পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৩২ গৌড়ের অধঃপতন-সম্বন্ধে কি সাক্ষ্য দান করে, অতঃপর তাহা দেখাইতে চেষ্টা করিব । গৌড়মগুলে এবং তৎসমীপবৰ্ত্তী প্রদেশে মৌর্য্য এবং শুঙ্গ-যুগের ভাস্কর্য্যের অনেক নিদর্শন পাওয়া গিয়াছে। কিন্তু এই প্রাচীন যুগে শিল্পের মধ্যে ভাস্কৰ্য্য প্রাধান্ত বা স্থাপত্যের সমকক্ষত লাভ করিতে পারে নাই, স্থাপত্যের ৩নং চিত্র ত্রয়োবিংশ তীর্থঙ্কর পাশ্বনাথ (খৃষ্টীয় ত্রয়োদশ শতাব্দী ) অনুগত আভরণ-স্বরূপ বিকাশপ্রাপ্ত হহতেছিল। প্রাচ্যভারতে ভাস্কৰ্য্য প্রাধান্য লাভ করিয়াছিল গুপ্তযুগে, যখন বৌদ্ধ, জৈন, শৈব, শাক্ত এবং বৈষ্ণবগণ আপন-আপন [ ২৬শ ভাগ, ১ম খণ্ড আরাধ্য দেবতার প্রতিম গড়িয়া মন্দিরে-মন্দিরে প্রতিষ্ঠিত করিতে আরম্ভ করিয়াছিলেন। বেীদ্ধের আরাধ্য গৌতমবুদ্ধ, জৈনের আরাধ্য ২৪ জন তীর্থঙ্কর বা জিন, বৈষ্ণবের আরাধ্য বিষ্ণু, শাক্তের আরাধ্য ভগবতী । এই যুগে এইসকল আরাধা দেবতার নানা আকারের এবং নাম প্রকারের প্রতিমাতে আরাধনার লক্ষ্যরূপে একই ভাব-বস্তু লক্ষিত হয় । এই ভাব-বস্তু একনিষ্ঠ সাধনার ভাব, ধ্যানমগ্ন যোগীর ভাব । সেকালের দ্বিভূজ বুদ্ধ বা জিম, চতুভূজ বিষ্ণু, নানা প্রহরণধারিণী দশ ভূজা ভগবতীসকলের প্রতিমাই যেন সশরীরী ধ্যান-ধারণ সমাধি ; সকল সম্প্রদায়ের প্রতিমাষ্ট সেন সমস্বরে ঘোষণা করিতেছে, “নেতি শদিদমুপাসতে ৷” গুপ্তযুগ বা খৃষ্টীয় চতুর্থ-পঞ্চম যষ্ঠ শতাব্দ হইতে আরম্ভ করিয়| বৰ্ত্তমান কাল পর্যান্ত শিল্পের ইতিহাসের গতিবিধির দুষ্টান্তস্বরূপ কয়েকখানি জিন-মুর্টির পরিচয় দিব । মগধের প্রাচীন রাজধানী গিরিব্রজ ( রাজগৃষ্ঠ ) নগরের চতুর্দিকৃস্থ পাচটি পাহাড় জৈনদিগের মহাৰ্তীর্থ। এই পাচপাহাড়ের উপরে প্রাচীন মন্দিরের ভগ্নাবশেষে ও আধুনিক মন্দির-নিচয়ে এবং বর্তমান রাজগির গ্রামের জৈন মন্দির-নিচয়ে গুপযুগ হইতে আরম্ভ করিয়৷ বৰ্ত্তমান বিংশ শতাব্দ পর্য্যন্ত সকল যুগের নিৰ্ম্মিত অনেক তীর্থঙ্কর প্রতিম! বিদ্যমান আছে । তন্মধ্যে চরিখানি প্রতিমার চিত্র প্রদর্শন করিয়া আমাদের অধঃপতন-সম্বন্ধে শিল্পের সাক্ষ্য বুঝাইতে চেষ্টা করিব। ১নং চিত্র চুপারের বেলে পাথরের নিৰ্ম্মিত কায়োৎসর্গব্ৰতপরায়ণ তীর্থঙ্কর মুর্টি। লাঞ্ছন লুপ্ত হওয়ায় ইনি যে কোন তীর্থঙ্কর, তাহ নির্দেশ করা স্বকঠিন। পৃষ্ঠফলকে অঙ্কিত আভামণ্ডলের আকার দেপিয় এবং অন্যান্য কারণে মনে হয় মূৰ্ত্তিখানি গুপযুগে নিৰ্ম্মিত হইয়াছিল। কায়োৎসর্গ একপ্রকার তপস্যা । দণ্ডায়মান অবস্থায় হস্তপদ একেবারে স্থির রাখিয়া সমস্ত শারীরিক ক্লেশ সম্পূর্ণরূপে উপেক্ষ করিয়া দিবাভাগে কায়োৎসর্গ সাধন করিতে হয়। আমাদের এই প্রতিমায় গড়নের দোষ যাহাঁই থাক, ইহার আপাদমস্তকে সাধনার ভাব, সাধন-কার্য্যে সমস্ত শরীর ঢালিয়া দেওয়ার ভাব, জাজ্জল্যমান রহিয়াছে এবং