পাতা:প্রবাসী (ষড়বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ミ>8 ডাকঘর অনেক দিনের জন্য বন্ধ করিয়া দেওয়া উচিত হয় নাই। যখন উন্টাডিঙ্গী ডাকঘর লুট হয়, যখন ওয়েলিংটন স্কোয়্যার ডাকঘরের পোষ্টমাষ্টার হত হন, তাহার পরও ত কোন ডাকঘর বন্ধ করা হয় নাই । উত্তর কলিকাতার ডাকঘর গুলির, অন্ততঃ প্রধান প্রধান ডাকঘরগুলির, সংখ্যা এত বেশী নহে, যে, তাহাতে কিছুদিনের জন্য যথেষ্ট সশস্ত্র পাহারা বসান গবন্মেণ্টের অসাধ্য। উত্তর কলিকাতায় মোট সতের ( ১৭ )টি-ডাকঘর আছে। এইরূপ পাহারা বসাইয়া এই ১৭টি ডাকঘর খোলা রাখিলে লোকদের সাহস বাড়িত, গবৰ্ম্মেন্টের ক্ষমতার ও প্রজাহিতৈষিতার উপর আস্থা অটুট থাকিত ও বাড়িত, এবং দুৰ্ব্বত্তর আস্কারা পাইয়া দুঃসাহসী হইত না। কিন্তু কিছুদিনের জন্য উত্তর কলিকাতার ডাকঘরগুলি বন্ধ করিয়া রাখায় এই ধারণা জন্মান অসম্ভব নহে, যে, কতকগুলি দুৰ্ব্বত্ত লোক ইচ্ছা করিলে গবন্মেণ্টকে, অন্ততঃ কোন কোন বিষয়ে, সহজেই কিছু কালের জন্য পঙ্গু করিয়া দিতে পারে। বিদেশী আমলাতন্ত্র নিজেদের প্রেস্টজ বজায় রাখার জন্য প্রভূত চেষ্টা অবিরত করিয়া থাকেন কিন্তু এক্ষেত্রে তাহাদের প্রেস্টাজ নষ্ট হইয়াছে, উচ্ছ স্থল জনতার বা গুণ্ডারাজের জয় হইয়াছে। সরকার পক্ষের কথাটা আগে বলিলাম। সৰ্ব্বসাধারণের অসুবিধা খুব হইয়াছে। ব্যবসায়ী ও অব্যবসায়ী সকলেরই খুব অস্থবিধা ও ক্ষতি হইয়াছে। সরকারী হুকুম হইয়াছিল, যে টেলিগ্রাম বিলী হইবে না, তাহা প্রধান টেলিগ্রাফ অফিস হইতে আনাইয়। লইতে হইবে। যাহারা কোন টেলিগ্রাম পাঠাইয়া তাহার উত্তরের অপেক্ষায় আছে, তাহার জন্য না হয় তাহারা বা তাহাদের লোকেরা বার বার উক্ত আফিসে যাইতে পারে, কিন্তু অন্য লোকরা কেমন করিয়া জানিবে যে, তাহাদের নামে টেলিগ্রাম আসিয়াছে । বিজ্ঞাপন দেওয়া হইয়াছিল ষে প্রধান ডাকঘর হইতে চিঠিপত্র আনাইয়া লইতে হইবে। আমাদের প্রধান কৰ্ম্মচারী এক দিন স্বয়ং তথায় গিয়া অল্প কয়েক খানা চিঠি ও কিছু খবরের কাগজ পাইয়াছিলেন । তাহা আমাদের ৪৫ দিনের ডাকের সমান হওয়া দূরে থাক, একদিনের ডাকেরও প্রবাসী—বৈশাখ, ১৩৩৩ [ ২৬শ ভাগ, ১ম খণ্ড সমান নহে। রেজিষ্টরী চিঠি ও প্যাকেট মনিঅৰ্ডার প্রভৃতি ত তখন পাওয়াই যায় নাই। সরকারী কর্তৃপক্ষ ইচ্ছাপূর্বক অসুবিধা ঘটাইতেছেন, এরূপ মনে করিবার কোন কারণ নাই ; কিন্তু উত্তর কলিকাতার সর্বসাধারণের সুবিধার জন্য যথাসাধ্য চেষ্ট৷ করিয়াছেন, দুঃখের বিষয়, তাহাও বলিবার উপায় নাই। উত্তর কলিকাতায় দেশী লোকদের বাস বলিয়াই কি এইরূপ ঔদাসীন্য প্রদর্শিত হইয়াছে ? ঘটনাবলীর যোগসাজশ, না মানুষের কারসাজি ? ভারতবর্ষের ইতিহাসে যাহা দেখা যায়, অন্যান্য দেশের ইতিহাসেও তাহা লক্ষিত হয়-ভারতবর্ষ স্বষ্টিছাড়া দেশ নহে । কিন্তু আমরা আপাততঃ ভারতবর্ষেরই আধুনিক ইতিহাসের একটা বিষয়ের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করিতে চাই । কোন ঘটনা হঠাৎ ঘটিলে, তাহার কোন কারণ আমরা না জানিলে বা আবিষ্কার করিতে না পারিলে, তাহাকে বলি আকস্মিক ঘটনা। কিন্তু বাস্তবিক আকস্মিক কিছু নাই। সব ঘটনার মধ্যেই কারণ আছে ও কোন একটা ফলোৎপাদনের দিকে গতি আছে (যাহারা থাটি বৈজ্ঞানিক, এবং জগৎকারণ ও জগতের নিয়মশৃঙ্খলায় ব্যক্তিত্ব বা পুরুষত্ব আরোপ করিতে চান না, তাহাদিগকে সন্তুষ্ট করিবার নিমিত্ত ইহাকে উদ্দেশু বলিলাম না ) । এই কারণ ও ফলোৎপাদন-অভিমুখত মানবীয় হইতে পারে, কিম্বা অজ্ঞাত, অদৃষ্ট কিছু হইতে পারে। আমরা আগে-আগে দেখিয়াছি ও লিখিয়াছি, যে, অনেক সময় ভারতবর্ষের লোকেরা যখন একটা কিছু চায়, সেই সময়ে বা ত হার অব্যবহিত পরে এমন কিছু ঘটে, যাহা হইতে তাহাদেৱ সে ইচ্ছা পূর্ণ না করিবার একটা যুক্তি বিদেশী শাসনকৰ্ত্তার সংগ্ৰহ করিতে সমর্থ হয়। যেমন, ব্যবস্থাপক সভার সভ্যেরা হয়ত প্রস্তাব করিলেন, যে, কোন একটা দমন-আইন উঠাইয় দেওয়া হউক বা