পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দেশের কৰ্ত্তব্য ও সেবা সম্বন্ধে দু’টো কথা আচাৰ্য্য শ্ৰী প্রফুল্লচন্দ্র রায় আন্দুলে একট। নূতন জিনিষ দেখলাম। প্রায় সব জায়গায় দেখি জমিদারের নিজ নিজ গ্রাম ত্যাগ করে’ সঙ্গরে এসে বাস করেন, নানা-প্রকার বিলাসিতার স্রোতে গা ঢে’লে দিয়ে গাড়ী, ঘোড়া, মোটর প্রভৃতি চড়েন, রসনাতুপিকর চপ কাট্‌লেট্‌ ভক্ষণ ও অপরাপর ধনীদের সহিত বিলাসিতায় প্রতিযোগিতা করতে-কবৃতে জীবনট একপ্রকারে কাটিয়ে দেন । দেশ যে দিনের পর দিন ম্যালেরিয়া ও পানীয় জলাভাবে শ্ৰীহীন হ’তে চলছে সে দিকে ভ্ৰক্ষেপ নেই। প্রজাদের দুঃখকষ্ট, হাজ শুপ। আগহি ক’রে অসময়ে চাষীদের দাদন দেওয়ার পরিবর্তে পাওনা টাকা আদায়ের জন্য উৎপন্ন শস্য সস্ত ধরে বিক্রয় ক’রে কিম্ব ঘরবাড়ী নিলাম ক’রে সহরে চ’লে আসেন বিলাসিতীর খরচ জোগাতে। জমিদার ও প্রজায় সম্বন্ধ কেবল টীকাকড়িতে ; স্নেহের যে একটা বন্ধন আছে, তার সেটা অগ্রাহ করেন। আর এখানে দেখি যে, কুণ্ডু চৌধুরী রাজা প্রভৃতি জমিদারের ইচ্ছা করলেই চৌরঙ্গীতে বড়-বড় বাড়ী ভাড়া ক’রে মোটর চড়ে বেড়াতে পারতেন, তার সে লোভ সংবরণ ক’রে প্রজাদের সহিত গ্রামে বাস করছেন । এইটিই বড় সুখের বিষয় । আমি বলে থাকি যে, যে-সব জমিদারেরা দেশছাড়া তা’র প্রকৃতই লক্ষ্মীছাড়া । যদি একটা দেশকে সম্যক বুঝতে চান, তবে সহরের উচারটা বাড়ী দেখলেই চলবে না। জাতির মেরুদণ্ড, জাতির শক্তি, জাতির প্রাণ, পল্লীর ওই নিরক্ষর চাষীদের দিকে তাকান। উচ্চশ্রেণীর শিক্ষিত লোক কয়টি। বাংলা দেশের লোক সংখ্যা এখন সাড়ে চার কোটির উপর। দেশের শতকরা ৯৫ জন নিরক্ষর। তাদের বাদ দিলে ত কিছুই থাকে না সুতরাং তাদের আগে SIĘ I FATH TH A nation fটর ফেলে গেলে চলবে না। শিক্ষিত আমরা lives in huts, আমাদের উচিত আমাদের অজ্ঞ ভাইদের জন্য হাত বাড়িয়ে দেওয়া । তা’র রোগে শোকে, দুঃপে, দৈন্তে, অনfহারে প্ৰপীড়িত হ’য়ে মৰ্বতে বসেছে, এখন কি আমাদের নিজনিজ সুখভোগে মত্ত হওয়া সাজে ? অামাদের কর্তব্য, যার পশ্চাৎপদ তাদের সকলকে হাত ধ’রে টেনে তোলা— তাদের সকলকে জ্ঞানালোকে উদ্ভাসিত করা। এখনও বাংলাদেশ শিক্ষিত বাবুদের কথা শোনে ; পরে আর শুনবে ব’লে বোধ হয় না। ভাই ব’লে তাদের সঙ্গে মিশতে হবে ; তা’রা যে আমাদের সঙ্গে একসূত্রে গাথা তাদের শিরায় ও ধমনীতে আমাদেরই রক্ত প্রবাহিত । যাক এখন যৌথ-সমবায়ু ভাণ্ডার ( co-operative Stores ) সম্বন্ধে দু-একটি কথা বলি । শেষবারে যখন আমি মঞ্চেস্টারে ছিলাম, তখন তাদের কোঅপারেটিভ ষ্টোরস দেখতে যাই । সে যে কত বড় একট। বৃহৎ . ব্যাপার তা দেপলে আপনারা মূৰ্ছা যাবেন। তার। আমাকে ও আমার বৈজ্ঞানিক বন্ধু-দুটিকে সাদরে মোটর ক’রে নিয়ে গেলেন । বললে আশ্চর্য্য হবেন যে, তাদের ৯৫ কোটি টাকা চা,বিস্কুট জেলি প্রভৃতি ব্যবসায়ে প্রতিবৎসর বিক্রয়ে । সার। ইংলণ্ডব্যাপী তাদের কৰ্ম্মক্ষেত্ৰ । সিংহলে তাদেরই চা-বাগান আছে । এমন প্রকাও ব্যবসায় কেমন সুন্দরভাবে চালাচ্ছেন দেখুন ত। আর আমাদের যুবকদের কাছে ব্যবসার কথা তুললেই ব’লে বসেন, মূলধন পাই কোথা ? ব্যবসাতে মূলধন জোগাড় করবার পূৰ্ব্বে কিছু দিন শিক্ষানবিশী করা বিশেষ দরকার। কোথায় কোন জিনিষটার কি দর, কোথায় কোন জিনিষ প্রচুর-পরিমাণে পাওয়া যায়, কোনখানে কি ব্যবসা করলে বেশ চলবে ইত্যাদি নানা খবরাখবর জানা না থাকলে ব্যবসায়ে উন্নতি করা দূরে থাকুক অবনতির সম্ভাবনাই অধিক । এই যে ব্যবসায় মাড়োয়ারীদের একচেটে, তার কারণ তা’র ছেলে বেলা থেকে ব্যবসা-সম্বন্ধে অনেক কথ