত্র ছড়াইয়। পড়ে । তাহারা একবাক্যে বলেন যে, জগদীশ চন্দ্র যাহা করিয়াছেন ত জন্য ভারতবর্ষ বিজ্ঞান-জগতে প্রতিষ্ঠা লাভ কবিবে ও কলিকাতার বস্থ-বিজ্ঞান-মানদীর জগতের বৈজ্ঞানিকগণের একটি তীর্থস্থলে পরিণত হইবে । গত কয়েক মাস ধরিয়া আমরা প্রবাসীতে ২৫ বৎসর পূর্বে রবীন্দ্রনাথকে লিখিত জগদীশচন্দ্রের যে পত্রাবলী প্রকাশ করিতেছি, তাছা হইতেই স্পষ্ট বুঝা যায় কি প্ৰতিকূল ঘটনার সহিত র্তাহাকে সংগ্রাম করিতে হইয়াছিল । ২৫ বৎসর ধরিয়া অদম্য উৎসাহে এই বাধাবিপত্তিকে অগ্র হা করিয়া তিনি যে আজ জয়ী হইয়া বিশ্বের কাছে নিজের মনীষ। প্রদর্শন ও ভারতের সম্মান রক্ষা করিলেন, ইহা পরপদানত বাঙালী জাতির একজনের পক্ষে স চ্যই অঘটন সংঘটন । এই চিঠিগুলি হইতে আমরা দেখিতেছি, ভারতের শুভসাধনায় তিনি কি ভাবে জীবন উৎসর্গ করিয়াছেন ; তাহার মনের গোপনকক্ষে পতিত ভারতের উন্নতির জন্য কি বিপুল ব্যগ্রতা ; বৈজ্ঞানিক হইয়াও অস্তরে অস্তরে তিনি কত বড় কবি ! বিজ্ঞানের চর্চায় নিযুক্ত থাকিয়া ও তিনি স্বদেশের দুঃখ-দারিদ্র্য অভাব-অভিযোগের কথা বিস্তুত হইতে পারেন নাই । অতীত ভারতের মহান গৌরবের আদর্শ তিনি নিরস্তর সম্মুখে রাখিয়াছেন—ভারতবর্ষকে জগতের চক্ষে সম্মানাহঁ করিয়া তুলিবার জন্য তিনি অহরহ ব্যস্ত । তাহার মত স্বদেশপ্রীতি আমরা ক্কচিং