পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১ম সংখ্যা ] হবে, যাতে শরীরের পুষ্টিসাধন হবে তবে ত কাজ করবার শক্তি জন্মাবে। তা’র পর আর-এক কথা এই, যুবকেরা হচ্ছে দেশের ভাবী আশা, তাদের বাদ দিয়ে কোনে কাজই করা চলে ন। প্রবীণ লোকেরা হচ্ছে সমাজের মাথা আর যুবকেরা তা’র অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ-বিশেষ । সুতরাং সকল কাজেই তাদের সহায়ত সৰ্ব্বতোভাবে বাঞ্ছনীয়। এই ছেলেদের ডাক আমার কাছে বড় পবিত্র। লাটসাহেব ডাকূলে ছল ক’রে অনেক সময়ে যাইনে, কিন্তু ছেলেদের ডাক শুনলে আর কিছুতেই স্থির থাকৃতে পারিনে। আমরা আর ক'দিন ! আমাদের ত জীবন-সন্ধ্যা ; যুবকেরাই দেশের সব, তারাই দেশের ভবিষ্যৎ গড়ে তুলবে । আর-একটা কপ হচ্ছে, স্ত্রীশিক্ষার কথা । মা, ভগ্নী সহধৰ্ম্মিণীকে মৃর্থ ক’রে রাপ লে কি লাঞ্ছন ভোগ করতে আমরা পদে-পদে বুঝতে পারছি । কলিকা ঘি নারীশিক্ষাসমিতি আছে, আমি তা’র সঙ্গে কিঞ্চিৎ স"শ্লিষ্ট ; তাদের উদেশ্য হচ্ছে যাতে প্রত্যেক পাড়ায়পাড়ায় মেয়েদের লেখাপড় শেখাবার জন্যে একট| ক’রে বালিক বিদ্যালয় স্থাপন করা হয় তা’র চেষ্ট৷ কর । আর স্ত্রীশিক্ষ-বিস্তারে গভর্ণমেণ্ট ও সাহায্য করে হয়, ত{ গৌড়ের অধঃপতন ১২৯ একটা কথা সকলে নিজে-নিজেই ভেবে দেখতে পারেন। মনে করুন কারুর স্বামী বিদেশ থেকে তা’র নিরক্ষর স্ত্রীকে একখানা পত্র লিখেছে ; এখন সেই চিঠিখানি হয় রাস্তার লোক ডেকে পড়িয়ে নিতে হবে, নয়ত ছোট দেবরকে পড়বার জন্যে খোসামোদ করতে হবে। যদি তাই হয়, তবে কি লজ্জার কথাই হবে বলুন ত। সারাদিনের মধ্যে মেয়েদের এক ঘণ্টা লেখা পড়া করবার সময়ও কি হয় না? একটা সাপ্তাহিক পত্র প’ড়ে জগতের অনেক খরব ত তা’র রাখতে পারে ? সময় ক’রে নিলেই হয় ; আগে ত গৃহস্থালীর কৰ্ম্ম সেরে চরকায় স্থতে কাটা হ’ত। আমার শেষ কথা যে মুরশিদাবাদ কাহিনীর মতন, আন্দুলের ও অন্য-সব প্রাচীন গ্রামের একটা ইতিহাস লেখা খুবই দরকার। কতকগুলি বাড়ীর এক-একটা ‘ফোটো তুলে রাখা শীঘ্রই প্রয়োজন হয়ে পড়েছে, যেগুলি ইতিহাসের সহিত সন্নিবেশিত করা চলে। এই ইতিহাস লেখার ভার, যার-তা’র উপর দিলে হবে না কিম্বা টাকা দিয়ে লিখিয়ে নিলেও ভালো হবে না। এমন লোকের উপর ভার দিতে হবে, যিনি দরদের সহিত কাজ করতে" পারবেন । থাকেন । গৌড়ের অধঃপতন শ্রী রমাপ্রসাদ চন্দ এই প্রস্তাবে জনপদবাচক গড় অর্থে, বিহার হইতে আরম্ভ করিয়া সমস্ত প্রাচ্য ভারত অর্থে ব্যবহৃত হইল। গৌড়ের অধঃপতন অর্থ বিদেশাগত মুসলমান আক্রমণকারিগণ কর্তৃক এই ভূভাগের ধধিকার। এই সুবিস্তীর্ণ ভূভাগের অন্তর্গত দক্ষিণ বিহার মগধ ) এবং বরেন্দ্র দ্বাদশ শতাদের শেষভাগে বিনযুদ্ধে বিজিত হইয়াছিল। বঙ্গ (পূৰ্ব্ববঙ্গ ) আত্ম-সমর্পণ মরিয়াছিল পরবর্তী শতাব্দীর শেষভাগে । মিথিলার У о গৌড় শব্দ কতকটা মন পতন হয় আরও পরে । কামরূপ এবং উড়িষ্যা খৃষ্টীয় ষোড়শ শতবে মুসলমানের পদানত হইয়াছিল। অনেকে মনে করেন তুরুষ্ক এবং পাঠান আক্রমণ-কারিগণের তুলনায় হিন্দুর হীনবল ছিলেন বলিয়া সহজে বিজিত হইয়াছিলেন। একথা সম্পূর্ণ রূপে সত্য বলিয়া মনে হয় না। যদি প্রকৃত প্রস্তাবে হিন্দুরা হীনবল হইত, তবে পুনঃপুনঃ আক্রমণ-সত্ত্বেও সমস্ত গৌড়মণ্ডল জয় করিতে মুসলমানগণের আড়াই শতবৎসর লাগিত না। এই