পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১ম সংখ্যা ] বাঙ্গাল দেশের সমতল ভাগ পর্য্যন্ত ইহাদের বাসস্থান বিস্তৃত ছিল। আমার অনুমান হয় এইসকল জাতির সংসর্গে, কতক-পরিমাণে ইহাদের শোণিতমিশ্রণে, হিন্দুর অধঃপতন ঘটিয়াছে। সাহার। আমার এই সিদ্ধান্ত যুক্তিযুক্ত বিবেচনা করিবেন তাহার জিজ্ঞাসা করিতে পারেন, যদি অসভ্যতার সংসর্গে আসিয়া হিন্দু সভ্যতার, হিন্দুর চরিত্রের এমন অধঃপতন ঘটিয় থাকে, তবে হিন্দুর পুনরুত্থানের আর আশা কি ? ইউরোপের ইতিহাস এক্ষেত্রে আমাদের পথ পদৰ্শক হইতে পারে । খৃষ্টীয় ত্রয়োদশ শতাব্দে নিক্কলো পিসানে প্রাচীন গ্রীক-শিল্প-নিদর্শন অন্ত করণ করিয়া হাত পাকাইয়ু লইয়। ইউরোপীয় ভাস্কর্ঘ্যে নবজীবন দান করিতে বঙ্গের বাহিরে বাঙ্গালী లి(t সমর্থ হইয়াছিলেন। গ্রীক সাহিত্যের ও শিল্পের অনুশীলন করিয়া ইউরোপ মধ্যযুগের বর্বতার প্লাবন হইতে উদ্ধার লাভ করিয়াছিল। আমাদিগকে যদি পুনরায় উন্নতির পথে অগ্রসর হইতে হয় তবে শুধু ইউরোপীয় বিদ্যার এবং ইউরোপীয় রীতিনীতির অনুশীলন করিলে যথেষ্ট হইবে না, এদেশের প্রাচীন সাহিত্য, প্রাচীন শিল্প, প্রাচীন ইতিহাস যথাবিধি অনুশীলন করিতে হইবে ; এমনভাবে অল্পশীলন করিতে হুইবে যেন তাহার ফলে শিল্পের সাহিত্যের ও দর্শনের ক্ষেত্রে রিনাসেনস্ বা প্রাচীনের যে অংশ উৎকৃষ্ট তাহার দ্বারা অনুপ্রাণিত নুতন স্মৃষ্টির সূচনা হইতে পারে ! বঙ্গের বাহিরে বাঙ্গালী দিল্লীতে ‘ফাস্তৃনী’ (বেঙ্গল ক্লাব দ্বারা অভিনীত) স্বচন –বাঙ্গলার চৌকাট পেরিয়ে এসেই আমরা আমাদের ‘চন্দ্রহাস’ ছাড়া ; তাই পিয়ালবনের সবুজ পাতার কথা আর মনেই পড়ে না, মনে পড়ে কেবল চোখের সাম্নে দাদার তুলট কাগজের চৌপদীগুলো’। প্রবাসে থেকে প্রাণের নবীনতাকে কেবল পাগলামি ব’লেই মনে ঈয়, কারণ আমাদের জীবনের উদেশ্য কেবল উপার্জন করা, তাই উপলব্ধির পথের দিক্ দিয়েও যাইনে। সংসারের কঠোর কৰ্ত্তব্যের ডুব-জলে পড়ে কেবল 'দাদা', ‘কোটাল’ আর মাঝির আশ্রয় ভিক্ষা করি, কারণ আমর। শিখেছি কেবল উপার্জন, আমরা জানি কেবল কৰ্ত্তব্য । তাই সকল বিষয়ে ফলের আশা রাখি এবং বোঝবার ও আশা করি। “কাজটা"ই এখন আমাদের কাছে বড়, থার খেলাটাই চুরি বলে মনে হয়, কারণ আমাদের “সময় পাজেরই বিত্ত", তাই “মান্ধাতার আমলের বুড়োটার” সোয়াচ আমাদের লাগে এবং সেইটেই সত্য ব’লে আমাদের ধারণ হয় । আমরা আমাদের প্রাণের “চন্দ্রহাস”কে শীতবুড়োটার মতন দুঃখের র্কাথ দিয়েই ঢেকে রাখি, তাই বঁাশীর সুরগুলো ও “মেয়েমানুষের কান্না"র স্বর ব’লে মনে হয়, আর জ্যোছনা যে ন দুপুর রাতের চোখের জলের মতে। ঠেকে। কেউ হাস্ছে দেখলে মনে হয় “আপনি এত খুসী হন কেন ?" এই ত প্রবাসী বাঙ্গালীর জীবন ! শীতের ঝর গাছের মতে আমাদের প্রাণের ফুৰ্ত্তি সব ঝ’রে গিয়েছিল। একদিন মাঘ মাসের গোড়ায় দুপুরবেলা দুজনে বসে গল্প করতে-করতে ফাগুন হাওয়ার পাগলামিরমতন হঠাৎ আমাদের প্রাণে এক পাগ লামির উদয় হ’ল এবং সেই ক্ষ্যাপামির তালে নেচে উঠে স্থির করা গেল ফাল্গুনী করা যাক । বাউলের আশ্বাসবাণী পেয়েই দেখলাম, আমাদের হঃখের দ্বারের সম্মপে কাট৷ গাছে বাসন্তীরঙের ফুল ফুটেছে । আনন্দে তখনই দুখানি তাম্রখণ্ডের সাহায্যে বিশ্বভারতী আফিসে খবর দিলাম চারখানি