পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

“প্রবাসী’র জন্মের সমসাময়িক কথা শ্ৰী জ্ঞানেন্দ্রমোহন দাস প্রবাসীর বয়স ১৫ বৎসর পূর্ণ হইল। আজ ইহার পাঠক, লেখক, সম্পাদক এবং পরিচালকবর্গের আনন্দ-উৎসবের দিন । এপর্য্যক্ষ আমরা কেবল প্রবাসীর অঙ্গসৌষ্ঠবের প্রতি, তাহার অন্তর বাহিরের সমমার প্রতি দৃষ্টি রাখিয়াছি। কবে কোন রত্ন বুকে লইয়া, কোন অলঙ্কার স্বীয় স্বকুমার অঙ্গে ধারণ করিয়া, কোন নুতন বেশে সে বাতির তাহাঙ্গ দেখিয়৷ আসিয়াছি ; তাহার কীৰ্বি, তাতার যশ কোথায় কোথায় ছড়াইল, তাহারই তত্ত্ব লইয়া আসিয়াছি। কিন্তু এই জীবন-স গ্রামের দিনে সংসারের কত কত বাপ বিঘ্ন ঠেলিয়া, কত বিপত্তির হাত এড়াইয়। প্রবাসী এই মধ্যাঙ্গধৌবনে পদার্পণ করিল, তাহার সংবাদ শ্রদ্ধেয় সম্পাদক মহাশয় বলিতে পরিবেন । কিন্তু প্রবাসীর উদ্ভবের সময় যাহার প্রয়াগে ছিলেন, আমি তাহাদের মধ্যে ছিলাম । সুতরাং যৌবনের এই দীপ সৌন্দর্য্যে মণ্ডিত প্রবাসীর জন্মকথা কিছু কিছু আপনাদের শুনাইতে পারিব । সে আজ ৩১ বৎসরের কথা, ১৮৯৫ অব্দের ২১শে কি ২২শে সেপ্টেম্বর প্রবাসীর ভাবী জন্মদাত ১৯ বৎসর বয়সে কলিকাতা সিটি কলেজ ইষ্টতে এলাহাবাদ কায়স্থ কলেজের প্রিন্সিপ্যাল হইয়। এখানে আসিয়াছিলেন । প্রথমে তিনি কাটর-নিবাসী বাৰু কেদারনাথ মণ্ডলের গুঠে আসিয়৷ নামেন ও দিনকয়েক পরে অর্থাং ৬ই অক্টোবর মেও হহ’ল, রোডের দুই নম্বর বাড়ী ভাড়া করিয়া বাস করিতে থাকেন। বাড়ীটি বাব বাকে বিহারী লালের । ঐ বাড়ীতে রামানন্দবাণুর অনেক পরে স্বনামখ্যাত গণিতবিদ ডাঃ গণেশপ্রসাদ বিলাত হইতে ফিরিয়া বাস করিয়াছিলেন । এই বাড়ী ছাড়িয়া রামানন্দবার কর্ণেলগঞ্জের দক্ষিণ মোড়ে পুলিশ ইনস্পেক্টর হিন্দুস্থানী খৃষ্টিয়ান মিষ্টার উইলিয়ম্। জেমসের বাড়ী ভাড়া করেন। পরে কর্ণেলগঞ্জ ও লরেন্সগঞ্জের সন্ধিস্থলে অধুনা রোজ- ভিলা নামক যে বাড়ীতে কায়স্থ কলেজের বর্তমান ভাইস-প্রিন্সিপ্যাল অধ্যাপক স্বরেন্দ্রনাথ দেব মহাশয় বাস করিতেছেন, সেই বাড়ীতে থাকেন । ধে-সময়ের কথা হইতেছে সে সময় এলাহাবাদে বাঙ্গল। ভীম ও সাহিত্য চর্চার দ্বিতীয় যুগ চলিতেছিল। তার্দশতাব্দী পূৰ্ব্বে "প্রয়াগ-দূত” নামক বাঙ্গাল সাপ্তাহিক পত্রের সম্পাদক স্বৰ্গীয় মধুসূদন মৈত্র মহাশয়, প্রয়াগ বঙ্গসাহিত্যোৎসাহিনী সভার প্রবর্তৃক স্বগীয় বাবু অবিনাশচন্দ মজুমদার, এংগ্নে-বেঙ্গলী স্কুলের অন্যতম প্রতিষ্ঠাত স্বগীয় বাৰু শীতলচন্দ্র গুপ্ত, “অপচয় ও উন্নতি” প্রণেতা স্বৰ্গীয় বাবু বিষ্ণুচরণ মৈত্র এবং তাহীদের সমসাময়িক সাহিত্যাহরাগী কয়েকজন প্রবাসী বাঙ্গালী প্রথম যুগের প্রবন্তন করিয়াছিলেন । কিন্তু প্রথম যুগের প্রধান প্রধান কৰ্ম্মীর স্থানান্তর গমনে সাধারণের যে উৎসাহ এবং জাতীয় সাহিত্যের প্রতি একটা অনুরাগ জন্মিয়ছিল, তাহ। ক্রনেট শিথিল হইয় পড়ে এবং তাহার অবশ্যম্ভাবী পরিণামস্বরূপ এই যুগের অবসান হয়, পুস্তকালয় ও সভার কার্য্য বন্ধ ই য়ু, তাহার পূৰ্ব্বেই ‘প্রয়াগ-দূত’ উঠিয়া যায়, এবং সভা সমিতি সাহিত্যচর্চা প্রভৃতি নিবিয়া যায়। এঅবস্থা যে বহু বৎসর স্থায়ী হইতে পায় নাই, তাহার কারণ আমার দুইজন শ্রদ্ধের বন্ধুর বিশেষ চেষ্টা । তাহারা বাৰু অধরচন্দ্র মিত্র, বি-এ, এবং বাবু স্বরেন্দ্রনাথ দেব, এম-এ। অধর-বাৰু এপ্রদেশের নানাস্থানে গবর্ণমেণ্ট, স্কুলের শিক্ষকতা করিতে-করিতে সম্প্রতি পরলোকগত হইয়াছেন, সুরেন্দ্রবাবু কায়স্থ কলেজের উপাধ্যক্ষত। করিতেছেন। ইহার বঙ্গসাহিত্যোৎসাহিনী সভার পুনরুদ্ধার করিয়। এবং তাঙ্গর সহিত বান্ধবসমিত্তি নামক একটি বিতর্ক-সভার সংযোগ স্থাপন করিয়া নুতন উৎসাহে বঙ্গভাষা ও সাহিত্য আলোচনায় প্রবৃত্ত হন। অধরবাবু সভা ও সমিতির প্রথম সম্পাদক হন । বাবু